ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের উন্নয়ন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৯ এপ্রিল ২০১৭

 দেশের উন্নয়ন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে

জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে ¯œাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তিকৃত নবাগত শিক্ষার্থীদের প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে চোখ-কান খোলা রেখে দেশের সকল উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতে হবে। দেশের উন্নয়ন যারা বাধাগ্রস্ত বা প্রতিহত করতে চায় তাদের সম্পর্কে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তোমরা সচেতন হলেই কাক্সিক্ষত স্বপ্নের সোনার বাংলা সত্যে পরিণত হবে। বর্তমান শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সব বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নে নানা ধরনের কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। এমন উদ্যোগমুখর পরিবেশে নবীন শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। ছাত্ররাজনীতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে, সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবে, এটা আমি মনে করি না। কিন্তু রাজনীতি সচেতনতা ব্যতীত সচেতন নাগরিক সৃষ্টি সম্ভব নয়। রাজনীতি কেবল রাষ্ট্র পরিচালনায় সীমাবদ্ধ কোন ব্যাপার নয়। জীবনের সকল অনুষঙ্গই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা অর্জন করে নেয়া যেমন রাজনীতি তেমনি অন্যের অধিকার ও অর্জনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনও রাজনীতি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, তোমরা আজ জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত সমাজের নাগরিক। সমগ্র জাতির প্রত্যাশা, যে জ্ঞান আজও রয়েছে মানুষের অধরা, যে জগৎ এখনও অজানা, যে সম্পদ এখনও অর্জন সম্ভব হয়নি তা তোমাদের মাধ্যমে মানব সমাজের হাতে আসবে। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি হিসেবে প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব চিন্তা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, ধর্মবিশ্বাস, নানাবিধ সংস্কার, নিজস্ব আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক অবস্থান। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসা শিক্ষার্থীগণ ন্যায় ও সত্যের সৈনিক হয়ে সম্মিলিতভাবে বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ সংস্কৃতিপুষ্ট এক শ্রেয়তর সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, একটি জাতিকে বিশ্বের বুকে টিকে থাকতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেতৃত্ব তৈরি হতে হবে। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি, ইতিহাস, মূল্যবোধ, রীতিনীতি প্রভৃতির আলোকে বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন বিশ্বনাগরিক গড়ে তুলতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে দুর্নীতি, অনাচার ও ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। এজন্য জাতি চরম হতাশা ও দুর্দশায় নিপতীত হয়। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যাতে মূল্যবোধের এই মারাত্মক বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবুল খায়ের, ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা। অনুষ্ঠানে রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বিভিন্ন অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানের জন্য উপস্থাপন করলে স্ব স্ব অনুষদের ডিন এবং ইনস্টিটিউটের পরিচালকগণ নবাগত শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য বরণ করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
×