ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় পহেলা বৈশাখ রথতলা হাটখোলায় বসবে মেলা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৯ এপ্রিল ২০১৭

বগুড়ায় পহেলা বৈশাখ রথতলা হাটখোলায় বসবে মেলা

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ ঘরে ঘরে পহেলা বৈশাখের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে ঈদের আমেজ। বর্ষবরণের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। ছোটদের বর্ণিল পোশাক, মেয়েদের রঙ্গিন শাড়ি, ছেলেদের পোশাকের মধ্যে পাঞ্জাবির প্রাধান্য বৈশাখী আনন্দের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। কী শহরে কী গ্রামে, প্রতিটি বাড়িতেই নানা আয়োজন। বৈশাখের প্রথম দিনে খাদ্য তালিকায় কী থাকবে তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা হচ্ছে। বৈশাখ কেন্দ্র করে সবচেয়ে বড় আনন্দ মেলা। বগুড়া নগরীর আর্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রাকে বর্ণাঢ্য করতে শিল্পশোভিত লোকজ সামগ্রী তৈরি করছে। কুমার বাড়িগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। তাদের একদ- ফুরসত নেই বসে থাকার। মৃত্তিকা শিল্পকে কতভাবে উপস্থাপন করা যায় তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ছোট্টমণিদের মাটির খেলনাপাতি, ফলফলাদি, বড়-মাঝারি-ছোট ফুলদানি, নক্সা করা কলসি-ঠিলা, গৃহস্থালি হাঁড়ি-পাতিল নানা সামগ্রী বৈশাখী মেলার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। গ্রামের ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছে গাঁয়ের বধূরা। আঙ্গিনা, উঠান (বহিরাঙ্গিনা) মাটি পানিতে গুলিয়ে নেকড়া দিয়ে লেপে ঝকঝকে করা হচ্ছে। এ সময়টায় মাঠে বোরো আবাদের শেষ সময়। কৃষক দ্বিতীয় দফায় টপড্রেসিং (নিবিড় পরিচর্যা) নিয়ে ব্যস্ত। দিনাকয়েক পরে বৈশাখের আনন্দের ঢেউ, তাই চৈত্রের খাঁ খাঁ রোদের মধ্যে তাদের ক্লান্তি নেই। শহুরে জীবনে শখের পান্তাভাতের আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে যুক্ত ইলিশ কেনার ধুম লেগেছে। বৈশাখ শুরুর আগের দিনে ইলিশের দাম বাড়তে পারে, এ শঙ্কায় অনেকে ইলিশ কিনে রেফ্রিজারেটরে রেখে দিচ্ছে। গ্রামের জীবনমান উন্নত হওয়ায় পান্তাভাতও বৈশাখের প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে। একটা সময়ে গ্রামের পাথারে, বটতলা, হাটখোলা, খেয়াঘাটে বৈশাখের দিনে মেলা বসত। এখন গ্রামে আগের মতো বটগাছ দেখা যায় না। গ্রামীণ সড়কে সেতু নির্মিত হওয়ায় খেয়াঘাটও কমে গেছে। প্রতিটি খেয়াঘাটের কাছেই থাকে ঢুলিদের আবাস। বৈশাখে ঢুলিরাও ঢোল বাজিয়ে উৎসব করে। এখন সেই ঢুলিদেরও আকাল। ঢোলবাদকেরা ব্যান্ডপার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তারপরও বগুড়ার গ্রামগুলোতে বৈশাখী আয়োজন চলছে।
×