ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় ঐকমত্য গঠন করে জঙ্গীবাদ মোকাবেলার পরামর্শ জাসদের

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৯ এপ্রিল ২০১৭

জাতীয় ঐকমত্য গঠন করে জঙ্গীবাদ মোকাবেলার  পরামর্শ জাসদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গীবাদ জাতীয়-আন্তর্জাতিক সমস্যা। রাজনৈতিক শক্তি দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের মধ্য দিয়ে সরকারকে জঙ্গীবাদ মোকাবেলার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি নেতারা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সকল সেক্টরের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনেরও পরামর্শ দিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব পরামর্শের কথা তুলে ধরেন দলটির জেএসডি নেতারা। ‘পার্লামেন্টে উচ্চকক্ষ গঠন করা, উচ্চকক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে ও দ্বিতীয় ধারার রাজনীতির ভিত্তিতে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে’ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীরা যোগ দেন। তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি দেশের সকল সমস্যা সমাধান করতে পারে এ কথা উল্লেখ করে দলের শীর্ষ নেতারা গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে মানুষ এখন আর দেখতে চায় না। তাই বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি এখন সময়ের দাবি। সমাবেশে বক্তারা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ গঠন, নয়টি প্রদেশ গঠনের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করা, শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গঠন, দেশ পরিচালনায় এক হাজার ২০০ ব্রিটিশ আইন বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী কোন চুক্তি করলে তা প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়ে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আগামী নির্বাচনে ভোট চোরদের ভোট দেব না। আমরা নির্বাচন করব। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব সরকারের। কেউ ভোটে কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে এলে হাত কেটে দেব। কেন্দ্রে পাহাড়া দেব। আর কখনই প্রহসনের নির্বাচন হতে দেব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনের দুই বছর আগে প্রচার শুরু করে আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তালবাহানার পরিণতি ভয়ারহ হবে এমন মন্তব্য করে রব বলেন, সময়মতো নির্বাচন দিন। এনিয়ে তালবাহানা করবেন না। এতে পরিণতি ভয়াবহ হবে। তখন পালাবার পথ পাবেন না। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সরকারী টাকায় নির্বাচনী প্রচার চালালে আপনার বিরুদ্ধে ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা হবে। রাষ্ট্রের টাকা ব্যয় করে আপনি নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারেন না। মানুষের ভোটের অধিকার ফেরত দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দেশের পরিস্থিতি নাজুক এমন মন্তব্য করে সভাপতির বক্তব্যে রব আরও বলেন, দেশে এখন কোন নাগরিকের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিন সঙ্কট ঘনীভূত হচ্ছে। মানুষের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বাড়ছে। গোটা দেশ এখন সরকারের কাছে জিম্মি। একটা স্বৈরশাসন চলছে। আমরা বলতে চাই, দেশে যা ইচ্ছা তাই করতে দেয়া হবে না। ‘৭১-এ দেইনি, এখনও দেব না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থ জলাজ্ঞলি দিয়ে ভারতের সঙ্গে কোন চুক্তি মেনে নেয়া হবে না। আশা করছি তিস্তা ও গঙ্গার পানি নিয়ে আসবেন। রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জীবন দেব তবুও সুন্দরবন ধ্বংস হতে দেব না। উপজেলা শিল্পাঞ্চল করা হলে দেশে কোন শিক্ষিত বেকার থাকবে না বলেও মত দেন তিনি। দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার চেতনার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে না এমন মন্তব্য করে জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, বর্তমান সরকার অনির্বাচিত। তারা জনগণকে বিশ্বাস করে না। জনগণও তাদের বিশ্বাস করে না। দেশে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র চলছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, মানুষের এখন কথা বলার অধিকার নেই। জঙ্গীবাদের নামে দেশে অন্য কোন খেলা চলছে কিনা এনিয়ে সন্দেহ হয়। তিনি গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ গোফরান, তানিয়া রব, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, আতাউল করিম ফারুক, সিরাজ মিয়া প্রমুখ।
×