ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিসির আমলে মিসরীয়দের উপলব্ধি

মোবারকের সময়েই ভাল ছিলাম

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ৯ এপ্রিল ২০১৭

মোবারকের সময়েই  ভাল ছিলাম

আরব বসন্তের পর পাঁচ বছর চলে গেছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আসসিসির অধীনে মিসরের অবস্থা খারাপ হয়েছে এ উপলব্ধি দেশটির জনগণ প্রেসিডেন্ট মোবারকের আমলেই ভাল ছিল বলে স্মৃতিচারণ করে। সিসি গত সোম ও মঙ্গলবার ওয়াশিংটন সফর করেন। ২০১৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালে সিসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তখন থেকেই মিসরীয় নেতা হোয়াইট হাউসের আমন্ত্রণ লাভের আশায় ছিলেন। সিসি কঠোর দমানভিযানের মাধ্যমে মিসরীয় সমাজের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছেন। দেশটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সাংবাদিককে কারাগারে নিক্ষেপ করে রেকর্ড করেছে। এছাড়া হাজার হাজার লোককে সরকারের বিরোধিতা করার জন্য কারারুদ্ধ করা হয়েছে। ২০১৩ সালের আগস্টে একদিনেই মিসরীয় নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ৮শ’ লোককে গুলি করে হত্যা করে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে দুজনের মধ্যে একবার সাক্ষাত হয়েছিল। তখন ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবির থেকে ঘোষণা করা হয়, ট্রাম্প মিসরের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে প্রেসিডেন্ট সিসির কর্মসূচীর প্রতি জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। কিভাবে ভবিষ্যত ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্র শুধু সাধারণ মিত্র হিসেবে নয়, বরং বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে পাশে থাকবে তার ঘোষণা দেয়া হয় এ সময়। গত মাসের ২৪ তারিখ মোবারক সামরিক হাসপাতাল ত্যাগ করেন। ২০১১ সালের গ্রীষ্ম থেকে এখানে তিনি কমবেশি অন্তরীণ ছিলেন। সাবেক মিসরীয় প্রেসিডেন্ট তার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানকালে বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যার নির্দেশ প্রদান, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের তহবিল তসরুফ এবং বিভিন্ন ধরনের উৎকোচ ও দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছিলেন। কিন্তু বিচারে সম্প্রতি তিনি সকল অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন। মোবারকের ছাড়া পাওয়া নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটনে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। মোবারক মিসরে বেশিরভাগই নিন্দিত। মোবারকের শাসনামল অনেক বেশি জটিল ছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মোবারক উত্তর কালের চাইতে তার শাসনামল অপেক্ষাকৃত বেশি সফল ছিল। তিনি ১৯৮১ সালের ১৪ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট হন। ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তার পতন হয়। এই দীর্ঘ সময়ে মিসরে ব্যাপকভিত্তিক আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন হয়েছে। দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকার কারণে এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে অনেকের ধারণা। সে তুলনায় প্রেসিডেন্ট সিসি অল্প সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। তিনি অবশ্য কিছু অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে সুয়েজ ক্যানেল বাইপাস প্রজেক্ট এবং নতুন রাজধানী নির্মাণের পরিকল্পনা। এসব কর্মসূচী থেকে হয়ত সফলতা আসতে পারে। কিন্তু তা বেশ সময়সাপেক্ষ। বহু মিসরীয় এখন রীতিমতো আফসোস করে বলেন, মোবারক আমলেই ভাল ছিলাম। এখনকার তুলনায় মোবারকের আমলে অন্তত কিছুটা হলেও বাকস্বাধীনতা ছিল। পূর্বের যে কোন সময়ের চাইতে মিসরের নিরাপত্তা বাহিনী তখন আরও বেশি সাংবাদিক, ভিন্নমতাবলম্বী ও নাগরিক অধিকার কর্মীদের নৃশংসভাবে দমন করছে। -স্যালন ডট কম।
×