ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বরূপে ফিরলেন মুস্তাফিজ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৮ এপ্রিল ২০১৭

স্বরূপে ফিরলেন মুস্তাফিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ধুম-ধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের নতুন রূপে ইমরুল কায়েস, ম্যাচ-উইনিং পারফর্মেন্সে ‘সুপার’ সাকিব আল হাসানের জ্বলে ওঠা, ছোট্ট ফরমেটে মেহেদী হাসান মিরাজের অভিষেকÑ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার বিদায়ী টি২০তে আসলে এই সবই আড়ালে চলে যায়। পরশু কলম্বো ম্যাচের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, মুস্তাফিজুর রহমানের স্বরূপে ফেরা। ওয়ানডে সিরিজে বাজে বোলিংয়ের পর সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হচ্ছিলেন। মূলত ইনজুরি-অপারেশন কাটিয়ে সেই নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে ফেরার পর থেকেই সময়টা ভাল যাচ্ছিল না। ভক্ত-সমর্থক তো বটেই, ক্রিকেট বিশ্লেষকদেরও অনেকেই তার ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন। সব তুড়ি মেড়ে উড়িয়ে দিলেন টাইগার পেসার। ম্যাশ-বিদায়ের স্মরণীয় জয়ের দিনে ৩ ওভারে ২১ রান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট। টানা দুই শিকারে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়ে ছিলেন। ১৭৬ রান টি২০তে অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং স্কোর। তবে প্রতিপক্ষ লঙ্কান শিবিরে একঝাঁক তুখোড় পাওয়ার-হিটার দেখে এরপরও নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছিল না। এই দলটাই সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সিরিজ জিতে এসেছে। কিন্তু মাশরাফির নেতৃত্বের মুন্সিয়ানায় প্রথম ওভারেই বল হাতে উইকেট তুলে নেন সাকিব, নিজের দ্বিতীয় ওভারে আরও একটি। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তখন দলকে রেসে ফেরাচ্ছিলেন অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা ও অভিজ্ঞ চামারা কাপুগেদারা। থারাঙ্গা ফেরার পর মাত্র ক্রিজে আসেলা গুনারতেœ। দলীয় ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে পান মুস্তাফিজ। ফুল-লেন্থের প্রথম ডেলিভারিতেই মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে ক্যাচ বানিয়ে গুনারতেœকে (০) তুলে নেন। আউটসাইড ডেলিভারিতে পরের বলে সৌম্য সরকারের হাতে মিলিন্দা শ্রীবর্ধনের জীবনদান। মনে হচ্ছিল, লাসিথ মালিঙ্গার সঙ্গে এক ম্যাচে দুই হ্যাটট্রিকের বিরল দৃশ্য দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেট। নাহ, পা ঠকঠকে পরিস্থিতির মুখে বেঁচে যান থিসারা পেরেরা। তবে হ্যাটট্রিক না হলেও মুস্তাফিজের হাত থেকে রক্ষা পাননি সেকুগে প্রশন্ন (১১) ও লাসিথ মালিঙ্গা (০)Ñ দু’জনের স্ট্যাম্প উপড়ে দেন কাটার মাস্টার। ভাগ্যিস শ্রীলঙ্কা ১৮ ওভারে অলআউট, দ্য ফিজের তাই চার ওভারের কোটাও পূরণ হয়নি। ম্যাচে তার বোলিং ৩-০-২১-৪। প্রথম টি২০তে ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। আর প্রথম ওয়ানডতে ৩ শিকারের জন্য খরচ করেছিলেন ৫৬ রান, শেষটিতে ২ উইকেট পেতে ৫৫। মাঝে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮ ওভারে ১ উইকেটের বিপরীতে ৬০ রান। ভক্ত-সমর্থক তো বটেই, মুস্তাফিজের নিজেরও যেন সেটি বিশ্বাস হচ্ছিল না। বলেছিলেন, ‘নিজের পারফর্মেন্সে আমি মোটেই খুশি নই। আগের বোলিংটা ফিরে পেতে চেষ্টা করছি। আয়ারল্যান্ড সফরের আগে আমাকে পুরোপুরি ছন্দে ফিরতেই হবে।’ ঠিকই ফর্মে ফিরলেন ‘দ্য ফিজ’। একেবারে মোক্ষম সময়ে। টেস্ট-ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ ১-১এ ড্র করে স্মরণীয় সাফল্য নিয়ে দেশে ফিরেছে টিম-বাংলাদেশ। দিন দশেকের বিশ্রাম শেষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএল খেলতে ভারতে যাবেন মুস্তাফিজ। সেখানে হাতে গোনা কয়েকটা ম্যাচ খেলে দেশে ফিরে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে বোলিংটা আরও তাঁতিয়ে আয়ারল্যান্ডের উদ্দ্যেশে উড়াল দেবেন। যেখানে ওয়ানডে ত্রিদেশীয় সিরিজের আরেক দল নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডে অভিষেকে টানা দুই ম্যাচে ৫ ও ৬ উইকেট, তাও আবার ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। টি২০তে (২/২০) শুরুটা আরেক পরাশক্তি পাকিস্তানকে নাড়িয়ে দিয়ে।
×