ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ ভাড়া বাসিন্দাদের সঠিক হিসাব নেই

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৮ এপ্রিল ২০১৭

তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ ভাড়া বাসিন্দাদের সঠিক হিসাব  নেই

সালাম মশরুর সিলেট অফিস ॥ আতিয়া মহলে জঙ্গীবিরোধী অভিযান পরিচালনার পর সিলেটে বাসা-বাড়িতে ভাড়াটিয়া লোকদের তথ্য সংগ্রহ করতে পুলিশী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এনিয়ে এক বছর পূর্বে পুলিশের পক্ষ থেকে একদফা উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটা বেশি দূর এগোয়নি। সিলেট মহানগরীতে কত সংখ্যক মানুষ ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন, তার সঠিক হিসাব নেই সিটি কর্পোরেশনের কাছে। পুলিশের কাছেও কোন সঠিক তথ্য নেই। সিলেট নগরী ছাড়াও এর বাইরেও রয়েছে ভাড়াটিয়া লোকের বসবাস। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে নগরীসহ সদর উপজেলায় অন্তত ১০ লাখ মানুষ ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তার মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউটে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী নগরীর বিভিন্নস্থানে বাসা ভাড়া (মেস) নিয়ে থাকছেন। এছাড়া বিভিন্ন সরকারী- বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। এর বাইরে ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে মহানগরীতে অনেকেই বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। তথ্যমতে, ভাড়াটিয়াদের মধ্যে শ্রমজীবী নি¤œ আয়ের লোকের একটি বড় অংশ রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে অসংখ্য কলোনি। যার কোন সঠিক হিসাব নেই। এই সকল কলোনিতে ভ্যান-চালক, রিক্সাচালক, নির্মাণ শ্রমিক, মাটিকাজ, দোকান কর্মচারীসহ অল্প আয়ের লোকদের বসবাস। বিভিন্ন সময়ে দাগী অপরাধীরা বিভিন্ন স্থান থেকে পালিয়ে এসে এই সকল কলোনিতে আত্মগোপন করে থাকার সুযোগ নিয়ে থাকে। ছিনতাই, চুরি ডাকাতি, মাদকসেবনসহ নানান অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের একটি অংশ নিজেদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কলোনিতে বসবাস করার সুবিধা ভোগ করে। অধিকাংশ স্থানে মালিকদের যথাযথ তদারকি ছাড়াই চলছে কলোনিবাসীদের জীবনযাপন। মাস শেষে ভাড়া সংগ্রহ ছাড়া মালিকের সঙ্গে ভাড়াটিয়াদের সাক্ষাত নেই। অনেক ক্ষেত্রে যাদের অধিক কলোনি রয়েছে। তারা ঝামেলা এড়াতে একজন কর্মচারী রেখে দিয়েছেন, যে কলোনি দেখাশুনা ও ভাড়া সংগ্রহ করার কাজ করে থাকে। ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হলে জঙ্গী দমন ছাড়াও অপরাধীদের শনাক্ত করার বিষয়টি সহজতর হবে। সে সকল বিষয়ের গুরুত্ব দিয়ে বাসা-বাড়ির ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। দ্রুততম সময়ে নিজ নিজ ভাড়াটিয়াদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য বাসার মালিকদের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট ফরমও দেয়া হচ্ছে। সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্র জানায়, নগরীর কোন বাসায় নতুন কোন ভাড়াটিয়া ওঠছে, কারা বাসা ছেড়ে যাচ্ছে, এসব বিষয়ে তথ্য থাকলে সন্দেহভাজনদের ব্যাপারে খোঁজ নেয়া সহজ হবে। এছাড়া পরিচয় লুকিয়ে কোন ভাড়াটিয়া বাসায় ওঠছে কিনা, তাও যাচাই করা যাবে। আতিয়া মহলে পরিচয় লুকিয়ে ওঠেছিল জঙ্গীরা। এ জন্য নগরীর আর কোন বাসায় এমন ছদ্মবেশী রয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। আতিয়া মহলে অভিযান শেষ হওয়ার পরই নগরীর ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহে জোর দিয়েছে পুলিশ। এ জন্য প্রত্যেক ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সাহায্যও নেয়া হচ্ছে। সিলেটের মহানগরীর অধিভুক্ত প্রত্যেক থানায় রাখা হয়েছে ভাড়াটিয়াদের বিশেষ ফরম। বাড়িওয়ালাদের থানা কিংবা স্থানীয় কাউন্সিলর অফিস থেকে ফরম নিয়ে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সরবরাহ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সামগ্রিক বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার বাসু দেব বণিক এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার বিভূতিভূষণ ব্যানার্জি জানান ‘আমরা ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করছি। থানা ও কাউন্সিলরদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাড়িওয়ালাদের একটি ফরম দেয়া হচ্ছে, সে ফরমে ভাড়াটিয়াদের সকল তথ্য সরবরাহ করবেন বাড়িওয়ালা।’ তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেজ করছে পুলিশ। অদূরেই সিলেটেও এ ধরনের ডাটাবেজ তৈরির পরিকল্পনা পুলিশ প্রশাসনের রয়েছে।
×