ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৮ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই

বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় গিরগিটির মতো রং পাল্টানো চক্র আর জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। গত ১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদ ভবনের প্লাজায় ইন্টার পার্লামেন্টারিয়ান ইউনিয়নের (আইসিইউ) ১৩৬তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে দৃঢ়চিত্তে আহ্বান জানান, যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় সবাই একাগ্রচিত্তে ও পারস্পরিক যোগাযোগ নির্ভরভাবে কাজ করে। প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বান ছিল অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ। এ কথা সত্য, আজ সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে বৈশ্বিক জঙ্গীবাদÑ যার মূল উত্থান ঘটেছে বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীদের মাধ্যমে। তা বন্ধ করতে হলে অবশ্যই একযোগে দেশে-বিদেশে কাজ করতে হবে। ২ তারিখে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায়, ট্রাম্প সরকার ওবামার মতো সিরিয়ার সরকারকে উৎখাতে ব্যস্ত না হয়ে বরং আইএস দমনে ইচ্ছুক বলে জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন। এটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। আসলে যারা ধর্মকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে পুরুষ-নারী নির্বিশেষে একটি শক্তিশালী প্রজন্মকে শেষ করে দিতে চায় তারা কোন ধর্মের অনুসারী হতে পারে না। এমনকি মানুষের মধ্যকার যে মনুষ্যত্ববোধ সেটির অভাব আছে। কোন সুস্থ ও বিবেকবান মানুষ কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে বাংলাদেশে এ জঙ্গীরা মাথা তুলতে পারছে না। অথচ জার্মানি, লন্ডন, ব্রাসেলসসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জঙ্গীরা মিথ্যে কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আসলে আমাদের দেশেও অনেকে আছেন যারা সুযোগ সন্ধানী। যেখানে শেখ হাসিনা সরাসরি নির্দেশ দিচ্ছেন যে, যার যার ধর্ম সে পালন করবে, অন্যের ধর্মের ওপর হস্তক্ষেপ করা যাবে না কিংবা নিজের ধর্মের বিরুদ্ধে অন্যের মনে আঘাত লাগে এমন কিছু বলা যাবে না। সেখানে দু’পক্ষÑ যারা ধর্মের বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে অপব্যাখ্যা দিয়ে টাকা রোজগার করছে আরেক দল যারা ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করে উল্টা-পাল্টা বলে সুযোগ-সুবিধা আদায় করছে। যেভাবে তারা মানুষ হত্যা করছে। দুটো দলই চরম অবস্থায় পতিত হয়েছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নানা সমস্যায় কেবল পড়ছে না বরং মৃত্যু পর্যন্ত বরণ করতে হচ্ছে তখন প্রশ্ন জাগে এই জঙ্গীরা কারা? কে তাদের সাহায্য করছে। নিশ্চয়ই প্রশ্নগুলো গোয়েন্দা বাহিনী খুঁজে বের করবেন এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সমাধান করবেন। কিন্তু দেশে তথাকথিত সুশীল সমাজে যারা এ ধরনের অপকর্ম ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কেন প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছে না। শহরে বসে এসি ঘরে বিবৃতি-বক্তৃতা দিচ্ছে তা বোধগম্য নয়। যুগে যুগে, কালে কালে সমাজে নানামুখী সমস্যা আসে। সে সমস্যা সমাধানে কেবল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নয় বরং সামাজিক মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ স্থানীয়ভাবে মোকাবেলা করে থাকেন বলে ইতিহাসে দেখা যায়। আর বিএনপি-জামায়াত দল দুটো হলেও হাবেভাবে মনে হয়Ñ একই দল তাদের বক্তব্য বিবৃতি শুনলে মনে হয় এদেশে জঙ্গীবাদকে তারা নিন্দা না করে বেশ মোসাহেবীর মতভাবে সমর্থন করেন। আসলে জঙ্গীবাদকে ছড়িয়ে দেয়ার এ চক্রান্ত ওবামা প্রশাসন ও হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন শুরু করেছিলেন। এখনো অবাক হয়ে দেখি তালেবান যারা সৃষ্টি করেছিলেন তারা ফ্রাংকেস্টাইল হয়ে পাকিস্তানকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। পাকিস্তানে আজ কেবল জঙ্গীর হাতে মানুষ মারা যাচ্ছে না বরং তাদের বন্ধু রাষ্ট্রের ড্রোন হামলাতেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরীহ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। এটি আসলে এক ধরনের ঘৃণিত কাজ। ঢাকায় আইসিইউর পাঁচ দিনব্যাপী সম্মেলনে ৫৩টি দেশের স্পীকার, ২০৯টি দেশের ডেপুটি স্পীকার, নারী সংসদ সদস্যসহ মোট এক হাজার চার শ’ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে যখন বলা হয়Ñ ‘হয় জঙ্গীবাদ ঠেকান, না হলে অন্ধকার যুগ’ তখন জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সবাই একমত হতে বাধ্য। আমাদের দেশে জঙ্গীরা বর্তমানে সরকারের দৃঢ় চেতনায় কোণঠাসা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এদেরকে কারা এদেশে অর্থায়ন করছে। মাঝে মাঝে ধাক্কা লাগে, ২/১ বছর আগে টিভি টকশোতে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে কথা বলতে কিংবা নিজের অফিসে বর্তমান সরকারের উৎখাতের মিটিং করতে দিতে তারা কিভাবে গিরগিটির মতো রং পাল্টিয়েছেন। এদের যোগাযোগ সূত্রগুলো নিশ্চয়ই আমাদের চৌকস গোয়েন্দা বাহিনী খুঁজে বের করবেন। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস পুলিশ ও ক্যাম্পাস গোয়েন্দা বাহিনী তৈরি করে শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মকর্তা-কর্মকর্ত্রী, ছাত্রছাত্রী যারাই জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়বে বা প্রশিক্ষণ কিংবা অন্যভাবে সহায়তা করবে তাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। মেডিক্যাল কলেজ, প্রকৌশলসহ অন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ দরকার। মানুষের মধ্যে যে মনুষ্যত্ববোধ তা জাগ্রত করার জন্য হিংস্র পাশবিকতায় ভরপুর টিভি চ্যানেলগুলো কিংবা ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী টিভি চ্যানেল, রেডিও চ্যানেল এবং ইন্টারনেটের সেই সাইটগুলো যোগাযোগে কাজ করে প্রমাণ সাপেক্ষে এগুলো বন্ধ করে দেয়া দরকার। আসলে দেশের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করার জন্য জঙ্গীদের উস্কে দেয়া হতে পারে। কেননা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে ভাল। ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার এ্যালিসন ব্লেইক গত ১ এপ্রিল মন্তব্য করেন যে, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ দমনে এক সঙ্গে কাজ করবে। তার দেশে অবশ্য তারেক জিয়া নিজেই একজন জঙ্গী ঘরানার হয়ে অবস্থান করছেন। এদিকে রিজভী গয়েশ্বর আর ফখরুলের কথা শুনলে মনে হয় না ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কথা তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করেছে। ২৫ মার্চ, ১৯৭১-এ যে হত্যাযজ্ঞ পাকিস্তানী বাহিনী ও তার স্থানীয় দোসররা এদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর শুরু করেছিল তা সরকার যথার্থভাবেই বর্তমানে গণহত্যা দিবস নামকরণ কেবল নয়, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির চেষ্টা করছেন। শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বলব, পাকিস্তান আজ ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত একটি রাষ্ট্র যারা সীমাহীন অন্যায় করে করে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। আশা করি, মানবতাবাদীরা বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এ বর্বরতা, নৃশংসতার প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে গণহত্যা দিবসটি মেনে নেবেন। সে দিনের সে প্রেতাত্মারাই আজ দেশে নৃশংসতা চালাচ্ছে। এদের সংখ্যা হয়ত ধর্তব্যের মতো নয়Ñ কিন্তু আমাদের সামাজিক-শিক্ষা-ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়ন কর্মকা-ে নেতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। এক্ষেত্রে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে, জঙ্গীবাদ দমন এবং ধান্ধাবাজি দমন আবশ্যক হয়ে পড়েছে। শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির বক্তব্যটি ১০০% যথার্থ। কেননা আজকাল সমাজে ধান্ধাবাজরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহাবস্থান করে এমন একটি নেতিবাচক আবহের সৃষ্টি করে থাকে যা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকারক। একটি উদাহরণ দেই: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের পূর্বে আমার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে বিভিন্ন গ্রুপের স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কথা হলো। তারা ‘কুমিল্লা’ বিভাগের নাম ‘ময়নামতি’ রাখার বিপক্ষে। অথচ ‘ময়নামতি’ বিভাগ নামকরণ কত সৌভাগ্যের ব্যাপার। ইতিহাসের অমরত্বের চিহ্ন নিয়ে রানী ময়নামতির নামে বিভাগ হলে এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী কেবল থাকবে না বরং দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং বিকাশকে সমৃদ্ধ করবে। আসলে একটি দলীয় সিদ্ধান্তকে সবসময়ে উপযুক্ত সম্মান দিতে হয়। পাশাপাশি যতই মনোমালিন্য থাকুক না কেন, বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আবার দলীয় প্রার্থীর পারিবারিক ভাবমূর্তি এবং জনগণের সঙ্গে সংশ্রবটি বজায় থাকা দরকার। কুমিল্লার সাধারণ জনমানুষ সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে দেশ এগিয়ে চলেছে। এজন্যেই কমিশনার পদে অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থানীয় কমিশনাররা আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছে। প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক স্থানীয় কমিশনার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচিত। তবে সাধারণ জনগণ কিন্তু একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী তাদের এলাকায় কোন কাজ করেন না বলে মনে করেন। সান্ত¡না দিলাম সারা দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনার ভার উনার ওপর স্থানীয় পর্যায়ে ভাবার সময় কই? আসলে নিজেরটা গুছিয়ে তলে তলে অন্যদের সঙ্গে ঈধৎঃবষ করলে চলবে নাÑ শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখুন, কিভাবে মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করে দেশ জাতি সমাজ এবং নিজস্ব এলাকার সম্মান বৃদ্ধি করতে হবে। সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে এটি আসলে বিএনপি জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের ধান্ধাবাজি কর্মকা-ের বহিঃপ্রকাশ। কুমিল্লায় কোন কোন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে দেখলাম সেখানে ঐ ধান্ধাবাজদের অবস্থান-রেজিস্ট্রারের তলে তলে সহযোগিতায় হয়েছেÑ দু’মুখো সাপের মতো সাপ হয়ে দংশন করে, ওঝা হয়ে ঝাড়ে। রেজিস্ট্রারের পূর্ব ইতিহাস এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলী যদি একসূত্রে গেঁথে গোয়েন্দারা বের করেন তবে সত্য প্রকাশিত হতে পারে। কুমিল্লায় মুছে যাচ্ছে ইতিহাস। নিজ দলের যোগ্য ব্যক্তি থাকতে অন্যদলের কি করে সিটি মেয়র হয় তা বুঝতে হলে কুমিল্লার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ ও দলের প্রতি অনুগত থেকে কাজ করতে হবে। নিজ দলে গ্রুপিং থাকলে ফলাফল বারবার এমনই হবে। একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বিএনপি-জামায়াত কত বড় প্রতিহিংসাপরায়ণ তার বড় প্রমাণ প্রফেসর ড. শামসুল হক সকল আইন মেনে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় করলেও সেটি বন্ধ করে দেয়। কেননা তাদের দৃষ্টিতে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগপন্থী। আর তাই ক্ষমতায় এসে শুধু বন্ধ করেননি আমরা যারা পরীক্ষার মাধ্যমে এমবিএ এবং এমসিএ করেছি তাদের মূল সার্টিফিকেট দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আসলে ঐক্যবদ্ধ না হলে জামায়াত-বিএনপি তাদের কাজটা করেই যাবে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ এর প্রথম ভাগে দেশে তারা যা করেছে তা ঘোষিত সন্ত্রাস বৈ অন্য কিছু নয়। এদের সঙ্গে জঙ্গীদের কোন পার্থক্য আছে কিনা তা গবেষণা করা যেতে পারে। দিনমজুর, স্কুল শিক্ষক, বোবা প্রাণী, পুলিশসহ কেউ রেহাই পায়নি। এই ধান্ধাবাজ, পরমত অসহিষ্ণু দল দুটো হাল ও নীতিতে এক। আর যারা বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে উপরে উপরে বিশ্বাস স্থাপন করেন কিন্তু তলে তলে শেক্সপিয়রের অমর নাটক ‘ওথেলো’র ইয়াগো চরিত্রে অভিনয় করে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকেন, কিন্তু জনগণের কল্যাণ না করে বরং বিরোধী পক্ষকে নানা সুযোগ সুবিধা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেন, যারা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দলের হয়ে খেলতে গিয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজা অপমান করেন, ধরাকে সরা জ্ঞান করেন তারা আসলে ভুলে যান তাদের কারণে বিশ্বজুড়ে নেত্রী ও তার ছেলে-মেয়ের উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি হলেও স্থানীয় পর্যায়ে নেত্রীর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধু এ ধরনের রাজনৈতিক ব্যবসায়ীর কারণে জাতির অগ্রযাত্রা শ্লথ হবে না কিন্তু মাঝে মাঝে কিছুটা সমস্যার উদ্রেক হতে হবে। আজ সময় হয়েছে কোন কোন নেতা তলে তলে বিরোধী দলের সঙ্গে সখ্য করেন, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেন, নেত্রীর কথা অমান্য করার দুঃসাহস দেখান, তাদের ছেলে-মেয়েরা কতটুকু খাঁটি বাঙালী এবং স্থানীয় এলাকার উন্নয়ন কি করছেন সে সম্পর্কে একটি নিরপেক্ষ রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া। যারা দিনে একরূপ রাতে অন্যরূপ-তাদের চিত্র পরিস্ফুট হলে বর্তমানে যে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে তা দূর হবে। একই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে জঙ্গী তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী হোক, শিল্পপতি হোক, আমলা হোক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, ব্যাংকার, হু-িওয়ালা হোক কিংবা কর্মকর্তা-কর্মচারী অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া। হাজার বছরের বাঙালী ঐতিহ্যে জঙ্গীবাদের স্থান নেই। যারা জঙ্গীবাদের উদ্ভাবন ও বিকাশ সাধন করেছেন তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাঠ্য-পুস্তক, পারিবারিক মূল্যবোধেও সবসময়ে অসাম্প্রদায়িকতা ও নিজের ধর্মের প্রতি ভালবাসা থাকতে হবে। যে সমস্ত ধান্ধাবাজ ব্যবসায়ী কিংবা আমলা রং পাল্টিয়ে সরকার সমর্থক সেজে ফায়দা তুলছেন তারা কি আদৌ বর্তমান সরকারের প্রতি আন্তরিক কিনা সেটি দেখা বাঞ্ছনীয়। গিরগিটির মতো বার বার রং পাল্টানোদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আশার কথা, বাংলায় যুগে যুগে এ হিংস্রদের কোন স্থান ছিল না। ভবিষ্যতেও থাকবে না। তবে রাজনীতির নোংরা খেলায় কেউ কেউ মেড ইন পাকিস্তান হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। তারপরও তাদের কথাবার্তায় কিন্তু কেমন যেন জঙ্গীবাদের প্রতি সমর্থন ফুটে ওঠে। আসুন, গণহত্যা দিবস জাতীয় স্বীকৃতি পাক, বর্তমানে সরকারের উন্নয়নের রাজনীতি অব্যাহত থাকুক, গিরগিটির মতো রং পাল্টানো মধ্যম সারির নেতৃবৃন্দ থেকে মুক্ত হোক এবং জঙ্গীমুক্ত বাংলাদেশ বহাল তবিয়তে থাকুক। লেখক : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ চরঢ়ঁষনফ@মসধরষ.পড়স
×