ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্লোরিডায় উষ্ণ আতিথেয়তায় সিক্ত হলেন শি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৮ এপ্রিল ২০১৭

ফ্লোরিডায় উষ্ণ আতিথেয়তায় সিক্ত হলেন শি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ফ্লোরিডার বিলাসবহুল পাম বিচে গত বৃহস্পতিবার স্বাগত জানান। এ সময় সারা বিশ্বের প্রচারমাধ্যম উৎসুক চোখে তাকিয়ে ছিল এ দুই নেতার দিকে। তাদের কথা, প্রতিটি অভিব্যক্তি ও শারীরিক ভাষার চুলচেরা বিশ্লেষণে তারা ব্যস্ত ছিল। অভ্যর্থনার সময় ট্রাম্প বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টকে অতিথি হিসেবে পেয়ে তিনি নিজেকে ‘অত্যন্ত সম্মানিত’ বোধ করছেন। এর কিছুক্ষণ পরই প্রতিনিধি দলের হাসির মধ্যে ট্রাম্প তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলে বসলেন আমাদের মধ্যে ইতোমধ্যেই যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আমি এ পর্যন্ত কিছুই পাইনি একদম কিছু না! তবে আমরা সামনের দিকে তাকিয়ে আছিÑ বড় কিছু একটা পাওয়ার লক্ষ্যে। প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরে দুই নেতা সস্ত্রীক ডিনারে মিলিত হন। এই আনন্দঘন পরিবেশে প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী, চীনের বিশিষ্ট গায়িকা পেং লিইউয়ান এবং ট্রাম্পের স্ত্রী সাবেক মডেল কন্যা মেলানিয়া ট্রাম্প। খবর বিবিসি/এএফপির। উভয় নেতার এই আনন্দঘন বৈঠক ম্লান হয়ে যায়। দুটি ঘটনায়। প্রথমটি, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা যা জাপান উপকূলের কাছাকাছি আঘাত হানে অপরটি সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রেসিডেন্ট আসাদের রাসায়নিক গ্যাস হামলা। এই হামলায় নারী ও শিশুসহ শতাধিক লোক নিহত হয়েছে। সবাই জানে, এই দুটি রাষ্ট্রের (উত্তর কোরিয়া ও সিরিয়া) বেপরোয়া আচরণের পেছনে এশিয়ার দুই পরাশক্তি চীন ও রাশিয়ার প্রশ্রয় রয়েছে। সে জন্য তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত জাতিসংঘের কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে না। বুধবারের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো ট্রাম্পকে ফোন করে তার উদ্বেগের কথা জানান। প্রায় ৩৫ মিনিট স্থায়ী এই টেলিফোন সংলাপে ট্রাম্প জাপানী প্রধানমন্ত্রীকে এই আশ্বাস দেন, উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন যদি কোন ব্যবস্থা না নেয় বা আমাদের সহযোগিতা না করে তবে যুক্তরাষ্ট্র একাই দেশটিকে শায়েস্তা করতে প্রস্তুত। এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্প ও শির মধ্যে আলোচনায় উত্তর কোরিয়া ইস্যু প্রাধান্য পায়। উত্তর কোরিয়া ছাড়াও ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট শির মধ্যে আলোচ্যসূচীর মধ্যে রয়েছে, দুই দেশের বাণিজ্য বৈষম্য। ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের সময় এবং তারপরেও বিস্তর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন দেশটির বিরুদ্ধে। এর মধ্যে আছে চীনা মুদ্রার অবমূল্যায়ন করে কোটি কোটি ডলার হাতিয়ে নেয়া, ইস্পাতের দাম কমিয়ে এনে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার দখল করা, মার্কিন কর্মসংস্থান সঙ্কুচিত করাÑ এসব মিলিয়ে ট্রাম্পের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩১ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি।
×