ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের মূল অংশের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৮ এপ্রিল ২০১৭

আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের  মূল অংশের  নির্মাণ কাজ  শেষ পর্যায়ে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সোয়া ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ‘আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার’ মূল অংশের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। চলতি মাস কিংবা আগামী মাসের প্রথমার্ধে সম্পন্ন হবে ফ্লাইওভারের প্রধান অংশের কাজ। এরপর পর্যায়ক্রমে র‌্যাম ও লুপ নির্মাণ শেষ করে তা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই উড়াল সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কাজের গতি বাড়িয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ৬৯৬ কোটি টাকার এই উড়াল সড়ক নির্মিত হলে বন্দরনগরীতে যানজট অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করছেন নগর পরিকল্পনাবিদগণ। চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে যে ক’টি বৃহৎ প্রকল্প গৃহীত হয়েছে তার মধ্যে একটি আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার। মুরাদপুর থেকে ওঠা এই ফ্লাইওভার নামছে লালখান বাজার এলাকায় এসে। প্রথমে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৬২ কোটি টাকা। তবে কাজ শুরুর পর এর সঙ্গে র‌্যাম এবং লুপ যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়। ফলে এর ব্যয় বেড়ে হয় ৬৯৬ কোটি টাকায়। একনেক সভায় বর্ধিত এ ব্যয় অনুমোদিত হওয়ার পর বাকি ছিল সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ কমিটি কর্তৃক ঠিকাদারকে অনুমোদন প্রদান। সে অনুমোদন মেলায় নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় র‌্যাম এবং লুপ নির্মাণে এখন আর কোন বাধা নেই। নগরীর মুরাদপুর-লালখান বাজার ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ফ্লাইওভারের নামকরণ করেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর নামে। ফ্লাইওভারটি নির্মাণের কাজ চলমান থাকতেই এর নক্সা নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। কেননা, দীর্ঘ এই উড়াল সড়কের জিইসি মোড় অংশে কোন র‌্যাম-লুপ ছিল না। এতে করে উড়াল সড়কটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে বলে তিনি অভিমত রাখেন। নির্মাণ কাজ সাময়িক স্থগিত রেখে এ ব্যাপারে তিনি চুয়েটের পরামর্শ গ্রহণ করেন। অতঃপর যানবাহন উঠানামার জন্য জিইসি মোড় এলাকায় র‌্যাম ও লুপ নির্মাণ অনুমোদিত হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) সূত্রে জানা যায়, পরিবর্তিত ডিজাইন অনুযায়ী জিইসি মোড়ে চারটি এবং ষোলশহর দুই নম্বর গেট মোড়ে বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের দিকে একটি র‌্যাম নামবে। শেষ মুহূর্তে র‌্যাম-লুপ যুক্ত হওয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম জিইসি মোড় এলাকায় উড়াল সড়কের যানবাহন উঠানামা করতে পারবে। এটি নগর পরিকল্পনাবিদদেরও পরামর্শ ছিল। আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পরিকল্পনা নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দ্বিমত প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছিল। একটি অনুষ্ঠানে এ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়। এ প্রসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, আমি ফ্লাইওভারের বিরুদ্ধে নই, তবে অপরিকল্পিত ফ্লাইওভারের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, মুরাদপুর-লালখান বাজার উড়াল সড়কটি যুক্ত হবে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে। বিমানবন্দর থেকে এই এক্সপ্রেসওয়ে বারিক বিল্ডিং মোড়ে এসে দু’ভাগে বিভক্ত হবে। এরপর একটি শাখা মিলবে লালখান বাজার মোড়ে। অপর একটি শাখা গিয়ে নামবে কর্ণফুলী সেতুর এপ্রোচ সড়কে। বাস্তবায়নাধীন আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের কাজ পুরোপুরি শেষ করে চলতি অর্থবছরের মধ্যেই যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিতে চায় চউক।
×