ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের সঙ্গে দুই বন্দর ব্যবহার নিয়ে সমঝোতা হতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৭ এপ্রিল ২০১৭

ভারতের সঙ্গে দুই বন্দর ব্যবহার  নিয়ে সমঝোতা হতে পারে

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার সমঝোতা হতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভারতীয় বিনিয়োগ প্রত্যাশী। এ ব্যাপারে দুইদেশের মধ্যে বোঝাপড়া অনেকটাই চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের সাগর পাড়ে বে-টার্মিনাল নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা আশা করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বে-টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়ে গেছে। এ টার্মিনাল নির্মাণ করা গেলে বন্দরের ক্ষমতা উন্নীত হবে দ্বিগুণে। ক্রমবর্ধমান আমদানি রফতানির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সরকার বে-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই এবং প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র গ্রহণসহ সকল প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু নির্মাণ কাজ শুরুর অপেক্ষা। তবে এর জন্য প্রয়োজন বিপুল অঙ্কের অর্থ। ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য অর্থাৎ সেভেন সিস্টার্সের আমদানি রফতানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় অতীতের সরকারগুলো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নীত হয়েছে নতুন উচ্চতায়। আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি, ছিটমহল সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে স্থল সীমান্তের বিরোধ নিষ্পত্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্কের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। স্থাপিত হয়েছে দুইদেশের মধ্যে সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠা, বাস ও রেল যোগাযোগ। সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে এগুচ্ছে দুই দেশ। এছাড়া বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে দুইদেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। বৃহৎ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ভারতের দীর্ঘদিনের চাওয়া বন্দর ব্যবহারের সুবিধাও এবার বাস্তবে রূপ নিতে পারে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান যে সক্ষমতা তা দিয়ে ভারতের সাত রাজ্যকে সার্ভিস দেয়া কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েও রয়েছে নানা মত। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের অভিমত, বন্দরের উন্নয়নে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া যেতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (এ্যাডমিন এ্যান্ড প্লানিং) মোঃ জাফর আলমের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের। এ ব্যাপারে তার মন্তব্য করার এখতিয়ার নেই। তবে সরকারের চাওয়া মতে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান সক্ষমতা এবং পরিকল্পনা ও গৃহীত পদক্ষেপ জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতকে বন্দর ব্যবহার সুবিধা প্রদান করতে হলে বে-টার্মিনাল নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন বিপুল অর্থের। ভারত এ বন্দর ব্যবহার করতে আগ্রহী হওয়ায় দেশটির কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া যেতে পারে। ভারতও এ ব্যাপারে আগ্রহী হবে বলে ধারণা করা যায়। সেক্ষেত্রে বে-টার্মিনালকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে একটি অংশ ভারতকে ব্যবহারের জন্য দেয়া যেতে পারে। তবে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরে।
×