ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনা তারকার দেশপ্রেম নেই অভিযোগ আর্জেন্টাইনদের

দেশের মানুষের সমালোচনায় মর্মাহত মেসি

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ৬ এপ্রিল ২০১৭

দেশের মানুষের সমালোচনায় মর্মাহত মেসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশের জার্সি গায়ে কিছুই করতে পারেননি লিওনেল মেসি। অথচ ক্লাব বার্সিলোনার হয়ে জিতেছেন ভুরি ভুরি ট্রফি। বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলেও ধুঁকছে আর্জেন্টিনা। চিলির বিরুদ্ধে ম্যাচে রেফারির সঙ্গে বাজে আচরণের কারণে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন অধিনায়ক মেসি। যে কারণে আর্জেন্টনার ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণে মেসিকে নিয়ে সমালোচনার অন্ত নেই। এমনিতেই নিজ দেশ আর্জেন্টিনার মানুষ নাকি মেসিকে খুব একটা পছন্দ করেন না। আগেও অনেকবার দেশটির ফুটবলপ্রেমীরা অভিযোগ করেছেন, মেসি যতটা দরদ দিয়ে বার্সার হয়ে খেলে আর্জেন্টিনার হয়ে ততটা দরদ থাকে না। এখন বহিষ্কার হওয়া ও আর্জেন্টিনার হারের কারণে আবারও বিষয়টি সামনে এসেছে। আবার আর্জেন্টিনার মানুষ বলতে শুরু করেছেন, মেসির দেশপ্রেম নেই। এমন অবস্থায় বেশ মর্মাহত হয়েছেন মেসি। এক সাক্ষাতকারে পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা জানিয়েছেন, দেশের মানুষের এমন সমালোচনায় তিনি খুব বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন। যাদের জন্য সবকিছু বাজি রেখে খেলে যান, সেই আর্জেন্টিনার জনগণ একের পর এক প্রশ্নবাণে মেসিকে জর্জরিত করে যাচ্ছে। সমালোচনায় হচ্ছে বিদ্ধ, বলা হচ্ছে দেশপ্রেম নেই মেসির। কতটা সহ্য করা যায়? তিনিও তো রক্ত মাংসেরই মানুষ। শেষ পর্যন্ত তাই মুখ না খুলে পারলেন না মেসি। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, এসব সমালোচনা তাকে পোড়ালেও স্বাভাবিকভাবেই নেন তিনি। সঙ্গে অলিম্পিকে জেতা সোনাকে নিজের কাছে অমূল্য রতন বলে মন্তব্য করেছেন। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে চিলির বিরুদ্ধে ম্যাচে মেসির একমাত্র গোলে জয় পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচেই সহকারী রেফারিকে ‘অশ্রাব্য গালি’ দেয়ার অভিযোগে বাছাইয়ের চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা জুটেছে তার। তাকে ছাড়া পরের ম্যাচে বলিভিয়ার কাছে ২-০ গোলের হারে আর্জেন্টিনা। তাদের রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকেট পাওয়ার রাস্তা এখন কাঁটায় পূর্ণ। সমর্থকরা নাকি এই হারের পেছনে দায় দেখছেন মেসির। মেসির অনুপস্থিতিই দলের হারের পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে, অভিযোগ আর্জেন্টিনার জনগণের। কথাটা হয়তো সত্য। তিনি তো দলের প্রাণভোমরা। কিন্তু মেসির স্বদেশীরা সেই অভিযোগটা এমনভাবে করছেন, যেন হারের সব দোষ কেবল মেসিরই। এক সাক্ষাতকারে নিজের কষ্টগুলো তুলে ধরেছেন মেসি। নিজ দেশের জনগণের সমালোচনা যে তাকে পোড়ায় সেটিও জানিয়েছেন। আবার বলেছেন এসব সমালোচনা তার কাছে স্বাভাবিকই। মেসি বলেন, এই যে সমালোচনা হচ্ছে, এসব আমার কাছে একদমই স্বাভাবিক। কারণ আমি জানি এসব ঘটবেই। জনগণ আমাদের কাছে একটা হলেও শিরোপা চায়। আমরা যারা জাতীয় দলে খেলি, সবার লক্ষ্যও কিন্তু একটা শিরোপা। টানা তিন শিরোপার একদম দোরগোড়া থেকে শূন্য হাতে ফিরেছেন মেসিরা। ২০১৪ সালে জার্মানির কাছে বিশ্বকাপ শিরোপা খুইয়েছেন প্রথমে। পরে টানা দুই কোপা আমেরিকার ফাইনালে হার চিলির কাছে। জাতীয় দলের হয়ে মেসির সাফল্য কেবল ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকের ফুটবলে স্বর্ণ জয়। সেই স্বর্ণই তার কাছে অমূল্য রতনের সমান। মেসি বলেন, এই একটা জয়কে আমি খুবই মূল্য দেই। কারণ এই টুর্নামেন্ট জীবনে একবারই খেলতে পারবেন আর সেখানে বিভিন্ন ধরনের খেলোয়াড়ের সঙ্গেও আপনাকে প্রতিযোগিতা করতে হয়। আজকের এই বিশ্বসেরা হওয়ার পেছনে তিনি অনেকেরই অবদান স্বীকার করেন। তবে বিশেষভাবে স্বীকার করেন সাবেক বার্সিলোনা কোচ পেপ গার্ডিওলাকে। সাবেক গুরুকে স্মরণ করে মেসি বলেন, আমি এবং আমার সতীর্থদের জন্য গর্বের বিষয় যে আমরা বার্সার সর্বজয়ী দলটার অংশ। গার্ডিওলা এই দলটায় দারুণ সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন। সবার সেরাটাও বের করে এনেছিলেন। মেসি এতো সমালোচনার ভিড়ে স্বস্তি খুঁজে পান নিজের পরিবারের কাছে। নিজের পরিবারকে তাই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ মনে করেন। বলেন, আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার স্ত্রী, আমার সন্তান, আমার পরিবার। ওরা এমন এক সম্পদ যাদের আমি ভালবাসি।
×