ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নববর্ষের চাহিদা মেটাতে ব্যাপক জাটকা নিধন

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ৫ এপ্রিল ২০১৭

নববর্ষের চাহিদা মেটাতে ব্যাপক জাটকা নিধন

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোট বাইশদিয়া ইউনিয়নের জেলেরা কেবল আগুনমুখা আর দারভাঙ্গা নদী থেকে প্রতিদিন দুই শতাধিক মণ জাটকা শিকার করছে। জাটকা শিকারে জড়িয়ে আছে ইউনিয়নের দেড় হাজারের বেশি জেলে। এরা জাটকা শিকারে ব্যবহার করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত কারেন্ট জাল। পটুয়াখালী জেলার অন্যান্য নদ-নদী থেকেও ধরা হচ্ছে এর আরও কয়েকগুণ বেশি জাটকা। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের যোগসাজশেই জেলেরা জাটকা শিকারে মেতে উঠেছে। যদিও প্রশাসন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সরেজমিন অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আগুনমুখা আর দারভাঙ্গা নদীর মোহনায় ছোট বাইশদিয়া ইউনিয়নের অবস্থান। এর দক্ষিণে বিস্তীর্ণ সাগর। অবস্থানগত সুবিধার কারণে ছোট বাইশদিয়া ইউনিয়নের মোট জনগোষ্ঠীর একটি অংশ বরাবরই জাটকা শিকার করে আসছে। সরেজমিন খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, ছোট বাইশদিয়া ইউনিয়নের দেড় হাজারের বেশি জেলে চার থেকে পাঁচ শ’ ছোট ডিঙি নৌকা জাটকা শিকারে ব্যবহার করছে। দিনের চেয়ে রাতের আঁধারেই জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা শিকারে মেতে উঠছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতের বেলা আগুনমুখা ও দারভাঙ্গা নদীর পুরোটাই জাটকা শিকারিদের দখলে থাকে। জেলেদের কারণে নৌপথে চলাচল দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, শিকার করা জাটকার একটি বড় অংশ দুই-তিন ইঞ্চি সাইজের, যা এলাকায় ‘চাপিলা’ হিসেবে চিহ্নিত করে কেজি দরে কিংবা ভাগ দিয়ে বিক্রি করা হয়। আবার চার-ছয় ইঞ্চি সাইজের জাটকার পেটে প্রচুর ডিম দেখা যায়। এক শ্রেণীর মহাজন রাতের মধ্যে আহরিত জাটকা বিভিন্ন এলাকায় পাচার করে দেয়। জানা গেছে, পহেলা নবেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৮ মাস জাটকা শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে জাটকা শিকারি জেলেদের পুনর্বাসনে ভিজিএফসহ বিভিন্ন কর্মসূচী চলছে। গলাচিপার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস জানান, সহায়তা কর্মসূচী ছাড়াও নদী-সাগরে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য যে পরিমাণ আর্থিক বরাদ্দের প্রয়োজন তা পাওয়া যাচ্ছে না, যে কারণে মাঝেমধ্যে অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। জেলে কিংবা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
×