ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এলইডি লাইট উৎপাদনে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতির দাবি

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৫ এপ্রিল ২০১৭

এলইডি লাইট উৎপাদনে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতির দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বর্তমানে সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এলইডি লাইট কারখানা। বাংলাদেশেও রয়েছে এর অপার সম্ভাবনা। বিদ্যুত সাশ্রয়ী এলইডি বাতি উৎপাদন করে নানাভাবে লাভবান হতে পারে দেশ। আমদানি হ্রাস করে বিপুল মুদ্রা সাশ্রয় সম্ভব। এছাড়া দেশীয় শিল্প বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং দক্ষ জনবল তৈরি হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে স্থানীয় উদ্যোক্তারা প্রধান বাধা হিসেবে দেখছেন বিদ্যমান ভ্যাট কাঠামোকে। তাদের দাবি, উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হলে দেশীয় বিনিয়োগের সুরক্ষা হবে এবং এ শিল্পের দ্রুত এবং অর্থবহ বিকাশ ঘটবে। জানা গেছে, এনার্জি সেভিং বা সিএফএল (কম্প্যাক্ট ফ্লুর‌্যাসেন্ট লাইট) বাল্বের তুলনায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বিদ্যুত সাশ্রয়ী হচ্ছে এলইডি বাতি। সিএফএল বাল্বের উৎপাদন ও কাঁচামাল আমদানি ভ্যাটমুক্ত থাকলেও এলইডি লাইটের ক্ষেত্রে সেটা নেই। সম্প্রতি রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে শিল্প-কারখানায় এলইডি বাল্ব, লাইট, প্যানেল লাইট, টিউব লাইট ইত্যাদির ব্যবহার শুরু হয়েছে, যার বেশিরভাগই আমদানি করা হচ্ছে। এ আমদানিনির্ভরতা কমাতে ইতোমধ্যে এগিয়ে এসেছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী উদ্যোক্তা। দেশেই গড়ে তুলছেন এলইডি লাইটের মতো উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন ভারি উৎপাদন শিল্প। এতে দেশে সম্ভাবনাময় এক নতুন শিল্প বিকাশের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এলইডি বাতি উৎপাদন শিল্পের বিকাশে এর ওপর বিদ্যমান সমুদয় ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন তারা। সম্প্রতি এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে একটি লিখিত সুপারিশমালা দিয়েছে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ ইলেক্ট্রিক্যাল, ইলেক্ট্রনিক্স এ্যান্ড হোম এ্যাপ্লায়েন্স ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিইইএমইএ), যেখানে এলইডি লাইট উৎপাদন শিল্প বিকাশের পথ সুগম করতে ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানানো হয়। বিইইএমইএ’র মহাসচিব সাহাবুদ্দিন সবুজ বলেন, সিএফএলের চেয়ে অনেক বেশি বিদ্যুত সাশ্রয়ী এলইডি বাতি। তাই সিএফএল বাতির মতো এলইডি বাতি উৎপাদন ও কাঁচামালকে ভ্যাটমুক্ত করা সময়ের দাবি। একটি বেসরকারী গবেষণা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র ঢাকায় এলইডি বাল্ব ব্যবহার করে দৈনিক ৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত সাশ্রয় করা সম্ভব। তিনি বলেন, সিএফএল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আর তাই যত দ্রুত সম্ভব এলইডি বাতি কারখানাকে ভ্যাট অব্যাহতির আওতায় আনা উচিত। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য কয়েকটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশ ও ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা। আর এ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে নেয়া হয়েছে কয়েকটি অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবস্থা, যার মধ্যে রয়েছে সড়ক ও স্থাপনাগুলোতে এলইডি বাতি লাগানো। জানা গেছে, দেশেই পূর্ণাঙ্গ এলইডি বাতি উৎপাদন শিল্প স্থাপন করেছেন বেশকিছু উদ্যোক্তা। বিনিয়োগ করেছেন প্রচুর অর্থ। বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে আছে ভূমি ক্রয়, অবকাঠামো নির্মাণ, স্থানীয় পর্যায়ে কিছু কাঁচামালসহ এলইডি বাতি উৎপাদনের মেশিনারিজ স্থাপন, মান নিয়ন্ত্রণ, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি। অথচ সহায়ক রাজস্বনীতির অভাবে সিএফএল বাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে এলইডি লাইট।
×