ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের সঙ্গে কী চুক্তি হচ্ছে প্রকাশ করা হোক ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ৫ এপ্রিল ২০১৭

ভারতের সঙ্গে কী চুক্তি হচ্ছে প্রকাশ করা হোক ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগেই সে দেশটির সঙ্গে কি কি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হচ্ছে তা আগেই প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জনগণ এ দেশের মালিক। তাই ভারতের সঙ্গে কি কি চুক্তি হচ্ছে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে বিএনপি কোন কর্মসূচী দেবে কি না, এ বিষয়ে পরে জানানো হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণকে পাশ কাটিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রবিরোধী কোন চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক কেউ মেনে নেবে না। ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন চুক্তি হলে দেশের মানুষ মেনে নেবে না। ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকের বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ সরকার দাবি করে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বর্তমানে সর্বকালের উষ্ণতম পর্যায়ে আছে। সে ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে বাংলাদেশকে কেন ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে হবে তা বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে, ৭ এপ্রিল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি বা প্রতিরক্ষা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এতে কী থাকছে, তা স্পষ্ট নয়। সরকারেরই উচিত তা স্পষ্ট করা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিরক্ষার নামে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ৫০ কোটি ডলার বা চার হাজার কোটি টাকার ঋণচুক্তি করবে। এই টাকা দিয়ে ভারত থেকেই অস্ত্র কিনতে হবে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, ১৯৫০ সালের পর অস্ত্র আমদানিতে এক নম্বরে আছে ভারত। যে দেশ নিজেই অস্ত্র আমদানিতে এক নম্বর, সে দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশ কেন অস্ত্র কিনতে যাবে? বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাশ্রয়ী এবং আধুনিক চীনা অস্ত্র ও সরঞ্জামে সজ্জিত আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য ভারতের প্রস্তুতকৃত অধিক দামের অস্ত্র ক্রয় কতটুকু যৌক্তিক, তা নিশ্চয়ই প্রশ্নের সম্মুখীন। তিনি বলেন, এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। বাংলাদেশ কী পেল বা কী দিল, তা দেশবাসীর কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। তাই এবার প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগেই এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে তাদের অবদান আমরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। ভারত ও বাংলাদেশের বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও পারস্পরিক আস্থাশীল দেখতে চায় বিএনপি। আমরা কখনও বাংলাদেশের ভূখ-কে ভারতবিরোধী কর্মকা-ে ব্যবহার করতে দেব না। একই সঙ্গে প্রত্যাশা করি, ভারতও আমাদের অখ-তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল থাকবে। উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, আন্তর্জাতিক অথবা আঞ্চলিক সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান করাই বিএনপির ঘোষিত নীতি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
×