ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের প্রশংসায় কৈলাস সত্যার্থী

প্রকাশিত: ০৮:২০, ৪ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশের প্রশংসায় কৈলাস সত্যার্থী

শান্তিতে নোবেলজয়ী এবং শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থী লিঙ্গ অসমতা দূর করে নারী ও শিশুর উন্নয়নে পদক্ষেপের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। খবর বাসসর। তিনি বলেন, আগে একটি সাধারণ ধারণা প্রচলিত ছিল যে, এনজিওগুলো শুধু শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশুকে নিয়ে কাজ করে। কিন্তু, বর্তমানে বাংলাদেশে এই ধারণা বদলেছে। তিনি সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, কৈলাস বলেছেন, বাংলাদেশই দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে লিঙ্গ অসমতা দূরীকরণে সবচেয়ে ভাল সাফল্য প্রদর্শন করেছে। প্রেস সচিব বলেন, কৈলাস সত্যার্থী শিশু পাচার রোধে পদক্ষেপসমূহেও সন্তোষ প্রকাশ করে এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনার উল্লেখ করেন, যেখানে পাচারের শিকার মুসলিম পরিবারের সন্তান নূর মোহাম্মদ ভারতে পাচারের পর পাঁচবার হাত বদল হয়। পরে রাজকুমার নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করেন। কৈলাস সত্যার্থী প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন লেখনী ও নিবন্ধ বিশেষ করে শিশু ও পথশিশুদের নিয়ে লেখার প্রশংসা করেন। তিনি এ সময় বেসরকারী টিভি চ্যানেল-আই’র ‘স্বর্ণ কিশোরী’ অনুষ্ঠানটিরও প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে বাংলাদেশে বাধ্যতামূলক করার অগ্রপথিক ছিলেন। আমরা কেবল তার পদাঙ্কই অনুসরণ করছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা খাতের অগ্রগতি এবং ঝরেপড়া রোধসহ শতভাগ বিদ্যালয়ে গমন নিশ্চিত করতে তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার সরকারের উদ্যোগে বছরের প্রথম দিন প্রাইমারী থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের তথ্যও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী প্রাইমারী স্কুল পর্যায়ের শিক্ষক পদে নারীর জন্য কোটা রাখায় দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতকরা ৬০ ভাগই নারী শিক্ষক উল্লেখ করে ‘মায়ের হাসি’ নামক প্রকল্পের সাহায্যে মাসের শুরুতেই ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়ের মোবাইল ফোনের সাহায্যে টাকা পৌঁছে দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বিশ্বাস করে দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়নের জন্য শিক্ষাই মূল চালিকাশক্তি। প্রধানমন্ত্রী উগ্র চরমপন্থা এবং মাদকাসক্তি প্রতিরোধে তার সরকারের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। ‘ফিলিস্তিনীরা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে’ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনী জনগণের জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের হৃদয় সবসময়ই বিশেষ স্থান থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ১৩৬তম আইপিইউ সম্মেলনে যোগদানকারী ফিলিস্তিনীদের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ফিলিস্তিনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিনিধিদলের প্রধান আজম এন এম আলাহমাদ। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেনÑ সাবেক মন্ত্রী ইনসিরাম আলওয়াজির, উপদেষ্টা কায়েস কে এ খাদের এবং ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস রামাদান। সাক্ষাত শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনীদের স্বার্থে গোটা আরব বিশ্ব একসঙ্গে এগিয়ে এলে শান্তি প্রক্রিয়া আরও সহজ হতে পারে। ফিলিস্তিনী প্রতিনিধিদলের প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের একটি প্রতীক। তিনি ফিলিস্তিনী জনগণেরও নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রতিনিধিদলের প্রধান বলেন, দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময়ই ফিলিস্তিনী জনগণের প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থন দিয়েছেন। তিনি ১৯৯৭ সালে ফিলিস্তিনের প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাতের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ইয়াসির আরাফাতকে ‘চাচা’ বলে সম্বোধন করেন। ফিলিস্তিনী প্রতিনিধিদলের প্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন দেখে তারা আনন্দিত।
×