ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আনন্দ আয়োজনে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৪ এপ্রিল ২০১৭

আনন্দ আয়োজনে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হারিয়ে গেছে বাংলা চলচ্চিত্রের সেই সোনালি সময়। তাই বলে একেবারে থেমেই যায়নি পথচলা। এখনও প্রেক্ষাগৃহের আলো-আঁধারিতে বসে ছবি দেখার আনন্দ উপভোগ করেন অনেকেই। তাই আবার ফিরে আসবে বাংলা ছবির সেই সুদিনÑএমন প্রত্যাশায় উদ্্যাপিত হলো- জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে ছিল বহুমাত্রিক আয়োজন। সোমবার সকাল থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। শোভাযাত্রা বের করার পাশাপাশি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল নানা আনুষ্ঠানিকতা। বিএফডিসির পাশাপাশি দিবসটি উদ্্যাপনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পোস্টার প্রদর্শনী, আলোচনা এবং চলচ্চিত্রের গানের সুরে নাচে সজ্জিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। চৈত্রের সকালে বিএফডিসির জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে একঝাঁক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতউল্যাহ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন কমিটির সভাপতি নায়করাজ রাজ্জাক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, প্রধান তথ্য অফিসার কামরুন নাহার, অভিনয়শিল্পী হাসান ইমাম, অভিনেতা অমিত হাসান, অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতা চলচ্চিত্র জগতে যে নূতন অধ্যায়ের সূচনা করেন, তা বাঙালী জাতীয়তাবাদের চেতনাকে বেগবান করেছে। তাই জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসে বাংলাদেশের সকল মানুষ তাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে। চলচ্চিত্র দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পৌঁছবেই তার সোনালি গন্তব্যে’ শিরোনামে এক প্রবন্ধ লিখেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সেই প্রবন্ধে তিনি বলেন, চলচ্চিত্র আমাদের প্রেরণা, আমাদের জীবনের সহযাত্রী। চলচ্চিত্র মাটি ও মানুষের কথা বলে, মানুষের আজন্ম লালিত সাধ ও স্বপ্নকে সেলুলয়েডে বন্দি করে পর্দায় নানা রঙে ফুটিয়ে তুলে। সাম্প্রদায়িকতা, কুসংস্কার ও বৈষম্য থেকে মুক্তির পথ দেখাতে চলচ্চিত্রের ভূমিকা অপরিসীম। সোমবার মন্ত্রিপরিষদের সভায় জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালার খসড়া অনুমোদন হয়েছে বলে তিনি জানান। তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, চলচ্চিত্র জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনের সঙ্গে। চলচ্চিত্র আমাদের অতীতকে স্মরণ করতে, বর্তমানকে আনন্দময় করতে এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতে শেখায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র যে পুনর্জাগরণের সূচনা হয়েছে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা সেই ধারা আরও বেগবান হবে। অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী চলচ্চিত্র দিবসের স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন। উদ্বোধন পর্ব শেষে বের হয় নানা অনুষঙ্গে সজ্জিত শোভাযাত্রা। দেশীয় বাদ্যের তালে তালে বিএফডিসি থেকে যাত্রা শুরু করে সোনারগাঁও হোটেল হয়ে আবার বিএফডিসিতে গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি, চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতি ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘আমাদের চলচ্চিত্রকে ভালবাসুন-প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখুন’। জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ঘিরে নানা সাজে সাজানো হয়েছে এফডিসিকে। এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব প্রেক্ষাগৃহে ছিল চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ফিল্ম আর্কাইভের উদ্যোগে বাংলাদেশের বিখ্যাত সিনেমার পোস্টার-ব্যানার দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো এফডিসি চত্বর। প্রবেশদ্বার থেকে এফডিসির ভেতর সাজানো হয় সিনেমার পোস্টার দিয়ে। এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছিল চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রের প্রদর্শনী। ৮নং ফ্লোরে ছিল সেমিনার ও টকশো। ডিজিটাল কমপ্লেক্সের সামনে মূল মঞ্চে ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গানের সঙ্গে পারফরমেন্সে অংশ নেন প্রবীণ-নবীন শিল্পীরা। চলচ্চিত্র দিবসে সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয় শিল্পকলা একাডেমির আয়োজন। বিকেলে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেনÑ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ্ কবরী। অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। শিল্পকলায় বৈশাখী ফ্যাশন ফেস্টিভ্যাল ॥ আসছে নতুন বাংলা বছর ১৪২৪। নববর্ষ উদ্্যাপনের সেই রঙে রঙিন এখন রাজধানী। সেই সুবাদে সোমবার শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা প্লাজায় শুরু হলোÑ ছয় দিনের বৈশাখী ফ্যাশন ফেস্টিভ্যাল। এতে দেশজ ফ্যাশন শাখায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফ্যাশন ভুবনের দুই কৃতী পুরুষ ডিজাইনার চন্দ্রশেখর সাহা এবং নিপুণের স্বত্বাধিকারী আশরাফুর রহমান ফারুককে এ বছরের ‘শাহাদত চৌধুরী আজীবন সম্মাননা’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। দেশজ পোশাকের প্রসার ও বৈশাখ উপলক্ষে এ উৎসবের আয়োজন করেছে ফ্যাশন এন্ট্রিপ্রেনারস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এফইএবি)। সোমবার বিকেলে উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বৈশাখী ফ্যাশন উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
×