ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পালংয়ের পাতায় হার্টের টিস্যু

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৪ এপ্রিল ২০১৭

পালংয়ের পাতায় হার্টের টিস্যু

শাক রান্না করে খেলে তা হার্টের জন্য ভাল। বিজ্ঞানীরা এ শাকের মধ্যে তার থেকেও বড় উপকারী ভূমিকার সন্ধান পেয়েছেন। থ্রি-ডি প্রিন্টিংয়ের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এসে যাওয়ায় বায়োইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু মানবশরীরের খুব সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম টিস্যু তৈরির ক্ষেত্রে থ্রি-ডি প্রিন্টিং খুব একটা কার্যকরী নয়। হার্টে যেসব টিস্যু ছড়িয়ে রয়েছে, সেগুলো কোন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা এখনও পর্যন্ত প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়। তবে টিস্যু প্রতিস্থাপনের একটি বিকল্প উপায় খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অরচেস্টার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গবেষণাগারে পালং শাকের পাতা নিয়ে ‘অদ্ভুত’ এক পরীক্ষা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। রাসায়নিকের মাধ্যমে পালং শাকের পাতা থেকে কোষগুলোকে বাদ দেন তারা। রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ছয়-সাত দিন বাদেই ওই পাতা সমস্ত ক্লোরোফিল হারিয়ে একেবারে স্বচ্ছ হয়ে যায়। পড়ে থাকে পাতার মধ্যকার শিরাবিন্যাস। এরপর পাতার ওই সংবহনতন্ত্রের মধ্যে কখনও রক্ত, কখনওবা ফ্লুইডজাতীয় পদার্থ ঢুকিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন মানবশরীরের সংবহনতন্ত্রের মতোই একই ভাবে প্রবাহিত হচ্ছে। হার্টের টিস্যুর ক্ষেত্রে একই প্রক্রিয়া প্রযোজ্য। তাই বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক ধারণা, হার্টের টিস্যু প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে পালং শাকের জালিকা ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সবকিছুই এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে বলে জানিয়েছেন অরচেস্টার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রফেসর গ্লেন গডেট। শুধুই হার্টের টিস্যু প্রতিস্থাপনের জন্য নয়, গাছের এ সংবহনতন্ত্র বোন টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং, গভীর চোটে নষ্ট হয়ে যাওয়া টিস্যু প্রতিস্থাপন করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। ভারতের বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট রবিন চক্রবর্তী বলেছেন, হার্টের টিস্যু সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে মানুষটি মারা গেছেন। কিন্তু হার্ট এ্যাটাক বা ওই সংক্রান্ত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে হার্ট টিস্যু নষ্ট হলে ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন দিয়ে সারিয়ে তোলা সম্ভব। কিন্তু সেটা কতটা পরিমাণ সারবে তা নির্ভর করে রোগীর ওপর। যদি ওই রোগী ধূমপায়ী বা অনিয়মিত লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত না হন, তাহলে খুব দ্রুত ওই টিস্যুগুলি সেরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সমস্যা হতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী, যদি তাদের এ গবেষণা সফল হয়, তাহলে ভবিষ্যতে টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আমূল পরিবর্তন আসতে পারে। এক্সপ্রেস ইউকে
×