ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঋণ আমানতের সুদহার বেশি ১৫ ব্যাংকের

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৩ এপ্রিল ২০১৭

ঋণ আমানতের সুদহার  বেশি ১৫ ব্যাংকের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঋণ ও আমানতের সুদ ব্যবধানের (স্প্রেড) সীমা লঙ্ঘন করেছে দেশী-বিদেশী ১৫টি ব্যাংক। আর এই সীমা লঙ্ঘনে সবার শীর্ষে রয়েছে বেসরকারী খাতের ব্র্যাক ব্যাংক। এর পরেই রয়েছে বিদেশী খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও বেসরকারী খাতের ডাচ বাংলা ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মে কোন ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদ হারের ব্যবধান (স্প্রেড) ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। জানা গেছে, সুলভ বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঋণের সুদহার এক অঙ্কের ঘরে নামানোর দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি অনুযায়ী, ঋণের সুদহার কমাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওপর বিভিন্ন সময়ে চাপ সৃষ্টি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে কয়েক মাস আগে ‘স্প্রেডকে’ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ক্যামেলস রেটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে যে সব ব্যাংকের স্প্রেড সীমা অতিক্রম করবে তাদের ক্যামেলস রেটিং নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নির্ধারিত সীমার বাইরে থাকা ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে স্প্রেড কমানোর দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৪ ব্যাংককে ৩০ সেপ্টেম্বর, ৬ ব্যাংককে ৩০ অক্টোবর, এক ব্যাংককে ৩০ নবেম্বর ও দুটি ব্যাংককে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পার হলেও এখনও ১৫টি ব্যাংকের স্প্রেড বেশি মাত্রায় রয়েছে। তবে সার্বিকভাবে আমানতের সুদের পাশাপাশি ঋণের সুদহার কমতে থাকায় ব্যাংকিং খাতে ফেব্রুয়ারি শেষে গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের মাস জানুয়ারিতে যা ছিল ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। এ মাসে ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। যা জানুয়ারি মাসে ছিল ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি মাসে আমানতের গড় সুদ দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। যা জানুয়ারি মাসে ছিল ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ । বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে ব্র্যাক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, সিটি ব্যাংক এনএ, উরি ব্যাংক ও এইচএসবিসির স্প্রেড নির্ধারিত সীমার বাইরে রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের। স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের স্প্রেড ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এছাড়া আইএফআইসি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৪৪, উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ৪৭, এবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৫ দশমিক ২, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ৩৫, এনআরবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ২৩, মধুমতি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, উরি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৭৩, এইচএসবিসির ৬ দশমিক ২, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ৬ দশমিক ১১ ও সিটি ব্যাংক এনএর ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে। এদিকে, ফেব্রুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি স্প্রেড রয়েছে বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলোর। আর সবচেয়ে কম স্প্রেড রয়েছে বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর। এ মাসে বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়া এ সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ, বেসরকারী খাতের ব্যাংকগুলোর ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ ও বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে।
×