ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিফাইনালে লঙ্কানদের কাছে ৮ উইকেটে হেরে বিদায় বাংলাদেশের, ফার্নান্দোর হ্যাটট্রিক

ইমার্জিং কাপেও শ্রীলঙ্কার কাছে হার

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২ এপ্রিল ২০১৭

ইমার্জিং কাপেও শ্রীলঙ্কার কাছে হার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ইমার্জিং টিমস কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সেমিফাইনাল ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৮ উইকেটে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়। আসিথা ফার্নান্দোর হ্যাটট্রিকে কুপোকাত হয় মুমিনুল হকের দল। ম্যাচটি জিতে শ্রীলঙ্কা ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নেয়। দিনের আরেক সেমিফাইনালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২৩ রানে জিতে পাকিস্তান। আর তাতে করে সোমবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। অনুর্ধ-২৩ দলের ক্রিকেটাররা এ টুর্নামেন্টে খেলছে। চারজন জাতীয় দলের ক্রিকেটারও একেকটি দলে খেলতে পারবে। বাংলাদেশের তাই খেলছে। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়। শুরুতেই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচের সপ্তম ওভারের প্রথম তিন বলে ফার্নান্দো যে টানা তিন উইকেট শিকার করে নেন, সেখানেই বাংলাদেশ বিপাকে পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ৪১, নাসির হোসেনের ৩৮, ওপেনার সাইফ হাসানের ৩২ রানে ৪৯.৩ ওভারে ১৭৯ রান করতেই অলআউট হয়ে যায়। ফার্নান্দো হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট তুলে নেন। জবাবে ওপেনার সাদিরা সামারাভিক্রমার অপরাজিত ৮৮ ও চারিথ আসালঙ্কার অপরাজিত ৮৩ রান করে ম্যাচ জিতিয়ে দেন। এরসঙ্গে এ দুইজনের তৃতীয় উইকেটে গড়া ১৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সহজ জয়ই পায় শ্রীলঙ্কা। ৩৮.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান করে জিতে শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের বিদায় ঘটে যায়। ব্যাট করতে নেমে ভালই খেলছিলেন দুই ওপেনার সাইফ ও আফিফ হোসেন। ২০ রান পর্যন্ত দুইজন এগিয়েও যান। কিন্তু এরপরই সব ওলট পালট হয়ে যায়। ফার্নান্দো বল হাতে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের ছন্নছাড়া করে তোলেন। শুরুটা হয় আফিফকে দিয়ে। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ফার্নান্দোর সোজা বলটি লাইন মিস করেন আফিফ। বোল্ড হয়ে যান। পরের বলটিতে কাট করতে যান মুমিনুল হক। উইকেটরক্ষক সামারাবিক্রমার কাছে ক্যাচ তুলে দেন মুমিনুল। এমন মুহূর্তে যে করে হোক বোলারকে আর উইকেট না দেয়াই হচ্ছে মুখ্য কাজ। নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হলে তো কথাই নেই। কিন্তু ফার্নান্দোর করা সোজা বলটি বুঝতেই পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। বোল্ড হয়ে গেলেন। তাতে করে ১৯ বছর বয়সী পেসার ফার্নান্দোরও হ্যাটট্রিক হয়ে গেল। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন মাত্র ১১টি। লিস্ট এ ম্যাচ খেলেছেন ৪টি। এরমধ্যে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া অনুর্ধ-২৩ দলের বিপক্ষে খেললেন প্রথম। তাতেই হ্যাটট্রিক করে বসলেন ফার্নান্দো। তার গতির সামনে পড়ে বাংলাদেশও বিপাকে পড়ে গেল। এরপর পঞ্চম উইকেটে গিয়ে সাইফ ও নাসির মিলে ৩১ রানের জুটি ও অষ্টম উইকেটে গিয়ে সাইফুদ্দিন ও ২৩ রান করে অসুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়া আবুল হাসান রাজু মিলে যে ৫৬ রানের জুটি গড়েছেন, এ দুই জুটিই দলকে কিছুটা এগিয়ে নিয়ে গেছে। কিন্তু যে রান হয়েছে, তা জয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতেই তা সবারই বোঝা হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত হয়ও তাই। সহজেই জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের দেয়া ১৮০ রানের জবাবে খেলতে নেমে শুরুতে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কাও। মাত্র ৬ রান তুলতেই রন চন্দ্রগুপ্তকে এলবিডাবলিউ করেন সাইফুদ্দিন। ১৫ রানের মাথায় শিহান জয়সুরিয়াকেও আউট করা যায়। কিন্তু এরপর আর কোন উইকেটই তুলে নেয়া যায়নি। তৃতীয় উইকেট থেকে ম্যাচ নিজেদের কব্জায় করে নেন দুই ব্যাটসম্যান সাদিরা সামারাবিক্রমা-চারিথ আশালঙ্কা। এই দুই ব্যাটসম্যান বাংলাদেশ বোলারদের ওপর চড়ে বসেন। এমনই অবস্থা হয় অপরাজিত ১৬৫ রানের জুটিও গড়েন তারা। শেষ পর্যন্ত টিকেও থাকেন তারা। দলকে জিতিয়ে ফাইনালে তুলে মাঠ ছাড়েন তারা। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে দারুণ খেলে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের শুরুটা জয় দিয়েই করেছিল বাংলাদেশ। হংকংকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দেয়ার পর নেপালের বিপক্ষেও ৮৩ রানের বড় জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচটি টাই হয়। আর তাতে করে গ্রুপ রানার্সআপ হয়। অপরাজিত থাকে। গ্রুপ রানার্সআপ হওয়াতে আরেক গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা হয় বাংলাদেশের। তাতে করে বাংলাদেশ টিকতেই পারল না। শ্রীলঙ্কা জিতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলা নিশ্চিত করল। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ।
×