ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তবে ফেব্রুয়ারির তুলনায় দুর্ঘটনা কমেছে

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১২ জন নিহত

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২ এপ্রিল ২০১৭

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১২ জন নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক দুর্ঘটনায় গত মার্চ মাসে গড়ে প্রতিদিন ১২ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হয়েছেন। ওই সময়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে দৈনিক গড়ে ১১টি। ১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন মহাসড়ক, জাতীয় সড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। শনিবার বেসরকারী সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি তাদের নিয়মিত মাসিক পরিসংখ্যান ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরেছে। ২০টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে শনিবার সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে ৩৩০টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে ৪৯ নারী ও ৫৪ শিশুসহ কমপক্ষে ৩৬২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আর আহত হয়েছেন ৮৬৫ জন। ফেব্রুয়ারিতে সারা দেশে ৩৭২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬ নারী ও ৫৮ শিশুসহ মোট ৪২৭ জন নিহত এবং এক হাজার ৯৪ জন আহত হয়েছেন। ওই সময়ে গড়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৩টি; যেখানে নিহত ও আহতের দৈনিক গড় সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৫ ও ৪৬। দুর্ঘটনা ও হতাহতের এই সংখ্যা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় সামান্য কম বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে সড়ক দুর্ঘটনার হার ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে নিহত ও আহতের হার কমেছে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ২৩ ও ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। পর্যবেক্ষণে পাওয়া তথ্য মতে, গত মাসে প্রথম দফায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় টানা তিন দিন ও দ্বিতীয় দফায় খুলনা বিভাগসহ সারা দেশে আরও তিনদিন সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা পূর্ববর্তী মাসের চেয়ে কমেছে। তা সত্ত্বেও মার্চে একাধিক বড় দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ও ময়মনসিংহের দুটি দুর্ঘটনায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন; যাদের অধিকাংশই ছিলেন দিনমজুর ও হতদরিদ্র। জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, গত দুই মাসে সংঘটিত অধিকাংশ প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার জন্য চালকদের খামখেয়ালিপনা দায়ী। আইন ভঙ্গ করে পণ্যবাহী ট্রাকে ও বাসের ছাদে যাত্রী বহনসহ তাদের অসতর্কতার কারণে বহু মানুষের করুণ মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নেমে না আসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলোÑ বিদ্যমান ট্রাফিক আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘন করে চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা বৃদ্ধি, ভুয়া লাইসেন্সধারী অদক্ষ চালক নিয়োগ, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্সবিহীন বা জাল লাইসেন্সধারী চালকদের আটকের ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, একটানা দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানো, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনে চালকদের কথা বলা, আইন অমান্য করে অতিরিক্ত যাত্রী-পণ্যবোঝাই ও ওভারটেকিং করা, মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে তিন চাকা বিশিষ্ট ও স্থানীয়ভাবে তৈরি যন্ত্রচালিত ক্ষুদ্র যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, পল্লী জনপদ ও আঞ্চলিক সড়কে অদক্ষ চালকদের মোটরসাইকেলে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহনের প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি, পথচারী ও ছোট যানবাহনের চালকদের সচেতনতার অভাব এবং দূরপাল্লার সড়কগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অনেক বাঁক ও অনেকস্থানে সড়কের বেহাল অবস্থা।
×