ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন;###;বিভিন্ন দেশের ৪৫ জন স্পীকার, ৩৭ জন ডেপুটি স্পীকার, পার্লামেন্ট সদস্যসহ দেড় সহস্রাধিক প্রতিনিধি এতে অংশ নেবেন

জঙ্গী দমনে প্রাধান্য ॥ আইপিইউ সম্মেলনের পর্দা উঠছে আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১ এপ্রিল ২০১৭

জঙ্গী দমনে প্রাধান্য ॥ আইপিইউ সম্মেলনের পর্দা উঠছে আজ

সংসদ রিপোর্টার ॥ দেশের ইতিহাসে সব থেকে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পর্দা উঠছে আজ। সকল শঙ্কা কাটিয়ে ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংস্থা ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম সম্মেলন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া জঙ্গীবাদ দমনে সরকারগুলোর পাশাপাশি পার্লামেন্টের ভূমিকা কি হওয়া উচিত; তা ঠিক করতে আজ থেকে আলোচনায় বসবেন সারাবিশ্ব থেকে আসা পার্লামেন্টের জনপ্রতিনিধিরা। এই সম্মেলন বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরতে বাংলাদেশের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করবে। ‘সমাজের বৈষম্য নিরসনের মাধ্যমে সবার মর্যাদা ও মঙ্গল সাধন’ সেøাগান নিয়ে বর্ণাঢ্য ও বর্ণিল এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। আগামীকাল থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) কাউন্সিল অধিবেশন চলবে। সম্মেলনজুড়ে বৈশ্বিক সঙ্কট জঙ্গী-সন্ত্রাসবাদের বিস্তার প্রতিরোধের কৌশল অনুসন্ধান করা হবে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে সম্মেলন সমাপ্তির মাধ্যমে সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশের সক্ষমতা আরেকবার প্রমাণ করতে চায় আয়োজকরা। আয়োজক দেশ হিসেবে ১৩৬তম সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার। পাঁচ দিনের এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের ৪৫ স্পীকার, ৩৭ ডেপুটি স্পীকার, পার্লামেন্ট সদস্যসহ ১৫ শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এখন পর্যন্ত ১৬৪টি ডেলিগেশন এবং ১৩২টি দেশের এক হাজার ৩৪৮ জনপ্রতিনিধি শুক্রবার পর্যন্ত ঢাকা এসে পৌঁছেছেন। প্রতিনিধির মধ্যে ২০৯ নারী সংসদ সদস্যও রয়েছেন। তবে ঢাকার এ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত দেশ পাকিস্তান। কেন যোগ দিচ্ছে না, সে সম্পর্কে কোন ব্যাখ্যাও পাঠায়নি ইসলামাবাদ। উগ্রবাদের বিস্তার রোধে সরকারের পাশাপাশি সব দেশের পার্লামেন্ট কিভাবে কাজ করতে পারে তা খুঁজতে কৌশল প্রণয়ন করতে পাঁচ দিনব্যাপী একাধিক সেমিনারে বসবে আইপিইউভুক্ত দেশ। শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আইপিইউর ১৩৬ সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন আয়োজক বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বক্তৃতা করেন আইপিইউর বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী ও আইপিইউ সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুংগং। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজসহ হুইপবৃৃন্দ ও সংসদ সদস্যরা দর্শক সারিতে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এবারের আইপিইউ সম্মেলন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় একটি বড় অর্জন। গণতন্ত্রকে সুসংহতকরণ, সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতিনীতি চর্চার ক্ষেত্রে আইপিইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি এই আয়োজনে সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জানান, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নেবে। প্রতিনিধি দলে সরকারী-বিরোধী দল, স্বতন্ত্র ও নারী সংসদ সদস্যরা রয়েছেন। দেশে জঙ্গী আস্তানায় অভিযান এবং সন্ত্রাসী হামলার কারণে আইপিইউ সম্মেলনের আয়োজনে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে কি-না জানতে চাইলে স্পীকার বলেন, এত বড় একটি সম্মেলন আয়োজন করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সমগ্র বিশ্বে সন্ত্রাসী কর্মকা- দেখা যাচ্ছে। সেখানে আমরা সুষ্ঠুভাবে এটা করতে পারছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। তাদের ধন্যবাদ। এখন পর্যন্ত কোথাও কোন সমস্যা হয়নি। এই সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণ হলো বাংলাদেশের সক্ষমতা আছে। আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ আজ বৈশ্বিক সমস্যা। শুধু সামরিক কৌশল দিয়ে এর মোকাবেলা করা যাবে না। এর মূল কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সরকারের গৃহীত কৌশলের পাশাপাশি পার্লামেন্ট মেম্বাররা কিভাবে এ নিয়ে কাজ করতে পারে সেই কৌশল ঠিক করতে হবে। তিনি বলেন, সংসদ সরকারের কোন সম্প্রসারণ নয়। সরকারের বাইরে সংসদের কাজ আছে। সে বিষয়গুলো নিয়ে আইপিইউ সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরা এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের মন্তব্যের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সৃষ্ট নেতিবাচক ধারণা দূর করার একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। আইপিইউ সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুংগং বলেন, অসমতা ও বিচারহীনতাই বিশ্বব্যাপী সহিংস উগ্রবাদ বাড়ার অন্যতম কারণ। আইপিইউ বিষয়গুলো নিয়ে ঢাকার সম্মেলনে আলোচনা করবে। তিনি বলেন, পৃথিবীতে এখনও রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য রয়েছে। এটি কমানোর বিষয়ে বিতর্কের সময় বিস্তারিত আলোচনা হবে। এবারের সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী বৈষম্য নিরসনে কথা হবে, আলোচনা হবে। নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সারথী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। এছাড়া সম্মেলনের প্রথম দিন আজ শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নারী এমপিদের সংগঠন ফোরাম অব উইমেন পার্লামেন্টারিয়ান্সের সদস্যরা প্রথম বৈঠকে মিলিন হবেন। প্রতিদিন বিকেলে সম্মেলন কেন্দ্রে স্থাপিত মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের ব্রিফিং দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যায় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর একটি স্মারক ডাক টিকেট অবমুক্ত করবেন এবং আইপিইউর ওয়েবসাইট টেলিভিশনের উদ্বোধন করবেন। সম্মেলন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাঁচটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে যোগ দিতে আসা অতিথিরা নগরীর ১৫টি হোটেলে থাকবেন। দেশে এবং বিদেশে সম্মেলনের সংবাদ পাঠাতে পারে, এ জন্য বিসিসিআইতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হাইস্পীড ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ এবং প্রয়োজনীয়সংখ্যক লোকবল সুবিধাসহ অত্যাধুনিক মিডিয়া সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। গ্রীন আইপিইউ এ্যাসেম্বলি ॥ আইপিইউর ১৩৮ বছরের ইতিহাসে এটিই প্রথম গ্রীন সম্মেলন হতে যাচ্ছে। যাতে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। আইপিইউর প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী জানান, এবারই প্রথম বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সংসদীয় ফোরাম ‘গ্রীন এ্যাসেম্বলি’র আয়োজন করেছে। তিনি বলেন, ৩ কিংবা ৪ এপ্রিল কার্বন ফুটপ্রিন্ট হিসাব করে সে অনুযায়ী ‘কার্বন নিউট্রাল’ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্মেলনে যত প্রতিনিধি আসছেন, তারা প্লেনে আসছেন, এখানে অবস্থান করবেন। এসবের কারণে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে। এটার একটা ক্যালকুলেশন করে তা নিউট্রালাইজ করার পদক্ষেপ নেয়া হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য বিষয়টি গুরুত্বপূর্র্ণ। সম্মেলনে কাগজের ব্যবহার কমাতে ‘আইপিইউ ১৩৬’ নামে একটি এ্যাপও বানানো হয়েছে বলে জানান বিশ্বের বৃহৎ এই সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সময় ভিআইপি নয় ॥ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ৩ ও ৪ এপ্রিল সম্মেলনে আগত ‘ভিআইপি’দের যাতায়াতের সময়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, ওই দুদিন সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত কোন ভিআইপি মুভমেন্ট হবে না। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের কোন সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে এই ব্যবস্থা। তিনি বলেন, সম্মেলনে আইপিইউ টেলিভিশনের উদ্বোধন করা হবে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই আয়োজনে কিছু লিগ্যাসি রেখে যেতে চাই। এবারই প্রথম আইপিইউ টেলিভিশন চালু করা হবে। আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধনের পর সবাই ইন্টারনেটে এটা দেখতে পারবে। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস নিয়ে বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরিতে এবারের সম্মেলনে কোন উদ্যোগ নেয়া হবে কি-না জানতে চাইলে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এটা নির্ভর করছে বাংলাদেশের সংসদ সদস্যদের ওপর। তারা বিভিন্ন আলোচনায় এবং বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্ট সদস্যের সঙ্গে আলোচনার সময় এ ব্যাপারে জনমত তৈরি করতে পারেন। নির্বাহী কমিটির বৈঠক ॥ আইপিইউ নির্বাহী কমিটির বৈঠক শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে নির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সমস্যা ও সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে সম্মেলনে প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে। আলোচনাসাপেক্ষে সেই প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হবে। সর্বশেষ মহড়া ॥ শুক্রবার সন্ধ্যায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোকসজ্জা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার চূড়ান্ত মহড়া চলেছে। রাজধানীতে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা করা হয়েছে দক্ষিণ প্লাজায়। ইতোমধ্যে সংসদের মূল ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। সংসদ ভবনের ভেতরের সড়কগুলোতে রং-বেরঙের বাতি শোভিত গাছ বসানো হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সম্মেলনজুড়ে বাঙালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। উদ্বোধনী পর্বে এ বিষয়ে বিশেষ ভিডিও প্রদর্শনী থাকবে। দেখানো হবে বৈশাখী মেলা। সেখানে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামের উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রদর্শন করা হবে। দেখানো হবে একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যার ভয়াবহ চিত্র। এ সময় বর্তমান সরকারের উন্নয়নচিত্রও তুলে ধরা হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য শিল্পীরা গান গাইবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে আগত অতিথিদের ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূলমঞ্চ করা হয়েছে নৌকার ওপর। মঞ্চের দিকে তাকালে মনে হবে পুরো সংসদ ভবনই নৌকায় ভাসছে। আর সিঁড়িগুলো ঢেউয়ের মতো। সম্মেলনস্থলে থাকবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি। বিমানবন্দর থেকে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় বর্ণাঢ্য ব্যানার, ফেস্টুন ও পতাকায় শোভিত করা হয়েছে। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী ॥ সম্মেলন সামনে রেখে পুরো রাজধানীতে নিñিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজারেরও বেশি সদস্য এই নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে। সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি সম্মেলন চলাকালে সংসদ ভবনে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিমানবন্দরেও দর্শনার্থীর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এছাড়া সম্মেলন চলাকালে রাজধানীর কয়েকটি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আইপিইউ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিমানবন্দরে দর্শনার্থী কিংবা যাত্রীর স্বজনকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে আগামী পাঁচ দিন শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে বিদেশগামী যাত্রীকে বিমানবন্দরে পৌঁছার জন্য বিলম্ব এড়াতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে রওনা হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সম্মেলন চলাকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন কয়েকটি সড়কে যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে, আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠান থাকায় মানিক মিয়া এ্যাভিনিউর পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব প্রান্তের সড়ক বন্ধ থাকবে। এই সড়ক ব্যবহারকারী যাত্রীদের শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁক হয়ে র‌্যাব-২-এর কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সম্মেলন ক্রসিং থেকে গণভবন স্কুল হয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। স্থানীয় বাসিন্দা ও সরকারী-বেসরকারী দফতরে আসা গাড়ি ওই সড়কে প্রবেশ করতে পারবে। সম্মেলন চলাকালে জাহাঙ্গীর গেট থেকে আসা গাড়ি আগারগাঁও লিংক রোড ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। এ সড়ক ব্যবহারকারীদের আগারগাঁও লাইট ক্রসিং ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
×