শংকর কুমার দে ॥ ‘আমি চলে গেছি আল্লাহর রাস্তায়, মাকে বইলেন আমাকে যেন ক্ষমা করে দেয়।’ এটা আত্মঘাতী এক জঙ্গীর ফেসবুক মেসেঞ্জার বার্তা। বার্তাটি পাঠিয়েছে জঙ্গী ফয়সাল আহমেদ সানিল। সানিল হচ্ছে ঢাকার দোহার থেকে র্যাব-১০ এর হাতে আটক চার জঙ্গীর একজন। আটক আরেক জঙ্গী মিজবাহর কাছে সানিল আল্লাহর রাস্তায় আত্মঘাতী হওয়ার এই বার্তাটি পাঠিয়ে মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। সানিলের মা ঘটনাটি জেনে কেরানীগঞ্জ থানায় জিডি করে ছেলেকে উদ্ধারের আকুতি জানান। মঙ্গলবার রাতে ঢাকার দোহার থেকে সারোয়ার-তামিম গ্রুপের চার জঙ্গীকে গ্রেফতার করে র্যাব-১০। দোহার থেকে আটক চার জঙ্গী হলো মিজবাহ, মাহফুজ, তাইবুর রহমান ও ফয়সাল আহমেদ সানিল। তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমা-ের আবেদন জানানো হয়েছে।
র্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে এরা জানিয়েছে, তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার র্যাব-১০ দোহার থেকে প্রথমে মিজবাহ (১৯) ও তার ভাই মাহফুজকে (১৬) গ্রেফতার করে। পরে তাইবুরকে (১৮) গ্রেফতার করে র্যাবের টিম। মিজবাহ, মাহফুজ ও তাইবুরের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হিজরতে থাকা ফয়সাল আহমেদ সানিলকে দোহারের জজপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১০ এর এক কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সানিল বলেছে, ২০১৫ সালে মাদ্রাসায় লেখাপড়া শেষ করে রানাকান্দা ইস্পাহানি কলেজে আবারও ভর্তি হয়। ২০১৬ সালের দিকে মিজবাহর কাছ থেকে সে উগ্রবাদ বিষয়ে দীক্ষা নেয়। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে সে চট্টগ্রামের মহসিনের কাছে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়। গত ২৬ মার্চ সে হিজরতে যায়। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় তার মা জিডি করেন গত ২৭ মার্চ। মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নব্য জেএমবির তামিম-সারোয়ার গ্রুপের ফয়সাল আহমেদ সানিল নামের জঙ্গী হিজরতে যায়। এই ঘটনা আঁচ করতে পেরে তার মা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর তাকে গ্রেফতারে কাজ শুরু করে র্যাব। কোন নাশকতার আগেই সে ধরা পড়ে র্যাবের হাতে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে র্যাব। মিলছে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের আলামতও।