ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ওয়ানডে

সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে কলম্বোয় মাশরাফিরা

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৩০ মার্চ ২০১৭

সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে কলম্বোয় মাশরাফিরা

মিথুন আশরাফ ॥ যেখানে সুখস্মৃতি মিলেছে, সেখানেই আবারও আরেকটি সুখস্মৃতি মিলতে চলেছে। সেই স্মৃতি মধুর করার অপেক্ষাতেই এখন বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে গল স্টেডিয়ামে হেরে কলম্বোয় এসে জিতেছে বাংলাদেশ। সিরিজ ১-১ ড্র হয়েছে। এবার ডাম্বুলায় হওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দুটি ম্যাচের একটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। আরেকটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। তার মানে কলম্বোয় হতে যাওয়া তৃতীয় ওয়ানডেতে যদি হারেও বাংলাদেশ, তাহলেও সিরিজ হারবে না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ না হারার সুখস্মৃতি মিলতে চলেছে। বলতে গেলে মিলে গেছে। আর যদি কোনভাবে শনিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে জিতে বাংলাদেশ, তাহলে শ্রীলঙ্কাকে ওয়ানডে সিরিজে হারানোর মধুর স্মৃতি মিলে যাবে। সেই স্মৃতি পেতে এখন ডাম্বুলা থেকে কলম্বোয় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। আজ তৃতীয় ওয়ানডের জন্য প্রস্তুতি নেয়াও শুরু হয়ে যাবে। চার বছর আগে ২০১৩ সালে ঠিক একই পরিস্থিতিতে পড়েছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার মাটিতে হওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশ হারে। দ্বিতীয়টি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তৃতীয়টিতে গিয়ে বাংলাদেশ জিতে। সিরিজ শেষ পর্যন্ত ১-১ ড্র হয়। এবার একই পরিস্থিতিতে পড়েছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজে হারানোর কিছু নেই। সিরিজ জয়ের লক্ষ্য এখনও বাংলাদেশের আছে। তৃতীয় ওয়ানডে জিতলেই তা পূরণ হয়ে যাবে। তা না হলেও টেস্ট সিরিজের মতো ওয়ানডে সিরিজেও হারছে না বাংলাদেশ, তা নিশ্চিত হয়ে গেছে। এখন যদি তৃতীয় ওয়ানডেও কোনভাবে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়, তাহলেও মধুর স্মৃতি বাংলাদেশের ভা-ারে যুক্ত হবে। তখন ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেবে বাংলাদেশ। সিরিজ জেতার লক্ষ্যের কথা দেশের হয়ে পঞ্চম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করা তাসকিন জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি (দ্বিতীয় ওয়ানডে) হয়নি। আসল লক্ষ্য সিরিজ জেতা।’ বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি২০ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা তো আগেই সিরিজ জয়ের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজটি জেতা সম্ভব। আমরা যে কয়েকটা সিরিজ আগে জিতেছি বেশিরভাগ জায়গায় ভাল করেছি। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে। যে সব ম্যাচে হেরেছি তিন বিভাগেই খারাপ করেছি। আমাদের যে টিম সব জায়গায় ভাল করতে পারলে সিরিজ জেতা অবশ্যই সম্ভব।’ প্রথম ওয়ানডেতে সব বিভাগে ভাল করেই জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিংটা খারাপ হয়েছে। তবে প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেয়া ৩১২ রানের টার্গেট অতিক্রম করতেও পারত বাংলাদেশ। তা হয়নি। বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এখন তাই তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে নিয়েই সবার ভাবনা। যেভাবে হোক যেন জিতে সিরিজ জয় করা যায়। সিরিজ জিতলেই প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে শক্তিশালী স্বাগতিক দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকেও প্রথমবারের মতো সিরিজে হারাবে। সেই মধুর স্মৃতি নিজেদের করে নেবে বাংলাদেশ। এরআগে বিদেশের মাটিতে মাত্র চারটি ওয়ানডে সিরিজ জিততে পেরেছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে কেনিয়ার মাটিতে কেনিয়ার বিপক্ষে (ব্যবধান ৪-০), ২০০৭ সালে জিম্বাবুইয়ের মাটিতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে (ব্যবধান ৩-১), ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে (ব্যবধান ৩-০) ও একই বছর আবার জিম্বাবুইয়ের মাটিতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে (ব্যবধান ৪-১) সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুইয়ে টেস্ট খেলুড়ে দল। কিন্তু যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুইয়েকে হারিয়েছে বাংলাদেশ, তখন দুই দলই তাদের শক্তি হারিয়ে পঙ্গু অবস্থায় ছিল। এবার শ্রীলঙ্কাকে সিরিজে হারাতে পারলে সেটি হবে বিদেশের মাটিতে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা অর্জন। পারবে বাংলাদেশ সেই অর্জন আদায় করতে? এরজন্য জিততে হবে। জিতলেই শ্রীলঙ্কাকে সিরিজে হারানোর মধুর স্মৃতি যুক্ত হবে। ডাম্বুলায় দুই ওয়ানডের একটিতে ৯০ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়টি পরিত্যক্ত হয়েছে। এখন তৃতীয় ওয়ানডেতে জিতে সেই স্মৃতি পেতে কলম্বোয় বাংলাদেশ দল।
×