ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্রোহী সুরে মুখর উদীচীর সত্যেন সেন উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৩০ মার্চ ২০১৭

বিদ্রোহী সুরে মুখর উদীচীর সত্যেন সেন উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘আমার লড়াই আমার গান/উঠবে জেগে সর্বপ্রাণ’ প্রতিপাদ্যে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে চলছে অষ্টম সত্যেন সেন গণসঙ্গীত উৎসব ও প্রতিযোগিতা। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত এ উৎসবের বুধবার ছিল দ্বিতীয় দিন। এদিন বিকেলে খ্যাতনামা শিল্পীদের কণ্ঠে গণসঙ্গীত পরিবেশনার পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে সনদপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠান শুরু হয় গণসঙ্গীতবিষয়ক সেমিনার দিয়ে। এতে ‘সুর-অসুরের দ্বন্দ্ব ও গণসঙ্গীত’ শিরোণামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক দীপঙ্কর গৌতম। প্রবন্ধে দীপঙ্কর গৌতম বলেন, গণ’র গান, নিপীড়িত গণমানুষের শোষণ মুক্তির গানই এক কথায় গণসঙ্গীত। মরচেপড়া সমাজের ভিত নাড়িয়ে দেয়াই গণসঙ্গীতের অন্যতম প্রধান কাজ। এছাড়া, গণসঙ্গীত মূলত মানুষের সচেতন জীবন সংগ্রামের ফসল। জাতীয় চেতনার ধারা যেখানে আন্তর্জাতিক, মেহনতী মানুষের আন্দোলনের সমুদ্রে মিশেছে সেই সাগর সঙ্গমেই গণসঙ্গীতের উৎপত্তি। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য অধ্যাপক মতলুব আলী, সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম, প্রবীর সরদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক রানা, সম্পাদকম-লীর সদস্য প্রদীপ ঘোষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সায়েম রানা। সেমিনার শেষে জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে বিজয়ীদের হাতে সনদপত্র ও স্মারক তুলে দেয়া হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে ‘ক’ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে অঙ্কুর সরকার, দ্বিতীয় নম্রতা বর্মণ সেতু এবং তৃতীয় হয়েছে স্বীকৃতি রাহা। ‘খ’ বিভাগে প্রথম হয়েছে সৌরভ দাস সন্তু, দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে ওয়াজীহা তাসনীম এবং তৃতীয় হয়েছে মায়েশা সুলতানা ঊর্বি। ‘গ’ বিভাগে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সুব্রত দাস। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন অরুণ চন্দ্র বর্মণ এবং তৃতীয় স্থান পেয়েছেন বিজয় চক্রবর্তী। এছাড়া, দলীয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে উদীচী যশোর জেলা সংসদ, দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে সিলেট জেলা সংসদ এবং তৃতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে মাদারীপুর জেলা সংসদ। এর পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বের শুরুতেই সঙ্গীত পরিবেশন করেন জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় তিনটি একক ও একটি দলীয় মোট চার বিভাগের চ্যাম্পিয়ন প্রতিযোগীরা ও দল। এর পর মঞ্চে পরিবেশনা নিয়ে আদিবাসী যুবকদের গানের দল ‘মাদল’। এর পর দেশবরেণ্য গানের দল ‘জলের গান’ তাদের পরিবেশনা দিয়ে প্রাঙ্গণে উপস্থিত দর্শককে মুগ্ধ করেন। এছাড়াও, গান পরিবেশন করেন এবারের উৎসবের আমন্ত্রিত অতিথি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগত গণসঙ্গীত শিল্পী পূরবী মুখোপাধ্যায় ও অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। সঙ্গীত পরিবেশন করেন পশ্চিমবঙ্গের গণসঙ্গীত শিল্পী অসীম গিরি। উৎসবের শেষদিন আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীর শওকত ওসমান মিলনায়তনে অতিথি শিল্পী পূরবী মুখোপাধ্যায় ও অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের গণসঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন থাকবে। গানে, কবিতায় আরশীনগর ফাউন্ডেশনের ৫০তম ত্রৈমাসিক আসর উদ্যাপন ॥ গান আর কবিতায় ৫০তম ত্রৈমাসিক আসর উদ্যাপন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন আরশীনগর ফাউন্ডেশন। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির নবনির্বাচিত পরিষদের শপথ গ্রহণ হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সৈয়দ শামসুল হকের ‘আমার পরিচয়’ কবিতা আবৃত্তি করেন লুলুয়া ইসহাক মুন্নী। এর পর একক গান নিয়ে মঞ্চে আসেন শিল্পী রেজা তাবাস্সুম প্রমা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সোহানুর রহমান সোহেল ও তানজিনা ঋতু। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব পথিক সবুজ।
×