ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি ৮০ লাখ টাকা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৩০ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশ ব্যাংকে  অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি  ৮০ লাখ টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৪ তলায় অবস্থিত বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে আগুন লাগার ঘটনায় প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামালের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনটি গবর্নর ফজলে কবিরের হাতে হস্তান্তর করেন। সংবাদ সম্মেলনে শুভঙ্কর সাহা বলেন, জরুরী বা দাফতরিক কোন কাগজপত্রের ক্ষতি হয়নি। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে চা বানানোর কেটলি পাওয়া গেছে। ওই কেটলি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, বৈদ্যুতিক চায়ের কেটলি শর্টসার্কিট হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের ১৪ তলার কক্ষটিতে আগুন লেগেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে কেটলি বা অননুমোদিত কোন কিছু বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে ব্যবহার না করতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। সব বিভাগের কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার পর কেয়ারটেকাররা যেন সার্কিট ব্রেকার বন্ধ করেন, তদন্ত প্রতিবেদনে সে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিবেদনে আধুনিক ফায়ার প্রটেকশন বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার, একজন কন্ট্রোলার বা নিয়ন্ত্রক নিয়োগ ও কেন্দ্রীয়ভাবে বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জি এম আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ২৩ মার্চ রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের ১৪ তলায় বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাসুদ বিশ্বাসের কক্ষে আগুন লাগে। এতে ওই কক্ষের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করে রাত ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন পুরোপুরি নেভানো হয় রাত ১০টা ৩৪ মিনিটে। এ ঘটনায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ জানতে ঘটনার রাতেই ব্যাংকের তিন সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসও পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। আজ ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত প্রতিবেদন জমার দেয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয় জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ঢাকা) সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জনকণ্ঠকে জানান, বৈদ্যুতিক চায়ের কেটলি শর্টসার্কিট হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের ১৪ তলার কক্ষটিতে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে আমাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় নাশকতা নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ছিল বলে তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে মৌখিক ও লিখিতভাবে সিসিটিভি ফুটেজ পেতে বিলম্ব হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া সম্ভব কি-না আপাতত বলা যাচ্ছে না।
×