ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আইপিইউ সম্মেলন সামনে রেখে বর্ণিল সাজে সংসদ ভবন

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৩০ মার্চ ২০১৭

আইপিইউ সম্মেলন সামনে রেখে বর্ণিল সাজে সংসদ ভবন

সংসদ রিপোর্টার ॥ ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলনে বাঙালীর ইতিহাস-সংস্কৃতি ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই সম্মেলন সামনে রেখে জাতীয় সংসদকে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। সম্মেলনে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ করা, না করায় কোন প্রভাব পড়বে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আগামী পয়লা এপ্রিল সন্ধ্যায় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইপিইউ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হওয়ায় রাজধানীতে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদের মূল ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। সংসদ ভবনের ভেতরের সড়কগুলোতে রং-বেরঙের আলো শোভিত গাছ বসানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই উদ্বোধনী পর্বের বিশেষ আলোকসজ্জার প্রস্তুতিও চলছে। সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পুরো সম্মেলনজুড়ে বাঙালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। উদ্বোধনী পর্বে এ বিষয়ে বিশেষ ভিডিও প্রদর্শনী থাকবে। দেখানো হবে বৈশাখী মেলা। সেখানে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামের উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রদর্শন করা হবে। দেখানো একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যার ভয়াবহ চিত্র। গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ সময় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্রও তুলে ধরা হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য শিল্পীরা গান গাইবেন। সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চ নৌকার ওপর হবে। মঞ্চের দিকে তাকালে মনে হবে পুরো সংসদ ভবনই নৌকায় ভাসছে। আর সিঁড়িগুলো ঢেউয়ের মতো। সম্মেলনস্থলে থাকবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি। আর বিমানবন্দর থেকে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় বর্ণাঢ্য ব্যানার, ফেস্টুন ও পতাকায় শোভিত করা হবে। আইপিইউ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির একাধিক আইনপ্রণেতা জানান, সম্মেলনকে স্মরণীয় ও বর্ণাঢ্য করতে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোন একটি দেশ অংশগ্রহণ না করলে তা সম্মেলনের ওপর কোন প্রভাব ফেলবে না। আর পাকিস্তানের জন্য তো নয়ই। কারণ তারা শুধু আমাদের ওপর গণহত্যা চালায়নি। এখনও তা নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত। আইপিইউ সূত্র জানায়, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনও সম্মেলনে অংশগ্রহণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে এই সম্মেলনে অন্যান্য যে কোন সম্মেলনের থেকে উপস্থিতি বেশি থাকবে। কিউবা ও সুইডেনের স্পীকার সাধারণত আইপিইউ সম্মেলনে অংশ না নিলেও এবার বাংলাদেশে আয়োজিত সম্মেলনে তারা নিজ নিজ দেশের পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। সংস্থার ১৩১টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে দেশের ইতিহাসে বৃহত্তর এই সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতির সরেজমিনে খোঁজখবর নেয়া হয়। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার নেতৃত্বে সংশ্লিষ্টরা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) যান। তারা প্রস্তুতি কাজ ঘুরে দেখার পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। পরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় উদ্বোধনী মঞ্চ ও সংসদের আলোকসজ্জা ঘুরে দেখেন। উল্লেখ্য, সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত সবচেয়ে বড় সংস্থা আইপিইউর ১৩৬তম সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরতে শুক্রবার সকাল ৯টায় বিআইসিসির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও আইপিইউ চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
×