ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিউটি পারভীন

নারী ফুটবলের উন্নয়নে সচেষ্ট সিলভিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২৯ মার্চ ২০১৭

নারী ফুটবলের উন্নয়নে সচেষ্ট সিলভিয়া

সিলভিয়া নেইড ১১ বছর ধরে জার্মানির মহিলা ফুটবল দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় দলের হয়ে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ১১১ ম্যাচ খেলা সাবেক এ মহিলা মিডফিল্ডার কোচ হিসেবেও দারুণ সাফল্য এনে দিয়েছেন দলকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ৫২ বছর বয়সী এ কোচের বড় কোন সাফল্য নিয়ে হয়তো শেষ করা হচ্ছে না। গত বছর রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকে তার অধীনেই জার্মান মেয়েরা প্রথমবারের মতো স্বর্ণপদক জয় করে। সুইজারল্যান্ডে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তাকে বর্ষসেরা মহিলা কোচের পুরস্কার দেয়া হয়েছে। তবে এখন আর জার্মানি মহিলা দলের কোচ হিসেবে নয়, ফুটবল স্কাউট হিসেবে জার্মানির পুরুষ ও মহিলা যে কোন পর্যায়ের ফুটবল খেলার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পুরনো দায়িত্ব আর নতুন কর্তব্য নিয়ে ফুটবলের বিভিন্ন দিক নিয়ে দিয়েছেন বিস্তারিত সাক্ষাতকার। সেখানে তিনি দাবি করেছেন মহিলা ফুটবলের উন্নয়নে সার্বিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন তিনি। আনতে চান ভিন্নধারার কিছু। সেই সাক্ষাতকারের কিছু অংশ এখানেÑ প্রশ্ন ॥ বর্ষসেরা মহিলা কোচের পুরস্কার পেয়ে কেমন লাগছে? সিলভিয়া ॥ এট পাওয়াটা আমার জন্য বিশাল সম্মানের। আমরা রিওতে স্বর্ণ জিতেছি এবং শীর্ষ পর্যায়ের নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছি। আমি খুবই খুশি সবকিছু নিয়ে। প্রশ্ন ॥ কাজটা ছেড়ে দিচ্ছেন, তখন এই অর্জনগুলো কতটা মিস করবেন? সিলভিয়া ॥ আমি নিজেকে অনেকদিন ধরেই প্রস্তুত করছিলাম যে অলিম্পিক শেষ হওয়ার পর জার্মানির কোচ হিসেবে দায়িত্বে আর থাকব না। আমার মনে হয় স্টেডিয়ামে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়াটা খুবই মিস করব। আর সেই সঙ্গে মাঠে দলের সঙ্গে থাকাটা তো খুবই মিস করতে হবে। তবে এখন আমি গ্যালারি থেকে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার অভিজ্ঞতাটা নিতে পারব এবং উপভোগও করতে পারব। আমরা ভাল কিছু সময় কাটিয়েছিলাম। এরমধ্যে শিরোপার আনন্দ যেমন আছে, তেমনি কঠিন কিছু মুহূর্তও আছে। সবগুলোই দারুণ স্মৃতি। তবে এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতি সেটা নিয়ে আমি খুশি। প্রশ্ন ॥ আপনার কি মনে হয়েছে যে এ দলটিকে নিয়ে আরও কিছু অর্জন করা যেত? সিলভিয়া ॥ আমরা অলিম্পিকের শুরুতে বেশ সমস্যায় ছিলাম। সঠিক ছন্দে খেলতে পারছিলাম না। কিন্তু আমরা যখন কোয়ার্টার ফাইনালে চীনকে ১-০ গোলে হারালাম তখনই বুঝেছি নিজেদের সেরা অবস্থায় ফিরে এসেছি। তখন আমার মনে হয়েছে যে স্বর্ণপদক জয় অবশ্যই সম্ভব। প্রশ্ন ॥ অলিম্পিক স্বর্ণ জেতার মধ্যে কি বিশেষত্ব আছে বলে মনে করেন? সিলভিয়া ॥ অনেক কিছু। একটি হচ্ছে, এই প্রথম জার্মানির মহিলা দল অলিম্পিকে সোনা জিতল। দ্বিতীয়ত, ব্রাজিলে যাওয়ার সময় আমি বলেছিলাম যে টুর্নামেন্ট জিততেই যাচ্ছি আমরা। তৃতীয়ত, আমরা সেটা করতে পেরেছিলাম এবং চতুর্থ কারণ, এমন একটা পদক জেতার অর্জনটা আজীবন সঙ্গেই থাকবে। আমি যে কোন মানুষ কিংবা দলের সঙ্গে পরিচিত হতে যাব তখন বলা যাবে স্বর্ণপদকের এ বিষয়টা। প্রশ্ন ॥ টুর্নামেন্ট জেতার পাশাপাশি ব্রাজিলে সেরা মুহূর্ত আর কিছু কি আছে? সিলভিয়া ॥ মারাকানায় ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ম্যাচের শেষেও আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম স্বর্ণ জয়ের জন্য। আমি সেই অনুভূতিটা খুবই উপভোগ করি। এছাড়াও দারুণ ব্যাপার ছিল স্টেডিয়ামের অপরপ্রান্তে থাকা ভক্ত-সমর্থকদের কাছে বিজয়ীর গর্ব নিয়ে হেঁটে যাওয়া। আমার অনেক বন্ধু ছিল সেখানে এবং অনেক সেলফি তোলা হয়েছিল। অবশ্যই আমি সেটা কখনও ভুলতে পারব না। প্রশ্ন ॥ জেতার পর সবাই ড্রেসিং রুমে উৎসব করছিল। দলের পক্ষ থেকে আপনাকে কি উপহার দেয়া হয়েছে? সিলভিয়া ॥ আমরা অনেক আনন্দ করেছিলাম। আমি যেটা মূলত দেখতে পেয়েছি সেটা হচ্ছে গ্রুপবদ্ধ হয়ে একটা দল কিভাবে নিজেদের মধ্যে অনেক বেশি সময় ভাগাভাগি করেছি। খেলোয়াড়রা আমাদের জন্য একটা ফিল্ম তৈরি করেছিল। সেখানে দেখান হয়েছে কিভাবে তারা খেলেছে এবং কিভাবে আমি কোচে পরিণত হলাম। এটা শুধু আমিই নয়, সেখানে ছিল দল ছেড়ে যাওয়া উলরিক বলওয়েগ, ডোরিস ফিশ্চেন, মাইকেল ফাশ। আমরা সবাই মেঝেতে বসে পড়লাম এবং একে একে অনেকেই চমৎকার ও মজার কিছু বক্তব্য দিয়েছিল। প্রশ্ন ॥ আপনার দৃষ্টিতে কোচিং শিল্পটা কিভাবে পরিবর্তনের দিকে গেছে? সিলভিয়া ॥ এই সময় এখন আপনারা আরও ভাল বিশেষজ্ঞ দেখতে পাবেন। এটাই সবচেয়ে ভাল বিষয় এবং গুরুত্বপূর্ণ এক উন্নতি। খেলোয়াড়রা এখন অনেক বেশি অনুশীলন করে, অনেক বেশি দ্রুততর হয়েছে ও শিক্ষিত হয়ে উঠেছে। কৌশলগত ও প্রয়োগগত দিক থেকে প্রশিক্ষিত হয়েছে সবাই। আমরাও সবসময় নিজেদের উন্নতি করার দিকে মনোযোগী ছিলাম। প্রধান কোচ হিসেবে কেউ সবকিছুই নিখুঁতভাবে করতে পারে না। এ কারণে সবসময় আশেপাশে বিশ্বস্ত মানুষজন থাকতে হয়।
×