ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিনেটের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ট্রাম্প জামাতা কুশনার

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৯ মার্চ ২০১৭

সিনেটের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ট্রাম্প জামাতা কুশনার

যুক্তরাষ্ট্রে ৮ নবেম্বরের নির্বাচনে জিতে ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের দখল বুঝে নিলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বস্তিতে নেই। তার বিরুদ্ধে কর এড়ানোসহ বিদেশী রাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে ক্ষমতায় আসার অভিযোগ আনা হচ্ছে এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও সিনেটের একটি তদন্ত দলও এসব অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজখবর করছে। এর অংশ হিসেবে সিনেট কমিটি হোয়াইট হাউস কার্যালয়কে জানিয়েছে, ২০১৬-এর নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয় নিয়ে তারা প্রেসিডেন্টের জামাতা ও ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। কেননা, এই কুশনারই যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এক উন্নয়ন ব্যাংকের প্রধান সের্গেই গরকভের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাত করেন। কিন্তু হোয়াইট হাউস থেকে সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে মাত্র একবার সাক্ষাতের কথা স্বীকার করা হয়েছে। সন্দেহের বিষয়টি তখনই তীব্র হয় যখন জানা যায় যে, সের্গেই গরকভ ব্যাংকার হলেও আসলে রুশ গোয়েন্দা সংস্থার একজন চৌকস অফিসার, যার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। ভেনেশেকনম ব্যাংকের প্রধান হিসেবে গরকভ দায়িত্ব পালন করেন ঠিকই কিন্তু এর পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা হচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ লোকজন। এদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভও রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিধর একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক শক্তিধর রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকলে তা যে ভবিষ্যত মহাবিপর্যয়ের ইঙ্গিতবাহী তা ক্ষমতাসীন দলটির অন্য নেতারা বুঝতে পারলেও ট্রাম্পের নিয়ন্ত্রণাধীন হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা যেন তা বুঝতে চাইছেন না। তাই হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হোপ হিক্্স রুশ রাষ্ট্রদূত ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সাক্ষাতকে নিছক সৌজন্য বা আনুষ্ঠানিক সাক্ষাত বলে চালিয়ে দিতে চাচ্ছেন। হোপ হিক্্স বলেন, জ্যারেড কুশনার শুধু প্রেসিডেন্টের জামাতাই নন, তিনি কুশনার রিয়েল এস্টেট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে সবের ব্যাংকের ডেপুটি চেয়ারম্যান গরকভের সঙ্গে দেখা করতেই পারেন। এছাড়া নির্বাচিত হওয়ার পর দায়িত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য দেখা-সাক্ষাত তো রুটিন ওয়ার্ক। তাই রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে আপত্তির কিছুই নেই। দেশ-বিদেশের রাষ্ট্রদূত বা প্রতিনিধির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত বা আলোচনা আপত্তিকর নয়, অপরাধও নয় কিন্তু তা গোপন করা বা অস্বীকার করা অবশ্যই সন্দেহজনক। যেমনটা করেছেন এ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্স। তিনি রুশ রাষ্ট্রদূত কিসলিয়াকের সঙ্গে দেখা করেও তা অস্বীকার করেছেন। প্রায় একই ধরনের কর্মকা- করে পদত্যাগ করেছেন ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। একের পর এক এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে এফবিআই পরিচালক জেমস বি কোমি কংগ্রেসের কাছে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, তার সংস্থা গত নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ সম্পর্কে তদন্ত করছে এবং এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ কেউ রুশ সরকারের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করেছে কি-না তা খতিয়ে দেখছে। এসব কারণে একজন রাজনীতি সচেতন মানুষ বলেছেন, হোয়াইট হাউসের ওপর একটি কালো মেঘ স্থির হয়ে আছেÑ নড়ছেও না, সরছেও না। ভাবমূর্তি সঙ্কট তো আগে থেকেই ছিল, এবার ট্রাম্পের নিজ দলেই তার গ্রহণযোগ্যতা প্রায় শূন্যের কোটায়। আমেরিকার ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা আর কখনও ঘটেনি। -নিউইয়র্ক টাইমস ও এএফপি
×