ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নীলফামারীতে ‘লালজমিন’ মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৮ মার্চ ২০১৭

নীলফামারীতে ‘লালজমিন’ মঞ্চস্থ

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্যপ্রকাশ ‘লালজমিন’। ৭১ এর স্বাধীনতাযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস। এই নয় মাসের স্বাধীনতা সংগ্রামে খন্ড খন্ড চিত্রগুলো একটিকাতারে এনে এক ঘন্টা ২০ মিনিট বিরতীহীনভাবে তুলে ধরে হাজারো দর্শকশ্রোতাকে কাঁদিয়ে দিলেন নাট্য অভিনেত্রী মোমিনা চৌধুরী। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এই দিনটিতে নীলফামারীর শিল্পকলা একাডেমীতে ছিল মোমেনা চৌধুরীর লালজমিনের ১১৪তম শো। রাত পৌনে ৯টায় শুরু হয় তার একক চরিত্রে অভিনয়ের ‘লালজমিন’। মঞ্চায়ন শেষে লালজমিন উপভোগ করার পর নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন, পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান, পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক আহসান রহিম মঞ্জিম, সাংস্কৃতিকর্মী আরিফা সুলতানা লাভলী তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। শুধু তারাই নয় শিল্পকলা একাডেমির হল রুমে নাটকটি উপভোগকারী শতশত দর্শকের ময় জয় করেন মোমেনা চৌধুরী। এ সময় মোমেনা চৌধুরী বলেন তার অভিনীত ‘লালজমিন’ নাটকটি স্বাধীনতার কথা বলে। স্বাধীনতা বিরোধীদের বর্বরোচিত ঘটনার কথা বলে। ‘লালজমিন’ নাটকটি তিনি দেশের প্রতিটি এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রদর্শন করার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় জানিয়েছেন। লালজমিন নাটকের গল্পে দেখা যায় তের ডিঙিয়ে চৌদ্দ বছর ছুঁই ছুঁই এক কিশোরী কণ্যার গল্প। কিশোরীর দুচোখ জুড়ে মানিক বিলের আটক লাল পদ্মের জন্য প্রেম। তার কৈশরেই শোনে বাবা মায়ের মধ্যরাতের গুঞ্জন। শুধু দু’টি শব্দ কিশোরীর মস্তকে আর মনে জেগে রয়, মুক্তি- স্বাধীনতা। ঐ বয়সে কিশোরী এক ছায়ার কাছ থেকে প্রেমে পায়। বাবা যুদ্ধে চলে যায়, অগোচরে-কিশোরী নানা কৌশলে যুদ্ধ যাওয়ার আয়োজন করে,সশস্ত্র যুদ্ধ। বয়স তাকে অনুমোদন দেয় না। এবার কিশোরীর সেই ছায়া-প্রেম সম্মুখে দাঁড়ায়, কিশোরী তার সেনাপতিকে চিনতে পারে। তারপর যুদ্ধযাত্রা। লক্ষে পৌঁছার আগেই পুরুষ যোদ্ধারা কেউ শহীদ হন,কেউ নদীর জলে হারিয়ে যান। পাচ যুবতীসহ যুদ্ধযাত্রী এই কিশোরীর জীবনে ঘটে নানা অভিজ্ঞতা। চৌদ্দ বছরের কিশোরীর ধবধবে সাদা জমিন যুদ্ধকালীন নয় মাসে রক্তরাঙা লাল হয়ে উঠে। লালজমিন কিশোরীর রক্তরাঙা অভিজ্ঞতার মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর এই নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্যপ্রকাশ ‘লালজমিনৎ। মান্নার হীরার রচনা, সুদীপ চক্রবর্তীর নির্দেশনা, জুলফিকার চঞ্চল ও রহিম রাজুর সঙ্গীত পরিকল্পনা, বারী সিদ্দিকী, রামিজ রাজু, নীলা সাহার কন্ঠের গানে এই লালজমিনকে সাজানো হয়। ২০১১ সালের ১৯ মে লালজমিন প্রথম মঞ্চায়ন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমন্ডলে। এরপর, দেশের ২৩টি স্থানে ছাড়াও ভারতের আটটিস্থানে এবং আমেরিকার একটি অংশে।
×