ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৮ হাজার ১৩২ সরকারী সংস্থা অবিভক্ত নেটওয়ার্কে আনা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৮ মার্চ ২০১৭

১৮ হাজার ১৩২ সরকারী সংস্থা অবিভক্ত নেটওয়ার্কে আনা হচ্ছে

ফিরোজ মান্না ॥ অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের মাধ্যমে ১৮ হাজার ১৩২ সরকারী সংস্থাকে অবিভক্ত নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসার কাজ চলছে। একইসঙ্গে ২০১৭ সালের মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের আওতায় চলে আসবে। আর ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে ইন্টারনেট। ‘বাংলা গব নেট ও ইনফো সরকারের’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রযুক্তিসেবার বিস্তার করা হবে। ফলে ঘরে বসেই মানুষ সরকারের বেশির ভাগ অফিসের খবর জানতে ও সরকারী সেবা নিতে পারবেন। সূত্র জানিয়েছে, বাংলা গব নেট ও ইনফো সরকার প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রায় সব উপজেলা ফাইবার অপটিক কেবলে সংযুক্ত হয়েছে। ফলে দেশের ১৮ হাজার ১৩২টি সরকারী সংস্থা অবিভক্ত নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে। সচিবালয়ে উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবার আওতায় এসেছে। দেয়া হয়েছে ওয়াই-ফাই সুবিধাও। ৩৪ হাজার তরুণ-তরুণীকে তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তোলার কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে ২০ হাজার জনকে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, ১০ হাজার জনকে টপ আইটি প্রশিক্ষণ এবং সাড়ে চার হাজার জনকে ফাস্ট ট্র্যাক ফিউচার লিডার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। হাইটেক পার্কের অন্তর্ভুক্ত ‘স্টিল এনহ্যান্সমেন্ট’ কর্মসূচীর আওতায় ২ হাজার ৪৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এক হাজার জনের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে, বাকিদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া লার্নিং আর্নিং প্রকল্পের আওতায় আরও ২৬ হাজার জনকে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের কাছ থেকে আবার অন্যরা শিখবেন। এভাবে দেশে দক্ষ আইটি বিশেজ্ঞ গড়ে উঠবে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সারাদেশের সব মানুষকে একটি নাম্বারে নাগরিক সেবা সম্পর্কিত তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে ‘ন্যাশনাল কল সেন্টার’ তৈরি করা হয়েছে। সে সঙ্গে কোরিয়া সরকারের সহায়তায় আইসিটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কোরিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সারাদেশের সব সরকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটকে একটি অভিন্ন প্লাটফর্মের আওতায় নিয়ে এসে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাবলিক ওয়েবপোর্টাল ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ চালু করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে একটি নাম্বারের মাধ্যমে নাগরিক সেবার নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এটি সম্পন্ন করতে পারলে নাগরিক সুবিধা পাওয়া আরও সহজ হবে। ১৯৮০ সালে চীন ৩০ বছরের একটি তথ্যপ্রযুক্তি পরিকল্পনা তৈরি করে। সে অনুযায়ী তারা কাজ করে। একইভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ২০০০ সালে ১৫ বছরের জন্য একই ধরনের মাস্টারপ্ল্যান করে। দু’টি দেশই তাদের পরিকল্পনা তৈরি করে ও তা বাস্তবায়ন করে। আমরাও একইভাবে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে এগিয়ে যেতে চাই। অনলাইনে সেবা প্রদানের কলেবর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ডেটা সেন্টারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দেশের ৫ম বৃহত্তম টায়ার-৪ সার্টিফাইড ডেটা সেন্টার গড়ে তোলা হবে এবং সেখানে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি সংযোজন করা হবে, জি-ক্লাউড স্থাপন করা হবে। ডিজিটাল সংযোগ প্রকল্পের অধীনে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড কানেকটিভিটি স্থাপন করা হবে। উদ্ভাবন ও উৎকর্ষতাকে অনুপ্রেরণা প্রদান ও বাস্তবায়নের জন্য একাডেমি ফর ইনোভেশন, ডিজাইন এ্যান্ড এক্সিলেন্স (আইডিএ) স্থাপন করা হবে। সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমজিআই’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল এ্যাপস এবং গেমসের বাজার হবে ৩ দশমিক ৫ থেকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বিশাল বাজারে সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে মোবাইল এ্যাপস ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রায় ৩ হাজার ৫শ’ মোবাইল এ্যাপস ডেভেলপার তৈরি করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদফতরের জন্য ইতোমধ্যে ২৫টি মোবাইল এ্যাপস উদ্বোধন করা হয়েছে। আরও ৫৭৫টি মোবাইল এ্যাপস তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে ডেভেলপার নিয়োগ দেয়া হযেছে। যশোর হাইটেক পার্কের ১ম পর্যায়ের কাজ আগামী জুনে শেষ হবে। হাইটেক পার্কগুলো স্থাপনের মাধ্যমে আগামী চার বছরে ৭০ হাজার দক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইম্পলয়ি ইনসেনটিভ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা প্রদান অব্যাহত রাখা হয়েছে। আইটি, আইটিইএস ব্যবসা থেকে উদ্ভূত আয়কে আগামী ২০১৯ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
×