ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আরও সেঞ্চুরির অপেক্ষায় তামিম

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৭ মার্চ ২০১৭

আরও সেঞ্চুরির অপেক্ষায় তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজেই সেঞ্চুরি পেয়ে যেতে পারতেন। দেশের ঐতিহাসিক শততম টেস্টে বিজয়ের রূপকার ছিলেন। খেলেছিলেন ৮২ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস। মাত্র ১৮ রানের জন্য ইতিহাসের আরেকটি পাতায় নিজের নাম লেখাতে পারেননি বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। কিন্তু সেই আক্ষেপটা ঘুঁচিয়েছেন ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ১২৭ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলে। ম্যাচশেষে জানিয়েছেন এমন সুযোগ পেলে আর সেঞ্চুরি হাতছাড়া করতে চান না তিনি। প্রতিবারই হাঁকাতে চান শতক। ১২৭ রানের ইনিংসটি ডাম্বুলা রনগিরি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড। এর পাশাপাশি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিন ফরমেট মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে পেরিয়ে গেছেন ১০ হাজার রানের মাইলফলক। তামিম জানিয়েছেন এই সংগৃহীত রান তার কাছে বিশেষ কিছু। ক্যারিয়ারে অনেকবারই সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে আর ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারেননি। একেবারেই সাবলীল খেলে আশি উর্ধ ইনিংস খেলেছেন, উইকেটে থিতু হয়েছেনÑ কিন্তু সামান্য ভুলে সাজঘরে ফিরে গেছেন। ২০০৭ সালে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ১৬৩ ম্যাচ খেলেছেন তামিম। যেখানে তার সেঞ্চুরি ৮। আর হাফসেঞ্চুরি ৩৪। তামিমের সামনে সুযোগ ছিল তার বেশ কয়েকটি হাফসেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দেয়ার। কিন্তু অতীতে ব্যর্থ হয়েছেন, এখন সব সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিন অঙ্কে পৌঁছতে প্রত্যয়ী তামিম। ডাম্বুলায় ম্যাচ জয়ের পর তিনি বলেন, ‘চাওয়ার তো কোন শেষ নেই। আশা করব যে এ রকম যত সুযোগ আসবে, তত বেশি যেন সদ্ব্যবহার করতে পারি। আমার শেষ যে রেকর্ডগুলো ছিল, ওটার দিকে তাকালে দেখবেন, আমি হয়ত ৫-৬টা সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারতাম। কিন্তু পারিনি। এখন থেকে এটা সবসময় চেষ্টা থাকবে। হয়ত সেটা প্রতিদিন সম্ভব হবে না। তবে বেশিরভাগ দিনে সেটা যেন কাজে লাগাতে পারি।’ ডাম্বুলায় ভুল করেননি, আশির ঘরে গিয়ে নয়Ñ আরও আগেই কিছুটা অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। ৪০ পেরোতেই কেমন যেন উল্টাপাল্টা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও কোচ চান্দ্রিকা হাতুরাসিংহের বার্তা তাকে মানসিকভাবে দৃঢ় করেছে। সে বিষয়েও তামিম বললেন, ‘একটা সময় আমি কিছুটা সংগ্রাম করছিলাম। উইকেট শুরু থেকে খানিকটা মন্থর ছিল। কিছু বল স্কিড করছিল, কিছু বল থামছিল। মনে হচ্ছিল আমি স্ট্রাইক রেট বাড়াতে পারছিলাম না। সময়টা এমন ছিল যে, ওই সময় যদি আমরা একটা উইকেট হারাতাম, তাহলে হয়ত বড় স্কোর করা সম্ভব হতো না। ওই সময় ড্রেসিংরুম থেকে কোচ ও অধিনায়ক বার্তা পাঠান। মাশরাফি ভাই বার বার বাইরে বেরিয়ে এসে আমাকে বুঝাচ্ছিলেন বড় ইনিংস খেলা। সেটা আমি সফলভাবে করতে পেরেছি, আমি খুব খুশি। শনিবারের সেঞ্চুরিসহ তামিমের ওয়ানডে সেঞ্চুরির সংখ্যা এখন ৮। তার মধ্যে বিশেষ কোনটি এমন প্রশ্নে তামিম বলেন, ‘আমি সবসময় বলে এসেছি সব সেঞ্চুরি আমার কাছে সমান। সব সেঞ্চুরি আমার কাছে বিশেষ কিছু। তবে এটাও বিশেষ এখানকার কন্ডিশনের কারণে। এই গরমে প্রায় ৪৭ ওভার ব্যাটিং করা খুব সহজ কাজ না। আমি রান করার পর যে সব ম্যাচ জিতেছি, সেগুলো সবই আমার কাছে স্পেশাল।’ তবে ডাম্বুলার ইনিংসটি অনেকদিন হয়তো মনে রাখবেন তামিম। আরেকটি বিশেষ সময় বিশেষ কোন বিষয় না ঘটা পর্যন্ত তো অবশ্যই মনে রাখবেন। এদিনের সেঞ্চুরি তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ৭৪তম আর দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের ক্লাবে সদস্য বানিয়েছে। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘১০ হাজার রান আমার কাছে খুব স্পেশাল। যত রান করতে পারি, সেই চেষ্টাই থাকবে। এই ১০ হাজার রানের জন্য আমি গর্বিত এবং খুশি।’
×