ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতার গান কবিতা চিত্রমালায় রঙিন শহর

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৭ মার্চ ২০১৭

স্বাধীনতার গান কবিতা চিত্রমালায় রঙিন শহর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শহরের ছড়িয়েছে রঙের আভা। বয়ে গেছে প্রাণের উচ্ছলতা। আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জনের দিনটি উদযাপিত হয়েছে আনন্দের আবহে। রবিবার ছিল ৪৬তম স্বাধীনতাবার্ষিকী। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সকাল থেকে রাত অবধি নানা আয়োজনে মুখরিত ছিল রাজধানীর সংস্কৃতি ভুবন। বাঙালীর বীরত্বগাথার সাক্ষ্যবহ স্বাধীনতার রং মেখে গান কবিতা চিত্রমালার স্রোতধারায় রঙিন হয়েছে শহর। গানের সুরে, কবিতার ছন্দে, নাচের মুদ্রায় কিংবা বক্তার কথা উচ্চারিত হয়েছে একাত্তরের মহাকাব্যিক অধ্যায়। শিল্পীর রং তুলির আঁচড়ে উদ্ভাসিত হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রাম। দিনের প্রথম ভাগ সকালে শিশুদের গান-কবিতা ও নাচের তালে সরব হয়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আঙ্গিনা। বিকেলে শহীদ মিনারে গান কবিতা কিংবা নৃত্য পরিবেশনায় উদযাপিত হয়েছে স্বাধীনতা দিবস। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে বৈচিত্র্যময় পরিবেশনায় উঠে এসেছে একাত্তরের বীরত্বগাথা। সব মিলিয়ে স্বাধীনতা দিবসে একাত্তরের প্রেরণাদায়ী বহুমাত্রিক পরিবেশনায় স্পন্দিত হয়েছে শহরের সংস্কৃতি ভুবন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে শিশুদের আনন্দ আয়োজন ॥ স্বাধীনতা দিবসের সকালে বর্ণিল হয়ে সেগুন বাগিচার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আঙ্গিনা। অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশু-কিশোরদের নাচ-গান ও কবিতায় সাজানো আনন্দ আয়োজন। স্বাধীনতা দিবস ও একবিংশতিতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী স্বাধীনতা উৎসবের পঞ্চম দিন ছিল রবিবার। এদিন সকালে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয়। মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির প্রকাশে নাচ করেছে নৃত্যজনের শিশু শিল্পীরা। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে আবৃত্তি করেছে কল্পরেখার খুদে বাচিকশিল্পীরা। এছাড়া নৃত্য-গীত ও কবিতায় সাজানো পরিবেশনায় অংশ নেন হলিক্রস স্কুল, খেলাঘর, ইউসেপ স্কুল, মৈত্রী শিশুদল ও ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়। এত গেলে সকালের আয়োজন। সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের লোকনাট্য গোষ্ঠী মঞ্চস্থ করে শান্তি রঞ্জন দে রচিত ও তাপস সরকার রচিত যাত্রাপালা ‘গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা’। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে বিকেলে মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পরিবেশনা উপস্থাপন করে চারুলতা একাডেমি, বধ্যভূমির সন্তানদল, দিনা লায়লা সঙ্গীত একাডেমি, মনের জানালা যুব বান্ধব কেন্দ্র, আবৃত্তি একাডেমি, আপদৃ নৃত্যকলা একাডেমি, মিরপুর সাংস্কৃতিক একাডেমি ও মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরাম। শহীদ মিনারে স্বাধীনতা উৎসব ॥ ‘লাখো শহীদের আত্মদানÑঅফুরন্ত শক্তির আঁধার’ প্রতিপাদে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত তিনদিনের স্বাধীনতা উৎসব শেষ হলো রবিবার। এদিন বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ধানম-ি রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে একযোগে অনুষ্ঠিত হয় উৎসব। শহীদ মিনারে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, মরমী লোকগীতি শিল্পীগোষ্ঠী, সুরতাল ও দৃষ্টি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল গেয়ে শোনান ‘সোনায় মোড়ানো বাংলা মোদের শ্মশান করে কে’। এছাড়া একক কণ্ঠে গান শোনান মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না, আবিদা রহমান সেতু ও সঞ্জয় কবিরাজ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে ত্রিলোক, আবৃত্তি একাডেমি, ঢাকা স্বরকল্পন ও বাকশিল্পাঙ্গন। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন রূপা চক্রবর্তী, হাসান আরিফ ও মাহিদুল ইসলাম। শিশুতোষ পরিবেশনায় ছিল বহ্নিশিখা শিশুদল। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যাক্ষ ও দিব্য। পথনাটক পরিবেশন করে আরণ্যক ও মৈত্রী থিয়েটার। রবীন্দ্র সরোবরে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে আনন্দন, নন্দন, ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমি ও ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন আঞ্জুমান ফেরদৌসী কাকলী, রাজিয়া মুন্নী ও ছায়া কর্মকার। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে স্বরবৃত্ত, স্বরশ্রুতি ও স্বরচিত্র। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন সৈয়দ হাসান ইমাম ও কাজী আরিফ। শিশুতোষ পরিবেশনায় অংশ নেয় অচিন পাখী ও ঋদ্ধস্বর। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে দিব্য ও বুলবুল ললিতকলা একাডেমি। পথনাটক পরিবেশন করে সুবচন। শিকল্পকলা একাডেমির দিনব্যাপী আয়োজন ॥ স্বাধীনতা দিবসের সকালে শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একক কণ্ঠে গান শোনান অনিমা মুক্তি গোমেজ, আবু বকর সিদ্দিক, আশরাফ উদাস, আরিফ রহমান ও কহিনুর আক্তার গোলাপী। আবৃত্তি করেন মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, মাহমুদা আক্তার ও ডালিয়া আহমেদ। সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে দীপা খন্দকারের পরিচালনায় দিব্য ও রনি চৌধুরীর পরিচালনায় নৃত্যাঙ্গন। সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ। দিনব্যাপী আয়োজন শেষে সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন দুই বাচিকশিল্পী আশরাফুল আলম ও বিশিষ্ট সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে ড. উর্মি মালা সরকারের পরিচালনায় পরিবেশিত হয় সমসাময়িক নৃত্য ‘মহাকাব্যের অপেক্ষায়’। ভাষাসৈনিক কবি ড. এনামুল হকের রচনা ও সঙ্গীত পরিকল্পনায় ফারহানা চৌধুরী বেবীর পরিচালনায় ‘সূর্যমুখী নদী’ শীর্ষক নৃত্যনাট্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস। শিশু একাডেমির আয়োজন ॥ স্বাধীনতা দিবসে বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের পাশাপাশি এদিন একইসঙ্গে ছিল একাডেমি আয়োজিত বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় শিশুদের অংশগ্রহণে নৃত্যনাট্য, দেশের গান, আলোচনা, আমন্ত্রিত ছড়াকারদের ছড়াপাঠ ও আবৃত্তিশিল্পীদের আবৃত্তি। ছিল পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠান। এছাড়া প্রদর্শিত হয় বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ডাকটিকেট। দেখানো হয় শিশু একাডেমি প্রযোজিত মোরশেদুল ইসলাম নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘শরৎ ৭১’। শিল্পীর রং তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ ॥ স্বাধীনতা দিবসের সকাল থেকেই সচল হলো চিত্রশিল্পীদের রং তুলির আঁচড়। বরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গে যুক্ত হওয়া তরুণ শিল্পীদের ক্যানভাসে উঠে এলো মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ। তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই চত্বরে অনুষ্ঠিত হলো ‘আইএফআইসি-চ্যানেল আই রং তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক আয়োজন। ক্যানভাসে মুক্তিযুদ্ধকে উপস্থাপনের আয়োজনটি চলে বিকেল অবধি। চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, হাশেম খান ও সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং শিল্পসমালোচক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর যৌথভাবে ‘রং তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ’ উদ্বোধন করেন। একই ক্যানভাসে ছবি এঁকে আয়োজনের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন মুস্তাফা মনোয়ার, হাশেম খান ও সমরজিৎ রায় চৌধুরী। এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, পরিচালক মুকিত মজুমদার বাবু, জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, আইএফআইসি ব্যাংকের ডিএমডি হাইকেল হাশমী প্রমুখ। অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেনের উপস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানের শুরুতেই শ্রদ্ধা জানানো হয় প্রয়াত চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ও কবি সব্যসাচী সৈয়দ শামসুল হককে। এর পর মঞ্চে শিল্পী ফেরদৌস আরা আর তার সঙ্গীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুর সপ্তকের শিল্পীরা গাইলেন ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ গানটি। ফেরদৌস আরার আমন্ত্রণে মঞ্চে আসেন মুস্তাফা মনোয়ার। ছবি আঁকা আর পাপেট তৈরির পাশাপাশি তিনি গানও করেন। মুস্তাফা মনোয়ার আর ফেরদৌস আরা একসঙ্গে গেয়েছেন ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’ গানটি। এ সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক উর্ধতন কর্মকর্তা মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে টেলিভিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রথমেই গাওয়া হয়েছিল গানটি।’ ‘রং তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক এ আয়োজনে ছবি আঁকায় অংশ নেন হাশেম খান, মুস্তাফা মনোয়ার, সৈয়দ ইকবাল, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, আবদুস শাকুর, জাহিদ মুস্তাফা, আবদুল মান্নান, শেখ আফজাল, বীরেন সোম, রফি হক, রেজাউন নবী, সোহানা শাহরীন, সৈয়দ জাহিদ ইকবাল, মোঃ জহির উদ্দিন, হামিদুজ্জামান খান, অশোক কর্মকার, সৈয়দ লুৎফল হক, আইভি জামান, দিলরুবা লতিফ, সোহাগ পারভেজ, মণি দীপা দাশগুপ্ত, পীযূষ কান্তি সরকার, রেজাউল করিম, আবদুস সাত্তার, তৌফিক, তানিম, নাজিয়া আন্দালীব প্রিমা, মুহাম্মদ জহির উদ্দিন, মেহেদী হাসান, শামীম সুব্রানা, সামিনা এম কারিম, উজ্জ্বল রহমান, মুক্তি ভৌমিক, মানিক দে, রাফি হক প্রমুখ। তাদের আঁকা ছবিগুলোর বিষয়বস্তু ছিল দেশ, মুক্তিযুদ্ধ, লাল সবুজ, স্বাধীনতা, জঙ্গি হামলা, সম্ভাবনা, আশার আলো, শান্তি, আমাদের পতাকা, মানুষের মুখ, সূর্যের আলোসহ আরও নানা বিষয়। মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতা নিয়ে ছবি এঁকেছে খুদে শিল্পীরাও। তারা ছবি এঁকেছে চ্যানেল আইয়ের চেতনা চত্বরে। তাদের সনদপত্র বিতরণ করেন জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন ও মুকিত মজুমদার বাবু। উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, যারা শিল্পচর্চা করেন, আমি তাদের ভালবাসি। সেই ভালবাসা থেকেই আমি তাদের কাজগুলো দেখি। শিল্পকে মানুষের কতটা কাছাকাছি নিয়ে, সেই চেষ্টা করেছি। আমি চাই এই চর্চা জনপ্রিয় হোক, সাধারণ মানুষের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাক। অনুষ্ঠানে ছবি আঁকা আর কথার ফাঁকে দেশের গান গেয়েছেন ফেরদৌস আরা আর সুর সপ্তকের শিল্পীরা। অনুষ্ঠান শেষ হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’র মধ্য দিয়ে। চিত্রাঙ্কন শেষে চিত্রশিল্পীদের পক্ষে মুস্তাফা মনোয়ার ছবিগুলো তুলে দেন ফরিদুর রেজা সাগরের হাতে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন আফজাল হোসেন। প্রযোজনা করেন আমীরুল ইসলাম ও শহীদুল আলম সাচ্চু। কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা ॥ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সরব হয়ে ওঠে সেগুন বাগিচার কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা প্রাঙ্গণ। বিকেলে কচি-কাঁচা মিলনায়তনে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। তিনি শিশু কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা শোনান। আলোচনা করেন মেলার সহ-সভাপতি কবি রুবী রহমান। বাহাদুর পার্কে স্বাধীনতা উৎসব ॥ মুক্তদ্বীপ ও বঙ্গবন্ধু শিশু মঞ্চের আয়োজনে রবিবার পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে (ভিক্টরিয়া পার্ক, সদরঘাট) অনুষ্ঠিত হয় পুরান ঢাকা স্বাধীনতা উৎসব। এ উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ। অনুষ্ঠানে ছিল শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পতাকা মিছিল, মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও ২০টি সংগঠনের পরিবেশনায় নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি ও পথনাটক। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিল বঙ্গবন্ধু শিশু মঞ্চ, মুক্তদ্বীপ, স্পন্দন, সপ্তকলির আসর, সুরতাল সঙ্গীত একাডেমি, ঐতিহ্য, ঐকতান, সৃজন থিয়েটার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ, মরমী লোকগীতি শিল্পী গোষ্ঠী, সমবেত সাংস্কৃতিক কণ্ঠ, মুক্তিযোদ্ধা সংস্কৃতিক সংসদ ঢাকা মহানগর, সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সরকারী কবি নজরুল কলেজ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, লক্ষ্মীবাজার শাপলা কচি-কাঁচার মেলা, বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস, সীমান্ত খেলাঘর আসর ও অরুন বোস শিশু নাট্যদল। স্বাধীনতা দিবসে ছায়ানটের আয়োজন ॥ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। পরিবেশিত হয় একক ও সম্মেলক কণ্ঠের গান। সঙ্গীতানুষ্ঠান শেষে প্রদর্শিত হয় মানযারে হাসীন মুরাদ নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র ‘এখনো একাত্তর’। ভিকারুননিসা নূন স্কল এ্যান্ড কলেজ ॥ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজে ‘৭১ অবিনাশী সত্তা’ শিরোনামের সংগঠন বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রমনা এলাকার পাঁচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সকালে বেইলি রোডের মূল প্রাঙ্গণে চিত্রাঙ্কন, ভাস্কর্য, কুইজ ও বিতর্ক প্রতিয়োগিতার আয়োজন করে। এরপর মূল অডিটোরিয়ামে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
×