ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রথম শহীদ রিক্সাচালক মোহাম্মদ

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২৭ মার্চ ২০১৭

মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের  প্রথম শহীদ রিক্সাচালক মোহাম্মদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৬ মার্চ ॥ ২৭ মার্চ, ১৯৭১ ঠাকুরগাঁওয়ের স্বাধীনতার পক্ষে জয়বাংলা বলে সেøাগান দেয়ায় হানাদার বাহিনীর গুলিতে প্রাণ দিতে হয় রিক্সাচালক মোহাম্মদ আলীকে। সেদিন শহরে বলবৎ ছিল সান্ধ্য আইন। ২৫ মার্চ ’৭১ গভীর রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ঢাকায় বাঙালীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছিল। পাকবাহিনী নির্বিচারে হত্যা করে বাঙালী পুলিশ, ইপিআর ও ছাত্রসহ সাধারণ মানুষকে। কিন্তু ২৬ এবং ২৭ মার্চ ঠাকুরগাঁওয়ের জনসাধারণ এ ব্যাপারে কোন সংবাদই পায়নি। সান্ধ্য আইন জারি থাকলেও ঠাকুরগাঁওবাসী অন্যান্য দিনের মতো ২৭ মার্চেও খ- খ- মিছিল করে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দেয়। দুপুরে একটি মিছিল জয় বাংলাসহ বিভিন্ন সেøাগান দিতে দিতে এগিয়ে যায় ইপিআর ক্যাম্পের দিকে। আর একটি ছোট মিছিল শহরের কালিবাড়ি মোড়ের সামনে পৌঁছলে দক্ষিণ দিক থেকে ইপিআর বোঝাই একটি লরি এসে থামে। জিপ থেকে নামে ইপিআর উইং কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ হোসেন ও ক্যাপ্টেন নাবিদ আলম। সামনে হানাদার বাহিনীকে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে ছোট মিছিলটি। মিছিলের সামনেই দাঁড়িয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠে, মুখে চাপ দাড়ি মধ্য বয়সের রিক্সাচালক মোহাম্মদ আলী। হানাদার বাহিনীর সামনে বুক ফুলিয়ে মোহাম্মদ আলী বলে ওঠে জয় বাংলা। মেজর মোহাম্মদ হোসেনের ইশারায় হানাদারের রাইফেল গর্জে ওঠে। মুহূর্তে চিৎকার দিয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে মোহাম্মদ আলী। মিছিলের বাকি লোক ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছুটে পালিয়ে যায়। পাকা রাস্তার ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে মোহাম্মদ আলীর লাশ। সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ল মোহাম্মদ আলীর নিহত হওয়ার খবর। ঠাকুরগাঁওয়ের ইতিহাসে হানাদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
×