ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদদের স্মরণ

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৭ মার্চ ২০১৭

বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদদের স্মরণ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জাতির বীর সন্তান শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে রবিবার জাতি বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করে স্বাধীনতা দিবস। স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের কর্মসূচী। এরপর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণীপেশার মানুষের ঢল নামে শহীদ বেদিতে। ফুলে ফুলে ভরে যায় স্মৃতির মিনার। সেখানে সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেয় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি প্রথমে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর একে একে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এমএ সালাম। এছাড়া আওয়ামী লীগ, বিএনপি, কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বাসদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রমৈত্রী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, খেলাঘর আসর, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। দিনভর ছিল মহান স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ আয়োজন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগেও দিবসটি বিশেষ মর্যাদায় পালিত হয়। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমীন, রেঞ্জের ডিআইজি সফিকুল ইসলাম, সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার, পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা এবং জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ছিল বিশেষ আয়োজন। আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনগুলোর উদ্যোগে কর্মসূচী ছিল ব্যাপক। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজন। দিনভর আওয়ামী লীগের কার্যালয়গুলো থেকে বাজানো হয় বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ। এদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয় বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিসে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মসূচীর মধ্যে ছিল সকালে বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও পুরস্কার বিতরণ। কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিকেলে থিয়েটার ইনস্টিটিউটে মহান স্বাধীনতা স্মারক সম্মাননা পদক প্রদান এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিক মেয়র। এছাড়া কর্পোরেশনের উদ্যোগে এবার ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে স্বাধীনতা সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালে চসিক স্বাধীনতা স্মারক সম্মাননা পদকপ্রাপ্তরা হলেন-মুক্তিযুদ্ধে মোখতার আহমদ (মরণোত্তর), স্বাধীনতা আন্দোলনে ভূপতি ভূষণ চৌধুরী (মানিক চৌধুরী, মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় আতাউল হাকিম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ওস্তাদ নীরদবরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর), চিকিৎসায় ডাঃ ফজলুল আমীন (মরণোত্তর), শিশু চিকিৎসায় ড. প্রণব কুমার চৌধুরী, নারী আন্দোলনে বেগম রুনু সিদ্দিকি (মরণোত্তর), সমাজ সেবায় সাফিয়া গাজী রহমান, শিক্ষায় বেগম হাসিনা জাকারিয়া এবং ক্রীড়ায় মোজাম্মেল হক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগেও দিবসটি পালিত হয় ব্যাপক অনুষ্ঠানমালায়। সকালে বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী। রাজশাহী সরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনসমূহে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। ভোরে নগরীর কোর্ট শহীদ মিনারে জেলা পরিষদের পক্ষে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার শ্রদ্ধা জানান। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। এরপর সেখানে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নগরীতে বিশাল শোভাযাত্রা বের করে মহানগর আওয়ামী লীগ। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন দিবসটি বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট ছাড়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালন করা হয় নিজস্ব কর্মসূচীতে। সকালে রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনার ও নগরীর ভুবন মোহন পার্ক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢল নামে হাজারো মানুষের। রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেখানে শ্রদ্ধা জানায় রাজশাহী কলেজ। চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আযাদের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারাও। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে নগরীর ভুবন মোহন পার্ক শহীদ মিনারের বেদি। জেলার প্রতিটি উপজেলায় প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন পালন করে দিনটি। খুলনা সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে পৃথকভাবে স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ, র‌্যালি, আলোচনা সভা, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনাসহ নানা কর্মসূচী আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, প্রেসক্লাব, সিটি কর্পোরেশন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘দুর্বার বাংলা’র পাদদেশে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জিলা স্কুল মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ। পরে সেখানে কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ, পুলিশ কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান এবং পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা। নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়া গোল চত্বরে বিজয় স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রশাসন, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী সংগঠন, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ সর্বস্তরের মানুষ। প্রথমে বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হোসনে আরা বেগম বাবলী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। গাজীপুর জাতির জনকের প্রতিকৃতি ও স্মারক ভাস্কর্যে এবং স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কোরানখানি ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, র‌্যালি, ক্রীড়া ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ দিনভর নানা কর্মসূচী পালিত হয়। জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এসব কর্মসূচীর আয়োজন করে। কুমিল্লা টাউন হল মাঠের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রবিবার প্রত্যুষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক জাহাংগীর আলম, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, হাইওয়ে অঞ্চলের পুলিশ সুপার রেজাউল করিম, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলামুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার, আসাদুজ্জামানসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, জেলা প্রশাসকের বাসভবন শহীদ জেলা প্রশাসক সামসুল হক খান মঞ্চে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও টাউন হলের মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়। ফরিদপুর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর। লক্ষ্মীপুর কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম। টাঙ্গাইল ভোরে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্র্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন ও পুলিশ সুপার মাহবুব আলম। বাগেরহাট স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থী, পুলিশ, আনসার, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট দলের সদস্যরা কুচকাওয়াজের মাধ্যমে জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। শান্তির প্রতিক কবুতর ও বেলুন উড়ানো হয়। বক্তব্য দেন ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন এমপি, এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি, জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়। জামালপুর সকাল আটটায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত এবং জেলা যুব রেডক্রিসেন্ট স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করে। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সদর আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম হীরা। ময়মনসিংহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ আর মরহুম রফিক উদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। রবিবার সকালে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান শহরের পাটগুদাম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে প্রথমে শহীদদের স্মৃতির প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নীলফামারী সর্বপ্রথম পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন। এরপর পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান, জেলা পরিষদের প্রশাসক এ্যাডভোকেট মমতাজুল হক, পৌরসভা মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। নীলফামারী হাইস্কুল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার রজনীগন্ধার স্টিক তুলে দেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে দেয়া রংবেরং-এর বেলুন উড়িয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কুচকাওয়াজের উদ্বোধন করা হয়। সেখানে শারীরিক কসরত ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ করা হয়। গোপালগঞ্জ সকালে শেখ কামাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সরকারী বেসরকারী আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এরপর ওই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় কুচ্কাওয়াজ, ডিসপ্লে, শরীরচর্চা প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক মোখলেসুর রহমান সরকার। দুপুরে ৭১ এর বধ্যভূমি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে (জয় বাংলা পুকুরপাড়) ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মুক্তিযোদ্ধারা। অনুষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ সভা ও মিলাদ-মাহফিল। সংবর্ধণা দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের। স্থানীয় চিত্রবাণী সিনেমা হল ও শেখ রাসেল শিশু পার্কে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদর্শিত হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ। সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিবসটি পালনার্থে শিশুদের জন্য জেলা শিশু একাডেমি আয়োজন করে চিত্রাঙ্কন, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও আল্পনা অংকন প্রতিযোগিতা। শেরপুর রবিবার ভোরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে হুইপ আতিউর রহমান আতিক পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমান, পুলিশ সুপার রফিকুল হাসান গনি, পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। সুনামগঞ্জ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। সকাল সাড়ে ৮টায় স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর পুলিশ, আনসার ও শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করেন এবং জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ সালাম গ্রহণ করেন। বগুড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও মুক্তির ফুলবাড়িতে শহীদদের উদ্দেশে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে পুলিশ বিএনসিসি স্কাউট গাল গাইড কাবসসহ শিশুকিশোরদের কুচকাওয়াজের পর অংশগ্রহণকারীরা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ডিসপ্লে করে। জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয় জেলা প্রশাসন। ঠেঙ্গামারায় বগুড়ার প্রথম শহীদ তোতা মিয়া ও রেলওয়ে স্টেশনের কাছে শহীদদের গণকবরে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ স্কয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে। বগুড়া প্রেসক্লাব আলোচনা সভা, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়ন শিশুকিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। শিশু একাডেমি চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সিনেমা হলে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। কুড়িগ্রাম আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, মিলাদ মাহফিল ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে দিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত শেষে ২০ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলী, জেলা প্রশাসক খান নুরুল আমিন, পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম, সিভিল সার্জন ডাঃ আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। দুপুরে সার্কিট হাউসে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গকে সংবর্ধনা এবং প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় স্বাধীনতার বিজয়স্তম্ভে ‘মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল ভোরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা হয়। শুরুতেই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সেক্টরস কমান্ডার ফোরামের পর পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি, নগর পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপারসহ ব্রজমোহন কলেজ অধ্যক্ষ ও একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। সকাল আটটায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার ইউনুস এমপির নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সকাল সাড়ে আটটায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ গাউস আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। গাইবান্ধা শাহ আবদুল হামিদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন। এ উপলক্ষে শিশু একাডেমির ব্যবস্থাপনায় শিশুকিশোরদের রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, প্রীতি ফুটবল, মহিলাদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচিত্র প্রদর্শন এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি। সম্মানীত অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও জাতীয় পরিষদের সদস্য ওয়ালিউর রহমান রেজা। কুষ্টিয়া দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে ছিল ভোরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভে সর্বস্তরের মানুষের পুষ্পস্তবক অর্পণ, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, বিভিন্ন সরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, কুচকাওয়াজ ও বিশেষ মোনাজাত। সকালে স্টেডিয়ামে শিশুকিশোরদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি পালন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। পাবনা জেলা প্রশাসক রেখা রানীর বালোর নেতৃত্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ দুর্জয় পাবনায় শহীদ স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, গণশিল্পী সংস্থা, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দুর্জয় পাবনায় শহীদ স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অপর্ণ করে। ঝালকাঠি পুরাতন স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজে জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে পুলিশ সুপার জোবায়েদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। কুচকাওয়াজ শেষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের ডিসপ্লে­প্রদর্শন করা হয়। মাগুরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকাল সাড়ে ৬টায় শহরের নোমানী ময়দানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন সরকারী দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা আইনজীবী সমিতি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। খাগড়াছড়ি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। শুরুতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর শরণার্থী পুনর্বাসনবিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। হবিগঞ্জ ‘দুর্জয়’ হবিগঞ্জে এমপি আবু জাহির, জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম ও এসপি জয়দেব কুমার ভদ্র, সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সেকেন্ড ইন কমান্ড মরহুম জেনারেল এম এ রব, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও ভাষাসৈনিক মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীসহ ’৭১-এর বীর সেনানী ও শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া পাঠ করা হয়। নওগাঁ রবিবার নওগাঁয় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিটে ৩১ বার তোপধ্বনির পর শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচী শুরু হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিভিল সার্জন অফিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকালে স্টেডিয়ামে স্বেচ্ছায় রক্তদান, কুচকাওয়াজ, সালাম গ্রহণ, ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কালেক্টরেট সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান, পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মোঃ মহিউদ্দীন ও পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে পুলিশ, বিএনসিসি ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সমম্বয়ে দৃষ্টিনন্দন কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা প্রদর্শনী ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। সালাম গ্রহণ করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক, সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, স্বাধীনতা দিবস টেনিস টুর্নামেন্ট, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিরাজগঞ্জ মুক্তির সোপানে শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়। রাষ্ট্রের পক্ষে সর্বপ্রথম পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসন। এরপর পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ, বিচার বিভাগ, আওয়ামী লীগ, জাসদ, জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারী-বেসরকারী ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। শহীদ শামসুদ্দিন স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক কামরুন্নাহার সিদ্দিকা ও পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিভিন্ন সংগঠনের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজে শেষে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ডিসপ্লে প্রর্দশন করে। মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সংবর্ধনা জাতির সুখ সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। মৌলভীবাজার শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠন, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, জাপা, সিপিবি, বাসদ, বিএমএ, মৌলভীবাজার পাবলিক লাইব্রেরি, জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। নরসিংদী শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, মোছলেউদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামান্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, মুক্তিযোদ্ধা, যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনা এবং প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস। ঠাকুরগাঁও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্থানীয় স্মৃতিসৌধ অপরাজেয় ’৭১-এর পাদদেশে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। রবিবার সকাল ৬টায় পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি, জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল, পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে এবং পরে একে একে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উদীচীসহ সরকারী, বেসরকারী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। ঝিনাইদহ রবিবার সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল কমির মিন্টুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ও জেলা জাপার সভাপতি ড. এম. হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) পৃথক র‌্যালি করে শহীদ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিপিবি, জাতীয় পার্টি, উদীচী, স্বাবলম্বী, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শতদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকাল ৮টায় মোক্তারপাড়া মাঠে অনুষ্ঠিত হয় কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠান। বেলা সাড়ে ১১টায় পাবলিক হলে অনুষ্ঠিত হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা। এছাড়াও দিনের বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শনী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রাঙ্গামাটি দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক মানজারুর মান্নান, পুলিশ সুপার সাঈদ তারেকুল হাসান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, উন্নয়ন বোর্ড ভাইস চেয়ারম্যান তরুর কান্তি ঘোষ। পরে মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দিপংকর তালুকদারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
×