ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কংগ্রেসের সমর্থন প্রত্যাশা

এবার কর সংস্কারের উদ্যোগ ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৩:১৩, ২৭ মার্চ ২০১৭

এবার কর সংস্কারের  উদ্যোগ ট্রাম্পের

ওবামাকেয়ার নামে পরিচিত এ্যাফোর্ডেবল হেলথকেয়ার এ্যাক্ট বাতিলের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন কর সংস্কার কর্মসূচীর দিকে নজর দিতে চার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রস্তাবিত স্বাস্থ্যসেবা বিলটি শুক্রবার প্রতিনিধি পরিষদে ভোটাভুটিতে দেয়ার আগে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। কারণ, বিলটি পাস করানোর মতো প্রয়োজনীয় ভোট যে পাওয়া যাচ্ছে না সেটি আগেই নিশ্চিত হয়ে যায়। খবর বিবিসি অনলাইনের। ওবামাকেয়ার বাতিলের চেষ্টা ব্যর্থ হওযা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একে একটি বড় আঘাত। তিনি এ বিষয়ে নিজ দলের মধ্যেই পুরোপুরি সমর্থন পাননি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নামার পর থেকেই ট্রাম্প বলে আসছিলেন তিনি ক্ষমতায় আসলে ওবামাকেয়ার অকার্যকর করে দেবেন। শুক্রবার ট্রাম্প ও তার অর্থমন্ত্রী স্টিভ মেনুচিন বলেন, তারা নতুন কর পরিকল্পনায় কংগ্রেসের সমর্থন প্রত্যাশা করছেন। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কর ছাড় ও কর ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে খুব শীঘ্রই শক্তিশালী অবস্থান নিতে যাচ্ছি। এটাই হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।’ মেনুচিন আশা প্রকাশ করে বলেন, কর ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে কংগ্রেসে বিল পাস করানো খুব কঠিন হবে না। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যনীতি এক জটিল বিষয়। তুলনামূলকভাবে কর ব্যবস্থার সংস্কার একটি সহজ প্রক্রিয়া।’ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার বলেন, ‘কর ব্যবস্থার সংস্কারে প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ তবে তা আগস্টের মধ্যে সম্ভব হবে এমন আশা করা কিছুটা উচ্চাভিলাষী হয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। নতুন কর ব্যবস্থায় ২০ শতাংশ আমদানি কর ধার্য করার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটো দিকই আছে বলে জানান মেনুচিন। নতুন কর ব্যবস্থায় কর্পোরেট খাতে বর্তমানের ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। তবে এটি কি পরিমাণ কমানো হবে তার বিস্তারিত জানানো হয়নি। তিনি আরও জানান, প্রস্তাবিত কর ব্যবস্থায় মধ্য আয়ের লোকজনের কথাও বিবেচনায় রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য মধ্য আয়ের জনগণকে কর ছাড় দেয়া। উচ্চ আয়ের লোকজন এর আওতায় পড়বে না।’ কর ব্যবস্থার সংস্কারের ফলে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী আর্থিক প্রবৃদ্ধি ৩ থেকে ৩.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন মেনুচিন। বাণিজ্য নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প অবশ্যই শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে। কিন্তু তিনি তার আগে পুরো চুক্তি খতিয়ে দেখতে চান।’ এ জন্য নাফটা ও টিপিপি থেকে সরে আসলেও ওইসব অর্থনৈতিক জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ট্রাম্প আলোচনা করছেন বলে মেনুচিন জানান। ওবামাকেয়ার বাতিল হবেই দাবি করে তিনি শনিবার ফের টুইট করেন। ট্রাম্প বলেন, ‘জনগণের জন্য একটি ভাল স্বাস্থ্যসেবা আইন প্রণয়ন করতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ ওবামাকেয়ার বীমা’র প্রিমিয়াম বাড়িয়েছে। এর ফলে বিপুলসংখ্যক নিম্ন আয়ের লোকজনকে করের অর্থ গুনতে হচ্ছে। ওবামাকেয়ার বাতিলের চেষ্টা এখন কার্যত পরিত্যক্ত। এই ঘটনা ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের জন্য বাজেট তৈরিতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কঠিন হয়ে উঠতে পারে কর সংস্কার কর্মসূচীও। কংগ্রেসের বাজেট অফিসের হিসাব অনুযায়ী ওবামাকেয়ার বহাল থাকা অবস্থায় আগামী এক দশকে সরকারের রাজস্ব আয় হবে ৪১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার। ওবামাকেয়ার প্রতিস্থাপনের যে উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসন নিয়েছিল সেটি বাস্তবায়িত হলে এই সময়ের মধ্যে সরকারের রাজস্ব ১ ট্রিলিয়ন ডলার কমে যেত। কারণ সে ক্ষেত্রে ওবামাকেয়ার সংশ্লিষ্ট কর রাজস্ব থাকত না। রাজস্ব ঘাটতি যেটুকু হতো তা পুষিয়ে নেয়ার জন্য কংগ্রেসেরে রিপাবলিকান সদস্যরা অন্যান্য কাতে সরকারী ব্যয় সংকোচনের কথা বলেছেন।
×