ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদকবিরোধী অভিযানে নিজ হাতে হত্যা করে যার আনন্দ!

দুতের্তে-বেপরোয়া কিশোর থেকে স্ট্রংম্যান

প্রকাশিত: ০৩:১৩, ২৭ মার্চ ২০১৭

দুতের্তে-বেপরোয়া কিশোর  থেকে স্ট্রংম্যান

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রডবিগো দুতের্তে এখন বিশ্বে মাদক বিরোধী স্ট্রংম্যান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট দুতের্তে মাদক বিরোধী অভিযানে যেন হত্যাকারীর আমেজ উপভোগ করতে চান। তিনি নিজ হাতে অপরাধীকে হত্যা করতে গর্ববোধ করেন। তিনি তাদের গণহারে হত্যার জন্যও আহ্বান জানান কখনও কখনও। তিনি মাদকাসক্তদের সম্পর্কে বলেন, তারা ফিলিপিন্সকে ধ্বংস করছে। তাদের হত্যায় আমি আনন্দ অনুভব করব। দুতের্তে ও তার বন্ধুরা তার ক্ষেপাটে দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার এ আচরণের প্রকৃষ্ট নজির হচ্ছে এক মাদক সম্রাটকে হেলিকপ্টার থেকে ছুড়ে ফেলা এবং এক পর্যটককে ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করায় বন্দুকের নলের মুখে সিগারেটের অদগ্ধীভূত প্রাপ্ত বা গোড়া অংশ খেতে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে এটা এক ধররের ‘গু-ামি ভাবমূর্তি’ যা দুতের্তে গড়ে তোলেছেন। দুতার্তে যা বলছেন তা তিনি করেছেন কিনা এবং হত্যাকা-গুলো সংঘটিত করেছেন কিনা তা যাচাই করা সম্ভব নয়। প্রথমদিকে তিনি মেয়র হিসেবে, বর্তমানে ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাজার হাজার লোককে দায়মুক্ত হত্যার জন্য পুলিশ ও প্রহরীদের উৎসাহিত করেছেন। তিনি তার নির্মম বিচার ও রূঢ় আচরণের জন্য ফিলিপিন্সের বাইরেও ব্যাপক নিন্দা করলেও তার ক্ষমতায় আরোহণ এবং ঘনিষ্ট অনেকের সঙ্গে তার সাক্ষাতকার থেকে বোঝা যায় যে, তিনি হচ্ছেন বহুবিধ পরস্পর বিরোধী প্রকৃতির অদ্ভুত মিশেল। তিনি অপমানজনক মন্তব্য ও অযৌক্তিক আচরণের জন্য অনেকের সঙ্গে তার সম্পর্কচ্যুত হলেও তিনি জনপ্রিয় হয়ে আছেন অস্বাভাবিকভাবে। তিনি একজন মাদক বিরোধী ক্রুসেডার। তিনি এক প্রাদেশিক গবর্নরের সন্তান। বেড়ে উঠেছেন সমৃদ্ধির মধ্যে। তারপরও ছেলেবেলায় তাকে পেটানো হতো নিয়মিত। তার মা তাকে অশোভন আচরণের জন্য পেটাতেন প্রায়ই। এ কথা বলেছেন, তার ভাই ইমানুয়েল দুতের্তে। গির্জা-সম্পৃক্ত স্কুলে যাজকদের হাতে তিনি বেত্রাঘাতের শিকার হয়েছেন। গির্জার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, একজন তাকে নিগৃহীত করেছে। কিশোর বয়সে তিনি রাস্তায় কলহপ্রিয় ছেলে বলে পরিচিত ছিলেন। ইমানুয়েল দুতের্তে বলেছেন। দুতের্তে বাড়িতে সহিংস ছিলেন। স্কুলে সহিংস ছিলেন, সহিংস ছিলেন প্রতিবেশে। এ কারণেই বোধ হয় সব সময় তিনি রেগে থাকেন। কারণ, উঠতি বয়সে কেউ এ ধরনের যন্ত্রণার শিকার হলে তিনি ক্রোধ পোষণ করবেন সব সময়। অনেক বছর পর ১৯৯৮ সালে তার বিয়ের জন্য প্রস্তুত এক মনস্তাত্ত্বিক মূল্যনিরূপণে উল্লেখ করা হয়, তার ছিল আত্মকাম ব্যক্তিত্বসুলভ মানসিক সমস্যা। তা সত্ত্বেও তার সাবেক স্ত্রী গত বছর তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় প্রচার কাজ চালিয়েছেন। দাভাও শহরের মেয়র থাকার সময় অনেকের প্রয়োজনে তার পকেট উজার করে দিয়েছেন এবং নগদ অর্থ দিয়েছেন তাদের। অনেকের কাছে তার অশিষ্ট বিদ্রƒপ জনমানুষ হিসেবে তার অকৃত্রিমতাই প্রকাশ পায়। তিনি জনসমক্ষে আসলে তার পাশে ভিড় জমে যায় শ্রদ্ধাশীল ভক্তদের। -নিউইয়র্ক টাইমস।
×