ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় আন্তঃস্কুল ও আন্তঃজেলা নাট্যোৎসবের সমাপনী

প্রকাশিত: ০৩:১১, ২৭ মার্চ ২০১৭

বগুড়ায় আন্তঃস্কুল ও আন্তঃজেলা নাট্যোৎসবের সমাপনী

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের অন্যতম নাট্য সংগঠন বগুড়া থিয়েটার, লিটল থিয়েটার ও ভোর হলো বগুড়ার আয়োজনে আট দিনব্যাপী ‘আন্তঃস্কুল ও আন্তঃজেলা নাট্যোৎসব ২০১৭’ শেষ হয়েছে। ‘বালক প্রাণে আলোক জ্বালো, নাট্য মঞ্চ জাগিয়ে তোলো’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিনকে উপলক্ষ গত ১৭ মার্চ ওই নাট্যোৎসব শুরু হয়। শেষ হয় ২৪ মার্চ শুক্রবার। উৎসবে বগুড়া থিয়েটারের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কলেজ থিয়েটার সহযোগিতা করে। কলেজ থিয়েটারের নাট্যকর্মীরা ১৬টি নাটকের নির্দেশনা দেয়। তরুণ নির্দেশকদের নিয়ে এরই মধ্যে একটি বিশেষ কর্মশালা করারও ঘোষণা দিয়েছে বগুড়া থিয়েটার। উৎসবে প্রতিদিন বিকেল থেকে স্কুলপড়ুয়া নাট্যকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয় পুরো মিলনায়তন। নিয়মিতভাবে প্রতিদিন আলোচনা সভায় অংশ নেন বগুড়ার সংস্কৃতজন, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং সরকারী কর্মকর্তারা। যা নাট্যোৎসবকে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। তাদের আলোচনায় নানা প্রতিবন্ধকতার চিত্রও উঠে আসে। শিক্ষার্থীরা অতি মাত্রায় কোচিং ও প্রাইভেটমুখী হওয়ায় সময়ের অভাবে নাট্যচর্চাসহ সব ধরনের সহ-শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিমুখ হচ্ছে। ফলে বোধহীন নতুন প্রজন্ম বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। জঙ্গীবাদ, মাদক সেবন, সামাজিক অপরাধ, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ হিসেবে তারা আকাশ সংস্কৃতির স্রোতে গা ভাসানো এবং বিকাশমান সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার অভাবকেই দায়ী করেছেন। শিশুদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের পরিবেশ গড়ে তোলা সকল নাগরিকের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। আলোচকরা শঙ্কা প্রকাশ করেন এ দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে স্কুলপড়ুয়ারাও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন উৎসর্গ করেছে মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কিন্তু বর্তমানে দেশ কোনভাবে আক্রান্ত হলে স্কুলপড়ুয়াদের বিবেককে নাড়া দেবে না দেশের ক্রান্তিলগ্নে তারা এগিয়ে আসবে না। পঞ্চম বারের মতো আয়োজিত আন্তঃস্কুল নাট্যোৎসবে বগুড়ার ২৬টি স্কুল ও সংগঠনের প্রায় পাঁচ শ’ নবীন নাট্যকর্মী অংশ নেয়। এ ছাড়া আন্তঃজেলা নাট্যোৎসবে ঢাকার মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের ‘নীলাখ্যান’, কলকাতার রবীন্দ্রনগর নাট্যায়ুধ ‘ছৌ ম্যাকবেথ’, নাট্যলোক সিরাজগঞ্জ ‘নারী নসিমন’, পাবনা ড্রামা সার্কেল ‘সাইলক এ্যান্ড সিকোফেন্টস’, রংপুর নাট্যকেন্দ্র ‘মেরাজ ফকিরের মা’, দিনাজপুরের আমাদের থিয়েটার ‘ক্ষত বিক্ষত’ এবং বগুড়া থিয়েটার ‘বাসন’ ও ‘দ্রোহ’ নাটক মঞ্চায়ন করে। এরই মধ্য দিয়ে প্রায় ৬০০ নাট্যকর্মীর মিলনমেলার সমাপ্তি ঘটে। প্রত্যেক দলকে উৎসব স্মারক প্রদান করা হয়। শেষ দিনে ক্ষুদে নাট্যকর্মীদের হাতে তুলে দেয়া হয় সার্টিফিকেট। আন্তঃস্কুল ও আন্তঃজেলা নাট্যোৎসবে মোট ৩৪টি নাটক মঞ্চায়িত হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে আন্তঃস্কুল নাট্যোৎসবের নাটক এবং সন্ধ্যা ৭টায় আন্তঃজেলা নাট্যোৎসবের নাটক মঞ্চায়িত হয়েছে। আন্তঃজেলার নাটক দর্শনীর বিনিময়ে হলেও আন্তঃস্কুলের নাটকগুলো ছিল উন্মুক্ত। উৎসবে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়েছিল এটিএন বাংলা।
×