ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব নাট্য দিবসে সংস্কৃতি কর্মীদের ভাবনা

প্রকাশিত: ০৩:১১, ২৭ মার্চ ২০১৭

বিশ্ব নাট্য দিবসে সংস্কৃতি কর্মীদের ভাবনা

‘বিশ্ব নাট্য দিবস’ আজ। হেলসিংকিতে ১৯৬২ সালে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর ২৭ মার্চ বিশ্ব নাট্য দিবস পালিত হয়। বিশ্বের সব দেশের নাট্যকর্মীদের মধ্যে ঐক্য স্থাপন, সম্প্রীতি, উদ্দীপনা সৃষ্টি ও নাটকের উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে এ দিবসটি পালন করা হয়। ঢাকার আইটিআই কেন্দ্রের উদ্যোগে ১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশে ‘বিশ্ব নাট্য দিবস’ পালন শুরু হয়। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে আইটিআই ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘বিশ্ব নাট্য দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই ধারাবাহিকতায় এবারও ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (বাংলাদেশ কেন্দ্র), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ সম্মিলিতভাবে এ দিবসটি উদ্যাপন করবে। বিশ্ব নাট্য দিবসকে সামনে রেখে ফরাসী খ্যাতিমান অভিনেত্রী ইজাবেল হুপেয়ার এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত অভিনেতা-নাট্যনির্দেশক লেখক আতাউর রহমান এ বছর পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করেছেন। এই দিবসটিকে কেন্দ্র করে দেশের খ্যাতিমান নাট্যজনের বক্তব্য নিয়ে এ আয়োজন করছেন গৌতম পা-ে ড. ইনামুল হক : বিশ্ব নাট্য দিবস এখন সারা পৃথিবীতে একটি উৎসবমুখর দিন হিসেবে পালিত হচ্ছে। মানুষের অবচেতন মনে চেতনার সঞ্চার করাই হচ্ছে নাটক। নানা অশান্তি ও অশুভর বিরুদ্ধে নাট্যকর্মীরা সব সময় সোচ্চার। নাট্যকর্মীদের একটি প্রতিবাদের দিন হিসেবে আমি দিনটিকে মনে করি। মন্দকে বিতাড়িত করে ভালকে প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয় নিতে হবে বিশ্ব নাট্য দিবসে। মানবতার জন্য আজীবন লড়াই করে যেতে হবে নাট্যকর্মীদের। সুন্দরের পথে, আলোকের পথে সকল নাট্যকর্মীদের একই সুরে সুর মেলানোর দিন বিশ্ব নাট্য দিবস। লাকী ইনাম : বিশ্ব নাট্য দিবস হচ্ছে সকল নাট্যকর্মীদের প্রাণের দিবস। থিয়েটারকে নিয়ে একটি বিশেষ দিন, আমাকে সব সময়ই প্রণোদনা দেয়। আমার প্রতিটি নাটকে যে বক্তব্য দেই, তাতে সবসময়ই আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য আছে। সবসময়ই নাটকে মানবতা, শান্তি, সৃষ্টিশীলতা, স্বাধীনতার কথা উল্লেখ থাকে। এসব অসাধারণ কথা বলার জন্য নাটক একটি অসাধরণ ক্ষেত্র। সে জন্য এ দিবসটিতে আমি আমাদের মনের দিবস হিসেবে মনে করি। থিয়েটারের মাধ্যমে আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে, যুদ্ধ নয়-শান্তি, মানুষে-মানুষে দূরত্ব নয়-নিকটত্ব। মান্নান হিরা : পৃথিবীর সমস্ত নাট্যকর্মীদের জন্য বিশেষ একটি দিন ‘বিশ্ব নাট্য দিবস’। এদিন নাট্যকর্মীরা একে অপরের সঙ্গে ভাব বিনিময় করে। নাটক নিয়ে অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যতের কথা বলাবলি করে। নাট্যকর্মীদের মিলন ক্ষেত্র তৈরি হয় এদিন। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি যথাযথভাবে পালিত হয়। আমি মনে করি এ দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি এ দিবসটির সাফল্য কামনা করি। মীর জাহিদ : ‘বিশ্ব নাট্য দিবস’ মূলত নাট্যকর্মীদের একটি বিশেষ দিবস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়। এ দিনটিকে ঘিরে আমি বলতে চাইÑ আমাদের দেশের নাট্যকর্মীরা কিভাবে নাটক নিয়ে জীবনধারণের স্বপ্ন দেখতে পারে এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আশা করি। যে শ্রম ও ঘাম ঝরিয়ে দিনের পর দিন দেশের নাটককে বাঁচিয়ে রাখছেন শিল্পীরা, সেই তুলনায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা তারা পাচ্ছেন না। আমাদের নাটক যাতে আরও উন্নত হয়, এদেশের নাট্যকর্মীরা যাতে আরও উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে নাটক করতে পারে সেজন্য সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। আহমেদ গিয়াস : বিশ্ব নাট্য দিবস নাট্যকর্মীদের মিলনের দিন। এদিনে আমরা সবাই একত্রে মিলিত হবো। এ দিনে আমাদের দৃঢ় প্রত্যয় নিতে হবে, দেশের প্রতিটি শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জে পাড়া মহল্লায় জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে নাটক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা- নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আখতারুজ্জামান : সারা বিশ্বের নাটকের মানুষের দিন ‘বিশ্ব নাট্য দিবস’। এ দিনে আমাদের অঙ্গীকার করা উচিত-নাটক ও সুস্থধারার সাংস্কৃতিক বলয় তৈরি করে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আমি মনে করি সংস্কৃতি বিকাশের মধ্য দিয়ে এ জঙ্গীবাদসহ সকল অপশক্তির নির্মূল সম্ভব। মোমেনা চৌধুরী : আজকের দিনে সকল নাট্যকর্মী ও নাট্যপ্রেমীদের আমার শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। এই দিনে আমি বলতে চাই-জীবনের শেস দিন পর্যন্ত যেন থিয়েটার করতে পারি। আমি আশা করছি আগামী দিনে আমাদের থিয়েটারে আরও ভাল ভাল অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক যুক্ত হবে।
×