ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীবাদ নির্মূল করতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ২৬ মার্চ ২০১৭

জঙ্গীবাদ নির্মূল করতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গীবাদ নির্মূল করতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে জঙ্গীবাদ প্রতিহত করতে হবে। শনিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের ওপর যুবদল আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জঙ্গীবাদকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবেন না। জঙ্গীবাদের সঠিক সত্য বের করুন, কারা এ জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত এবং মদদ দিচ্ছে তা উদ্ঘাটন করুন। তিনি বলেন, দেশে গত এক সপ্তাহে তিন-চারটি ঘটনা ঘটেছে, আত্মঘাতী বোমা হামলাও হয়েছে। অথচ সরকার এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন বক্তব্য নিয়ে আসছে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো একেক সময় একেক রকমের বক্তব্য দিচ্ছে। আমারা দেখতে পেয়েছি শুক্রবার আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা সম্পর্কে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দেয়া হয়েছে। কাজেই প্রশ্ন থেকে যায়, যে মানুষটি আত্মঘাতী বোমায় নিহত হলো সে কি নিহত হওয়ার জন্যই আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে? তাই এ ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য বক্তব্য না এলে জনগণের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হবেই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, সরকার আসলে জঙ্গীবাদ সমস্যার সমাধান করতে চায় না। তারা এটাকে জিইয়ে রেখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। তিনি বলেন, দেশে জঙ্গী হামলার মতো কিছু ঘটলেই প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে দোষারোপ করেন। এটা ভয়াবহ একটি প্রবণতা। এ প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। আর অনুসন্ধান বা সঠিক তদন্ত না করে যদি প্রথমেই এ ধরনের উক্তি করা হয় এবং যাদের জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে হত্যা করা হয় তাহলে কোনদিনই সত্য উদ্ঘাটিত হবে না। ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে একাত্তরে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সারা জাতিকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি যদি ওই দিন যুদ্ধের ঘোষণা না দিতেন, তবে কবে যুদ্ধ শুরু হতো তা বলা মুশকিল ছিল। রাষ্ট্র পরিচালনায় জিয়াউর রহমান সফল ছিলেন বলে আন্তর্জাতিকভাবে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের আগুন ইচ্ছাকৃত কি-না এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ভবনের যে তলায় বৈদেশিক রিজার্ভের ডকুমেন্ট থাকে, সেখানেই আগুন লেগেছে। তাই সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে, ডকুমেন্ট নষ্ট করার জন্য এ আগুন ইচ্ছাকৃত কি-না। কারণ সবার মনে আছে, কিছুদিন আগে বৈদেশিক রিজার্ভের প্রায় আট শ’ কোটি টাকা হ্যাক করে নিয়ে চলে গেল। সেটা নিয়ে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কোন রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি। পত্র-পত্রিকায় খবরে যা দেখেছি তাতে এর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোকেরা জড়িত। অনেক সময় শোনা যায় আরও বাইরের কেউ জড়িত থাকতে পারে। অথচ এটা জনগণের সামনে পরিষ্কার করে বলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মাসের পরপরই ভারত সফরে যাচ্ছেন। আমরা আশাবাদী ছিলাম আমাদের পানি সমস্যা সমাধানের এজেন্ডা দেখতে পাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমারা তা দেখছি না। আমরা জানি না প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কী বিষয়ে আলোচনা হবে, কী চুক্তি হবে, কোন্ সমঝোতা স্মারক হবে। আমরা কি ভারতকে সহায়তা করতে নাকি আমাদের সমস্যা সমাধান করতে যাচ্ছি? পত্র-পত্রিকায় দেখছি তিস্তার পানি চুক্তি হওয়ার কোন রকম সম্ভাবনা নেই। তাহলে কী জন্য ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী? আলোচনায় এসেছে সামরিক চুক্তি। অতীতের অভিজ্ঞতা এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সামরিক চুক্তি বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত নয় এবং এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। আর বিএনপি এ কারণেই বারবার বলছে, এখনও বলছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্রবিরোধী কোন চুক্তি এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না।
×