ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বক্তৃতা

২৫ মার্চের রাতেই ঢাকায় ৯০ হাজার মানুষ হত্যা করে পাকিরা

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৬ মার্চ ২০১৭

২৫ মার্চের রাতেই ঢাকায় ৯০ হাজার মানুষ হত্যা করে পাকিরা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, ’৭১-এর ২৫ মার্চ রাতেই ঢাকায় প্রায় ৯০ হাজার মানুষ হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। ধর্মের নামে তারা নির্বচারে মানুষ হত্যা করেছিল। ইতিহাসে স্থান পাওয়া ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তিমুরের গণহত্যার চেয়েও ভয়াবহ ২৫ মার্চের গণহত্যা। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি আদায়ে আমরা কাজ করছি। তিনি বলেন, ইয়াহিয়া খানের বক্তব্য ছিলÑ মানুষ চাই না, ভূমি চাই। তাদের অনুসারীরা এখনও ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করে চলেছে। তারা একই সুরে কথা বলে। তেজগাঁও সিএসডি চত্বরে স্বাধীনতা স্তম্ভ ‘বিজয় ’৭১’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শনিবার সকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, ’৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে গাজীপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার মানুষ হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনী। ’৭১ দেখা মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে বিকৃত ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার পর আমরা পাঠ্য বইয়ে সঠিক ইতিহার সংযোজন করেছি। আগে ইতিহাসে ছিল, হঠাৎ করে একজন এসে স্বাধীনতার ঘোষণা করল, আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। এমন ইতিহাস আগে পড়ানো হয়েছে। এমনকি জাতির জনক শেখ মুজিব সম্পর্কে সঠিক কোন ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানানোর চেষ্টা করা হয়নি। ’৫২ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে কিভাবে তিনি জাতির জনক হলেন, তার ৭ মার্চের ভাষণ কোন কিছুই ইতিহাসে স্থান পায়নি। এগুলো নতুন প্রজন্মকে জানতে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ২৫ মার্চ রাতে শুধু ঢাকায় ৫০ হাজার মানুষ হত্যা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, পিলখানা, মোহাম্মদপুরসহ এমন কোন এলাকা ছিল না যেখানে তারা হামলা করেনি। রেললাইনের পাশে, বস্তিতে আগুনে দিয়েছিল, যারা আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচতে ছুটে বের হয়েছিল তাদের গুলি করে হত্যা করেছিল। গাজীপুর থেকে নারায়নগঞ্জ পর্যন্ত এক রাতে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ হত্যা করা হয়। ঢাকার নয়াবাজার, ইংলিশ রোড, চকবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। পাক হানাদাররা সোনার দোকান লুট করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঢাকা শহরের মানুষ বুড়িগঙ্গা পার হয়ে কেরানীগঞ্জে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে পাক সেনারা বুড়িগঙ্গা নদী থেকে সেল নিক্ষেপ করে। ২৫ মার্চ রাত থেকে পাক হানাদাররা ইতিহাসের জঘন্নতম গণহত্যা শুরু করে। দীঘ নয় মাস পর্যন্ত চালায়। যুদ্ধ যখন প্রায় শেষ তখন (১১ থেকে ১৪ ডিসেম্বর) দেশকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবী হত্যা করে। এগুলো যারা অস্বীকার করে তারা জ্ঞানপাপি। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তিমুরের গণহত্যার চেয়েও ভয়াবহ ২৫ মার্চের গণহত্যা। অথচ ইতিহাসে আমাদের এই গণহত্যাকে সেভাবে স্থান দেয়া হয়নি। আমরা চাই ’৭১-এর এই গণহত্যা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাক। সে লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি তা সফল হবেই। তেজগাঁও সিএসডি চত্বরে স্বাধীনতা স্তম্ভ ‘বিজয় ৭১’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য সচিব কায়কোবাদ হোসেন, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান, অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল হালিমসহ উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
×