ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের রানের রেকর্ড

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২৬ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশের রানের রেকর্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশের মাটিতে সাম্প্রতিক সময়ে যে কোন দলের জন্যই কঠিন প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। মাঝে টানা ৬টি ওয়ানডে সিরিজও জিতেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। কিন্তু বিদেশের মাটিতে ভাল করাটাই চ্যালেঞ্জ। এমনটাই ক্রিকেট বিশ্লেষকরা দাবি করে জানিয়েছেন প্রমাণ করতে হবে বাংলাদেশকে। শনিবার ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে রানের রেকর্ডই করে ফেলল বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে সর্বাধিক দলীয় ইনিংস গড়ে তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি এবং সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমানের জোড়া অর্ধশতকে ভর দিয়ে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩২৪ রান করে বাংলাদেশ। এটি বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস। আর সার্বিকভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। টস জিতেই আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। সফলতাও দ্রুত তুলে নিয়েছিল তারা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই সৌম্য সরকারের উইকেট শিকার করেন সুরাঙ্গা লাকমাল। মাত্র ১০ রানে ফিরে যান তিনি। শুরুর এ ধাক্কাটাকে পাত্তাই দেননি বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ও মারকুটে ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। তামিম কিছুটা ধীরস্থির থাকলেও সাব্বির ছিলেন লঙ্কান বোলারদের কড়া শাসনে সিদ্ধহস্ত। দ্রুত রান তুলতে থাকেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে গড়ে ওঠে ৯০ রানের জুটি। আর এতে করেই মজবুত এক ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ দল। সাব্বির অবশ্য উপুল থারাঙ্গার দুর্দান্ত এক ক্যাচে সাজঘরে ফিরলে জুটি ভাঙ্গে। আউট হওয়ার আগে সাব্বির ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি করে ফেলেন। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে লঙ্কান বোলারদের জন্য বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মাত্র ৫৬ বলে ৫৪ রানের ইনিংসে চারই ছিল ১০টি। সাব্বির বিদায় নেয়ার পরই হুট করে বিপদ নেমে আসে। ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহীম (১) পরের ওভারেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন। ঘনিয়ে আসা বিপদ টের পেতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু সেটাকে ঘনীভূত হতে দেননি তামিম ও সাকিব। চতুর্থ উইকেটে দুর্দান্ত খেলেছেন তারা। লঙ্কান বোলারদের গলদঘর্ম করে ১৪৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন দু’জনে। দু’দলের খেলা ওয়ানডে লড়াইয়ে এটি চতুর্থ উইকেটে সেরা জুটির রেকর্র্ড। আগেরটি ছিল ১৩৯ রানের, দখলে ছিল শ্রীলঙ্কার। তাদের এ জুটিতেই বিশাল সংগ্রহের পথ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এ ম্যাচে মাত্র ১ রান দরকার ছিল তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করার জন্য। তিনি হাঁকিয়ে দেন সেঞ্চুরি। অর্ধশতক হাঁকানোর পর বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন সাকিব। কিন্তু লাকমালকে দুর্দান্ত এক ছক্কা হাঁকানোর পরই সান্দাকানের বলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৭১ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৭২ রান করেছিলেন তিনি। দারুণ এ জুটি ভাঙ্গার পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তামিমও। তিনি ১৪২ বলে ১৫ চার ও ১ ছক্কায় ১২৭ রান করে বিদায় নেন। ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি হাঁকানো তামিমের এটি বিদেশের মাটিতে তৃতীয় এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় শতক। এর আগে শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই তার দুটি সেঞ্চুরি ছিল। লঙ্কানদের বিরুদ্ধে দুটি শতকই তিনি হাঁকালেন তাদের মাটিতে। তামিমের রান ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন ৫২৪৭। তিনি এর মাধ্যমে ওয়ানডেতে রান করার দিক থেকে ছাড়িয়ে গেছেন গৌতম গাম্ভীর, গর্ডন গ্রীনিজ, মিসবাহ-উল-হক ও রোশন মহানামাদের। আর প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিন ফরমেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছুঁয়েছেন ১০ হাজার রানের মাইলফলকও। তামিম বিদায় নেয়ার পর তরুণ ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ৯ বলে ২৪ রানের ঝড়ে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ৩২৪ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। এর আগে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২৬৫ রান করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। আর বিদেশের মাটিতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে পরে ব্যাট করতে নেমে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪ উইকেটে ৩২২ রান করেছিল বাংলাদেশ দল। সার্বিকভাবে অবশ্য ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ৬ উইকেটে ৩২৯! ২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল সেটি ঢাকায় করেছিল বাংলাদেশ দল। তবে ডাম্বুলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১০ সালে ৭ উইকেটে ৩৮৫ রান তুলেছিল পাকিস্তান। সেটাই সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশের করা এ সংগ্রহটা দ্বিতীয় স্থানে এ ভেন্যুর।
×