ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চিতলমারীতে বধ্যভূমির সন্ধান

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৬ মার্চ ২০১৭

চিতলমারীতে বধ্যভূমির সন্ধান

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর চিতলমারীতে বধ্যভূমির সন্ধান মিলেছে। ’৭১ সালে পাকবাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের অনেক ঘটনা উঠে এসেছে এখান থেকে। এখানে আশ্রয় নিতে আসা অসংখ্য নিরীহ লোককে সেদিন হত্যা করা হয়েছিল, যা এতদিন অনেকের কাছে অজানা ছিল। এখানে সেদিন যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের অনেকের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের বাংলা ৫ আষাঢ় রবিবার বেলা ১১টার দিকে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা মিলে এলাকায় হামলা চালায়। বলেশ্বর নদী দিয়ে গানবোটযোগে তারা প্রবেশ করার পথে নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় গুলির আওয়াজে লোকজন প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক পালাতে থাকে। আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আশ্রয় নিতে আসা লোকজন এবং অনেক গ্রামবাসী চরবানিয়ারী ইউনিয়নের খলিশাখালী ও পূর্ব খড়মখালী গ্রামের মাঠের মধ্যে হোগলা ও নলবনে লুকিয়ে থাকার জন্য আশ্রয় নেয়। এ সময় পাকবাহিনী তাদের দেখতে পেয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য নিরীহ লোকজনকে হত্যা করে, যাদের মধ্যে অনেকের বাড়ি পিরোজপুর, নাজিরপুর, উজিরপুর, ও কচুয়াসহ আশপাশের এলাকায় বলে জানা গেছে। পূর্ব খড়মখালী গ্রামের প্রবীণ গৌর চন্দ্র মজুমদার সেদিনের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা তুলে ধরে জানান, সেদিন বলেশ্বর নদী দিয়ে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা আক্রমণ চালায়। গুলির শব্দে চারদিক কেঁপে ওঠে। অনেকে খলিশাখালী ও পূর্ব খড়মখালী গ্রামের মাঠের মধ্যে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। এ সময় পাকবাহিনী তাদের দেখে গুলি চালিয়ে খড়মখালী গ্রামের বিমল কান্তি হীরা, ভদ্র কান্তি হীরা, রাজদেব হীরা, যোগেন্দ্র নাথ মজুমদার, মহেন্দ্র নাথ ম-ল, আদিত্য মজুমদার, নীল কমল ম-ল, জিতেন মজুমদার, খগেন ম-ল (খোকা), অমীয় চৌকিদারের ভাইসহ আশপাশের এলাকা থেকে আশ্রয় নেয়া অসংখ্য লোককে সেখানে হত্যা করে। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার হলেও এ স্থানটি এতদিনে সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া এলাকার অনেকে জানান, এ মাঠের জমিতে মাটি খুঁড়ে অনেক মানুষের হাড় পাওয়া গেছে।
×