ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বস্ত্রআইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

বস্ত্র শিল্পের ৯ হাজার কারখানা নিয়ন্ত্রণে আসছে

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৬ মার্চ ২০১৭

বস্ত্র শিল্পের ৯ হাজার কারখানা নিয়ন্ত্রণে আসছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পোশাক খাতের সংযোগ শিল্প হিসেবে আশির দশকে দেশে গড়ে উঠতে থাকে রফতানিমুখী বস্ত্র কারখানা। এরই ধারাবাহিকতায় গড়ে উঠেছে হোমটেক্সটাইল ও টেরিটাওয়েল পণ্য উৎপাদনকারী শিল্পও। সরকারী কোন আইন ছাড়াই গত ৩০ বছরে এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিকাশ ঘটেছে। শিল্প নিয়ন্ত্রণে এতদিন পর্যন্ত কোন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষও তৈরি হয়নি। তবে এখন নতুন বস্ত্র আইন অনুমোদন পেয়েছে। এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আসছে বস্ত্র শিল্পের নয় হাজারের বেশি কারখানা। অনুমোদিত বস্ত্র আইনে বস্ত্র শিল্প বলতে বস্ত্র বা তৈরি পোশাক, বস্ত্র খাতের মূলধনী যন্ত্রপাতি, এ্যালাইড টেক্সটাইল ও প্যাকেজিং উপাদান উৎপাদন, বস্ত্রপণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং, গুদামজাত, আমদানি ও রফতানি, বিক্রয় ও বাজারজাত, বায়িং হাউসসহ সব কার্যক্রমকে বোঝানো হয়েছে। এছাড়া এ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেও এর আওতাভুক্ত উল্লেখ করা হয়েছে। আইনের আওতায় বস্ত্র খাতের পোশক কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বস্ত্র পরিদফতর। এ কর্তৃপক্ষের তালিকা অনুযায়ী দেশের মোট ১০টি অঞ্চলে বস্ত্র শিল্প-সংশ্লিষ্ট কারখানা রয়েছে ৯ হাজার ৪০টি। মোট সাতটি সংগঠনের সদস্য এসব কারখানা। সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে- বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ, বিএলএমইএ, বিজিএপিএমইএ ও বিএসটিএমপিআইএ। অনুমোদনের মাধ্যমে এসব কারখানা এরই মধ্যে আইনী কাঠামোয় চলে এসেছে। এখন বস্ত্র পরিদফতর অধিদফতরে রূপান্তরের মাধ্যমে বস্ত্র শিল্পের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। পরিদফতরের তালিকা অনুযায়ী বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানা রয়েছে ৪ হাজার ৬৭০টি। এছাড়া বিকেএমইএর সদস্য কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৫০০, বিটিএমএর ১ হাজার ৪৩০, বিটিটিএলএমইএর ৮২, বিএলএমইএর ৫৭, বিজিএপিএমইএর ৮৫৩ এবং বিএসটিএমপিআইএর ৪৪৮। সব মিলে মোট কারখানা ৯ হাজার ৪০টি। অনুমোদিত আইন অনুযায়ী, পোশক কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন ব্যতীত বস্ত্র শিল্প-কারখানা পরিচালনা করা যাবে না। মিথ্যা তথ্য প্রদান বা প্রতারণার মাধ্যমে নিবন্ধন গ্রহণ করলে তা বাতিল হবে। এছাড়া শর্ত লঙ্ঘন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিলম্ব ফি ব্যতীত নিবন্ধন না করলে এবং কোম্পানি-সংস্থা-অংশীদার কারবার বা আইনগত সত্তার ক্ষেত্রে অবসায়ন হলেও নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল হবে। নিবন্ধন বাতিল বা স্থগিতের কারণে কোন লোকসান বা ক্ষতির জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠান কোন ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবে না। বস্ত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হবে পোশক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। পরিদর্শনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বস্ত্র শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী কারখানা পরিদর্শন করবেন। এক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে হবে শিল্প মালিক কর্তৃপক্ষকে। সহযোগিতা না করলে তা হবে অপরাধ। পরিদর্শনে পোশক কর্তৃপক্ষ সুতা ও বস্ত্রের মজুদ কার্যক্রম, বাজারজাত এবং মূল্য স্থিতিকরণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং প্রয়োজন মনে করলে নির্দেশনা জারি করবে। পরিদর্শনের জন্য পোশক কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলগত সক্ষমতা অর্জনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রমও গ্রহণ করবে সরকার। উল্লেখ্য, বস্ত্র কারখানা আছে এমন ১০ জেলার মধ্যে রয়েছে- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা, রাজশাহী, কুমিল্লা, খুলনা, সিলেট ও চট্টগ্রাম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কারখানা আছে এমন জোনগুলো হলো- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম। নরসিংদীসহ মোট পাঁচটি জোনে দেশের বস্ত্র কারখানার ৯৭ শতাংশ অবস্থিত।
×