ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একের পর এক বাধার মুখে ট্রাম্পের নয়া প্রশাসন

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ২৬ মার্চ ২০১৭

একের পর এক বাধার মুখে ট্রাম্পের নয়া প্রশাসন

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে শুক্রবার ট্রাম্পের ওবামা কেয়ার বিল বাতিল করার প্রস্তাব রিপাবলিকান সদস্যরা নাকচ করে দেয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দারুণভাবে মর্মাহত হয়েছেন। দু’মাসে এটি তার প্রশাসনের জন্য সর্বশেষ বড় ধরনের পরাজয়। প্রেসিডেন্ট হওয়ার অনেক আগে নির্বাচনী প্রচারণার সময়েই ট্রাম্প, প্রেসিডেন্ট ওবামার জনকল্যাণকর স্বাস্থ্যনীতি, যা ওবামা কেয়ার নামে পরিচিতি লাভ করেছেÑ তা বাতিল করে দেবেন বলে অঙ্গীকার করেন। ট্রাম্প গত দু’মাসে সাত মুসলিম দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ, নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং আরও নানাবিধ কারণে কোণঠাসা হয়েছিলেন। এবার তার নিজ দলীয় কংগ্রেস সদস্যরাই যখন তার প্রস্তাব অনুযায়ী ওবামা কেয়ার বাতিল না করে ফেরত পাঠাল, তখন তার আর মুখ দেখানোর জায়গা থাকল না। বিলিয়ন ডলার পিতার সন্তান নিজে সাড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ডলারের মালিক যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্পদশালী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাবমূর্তি সঙ্কট দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ঘরে বাইরে ও আদালতে। আমেরিকাকে নিরাপদ ও শক্তিশালী করার স্বপ্ন ও স্লোগান দিয়ে ট্রাম্প আমেরিকার মূল জনগোষ্ঠী বিশেষত শ্বেতাঙ্গদের উদ্বুদ্ধ করে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু এ পর্যন্ত তার গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ ভুল ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় তার নিজের আসনই টলমল করছে। সবার আগে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কথাই ধরা যাক। মুসলিম সন্ত্রাসীরা আমেরিকা এসে ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত হতে পারে এই আশঙ্কায় সাবধানতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইরাকসহ সাতটি মুসলিম দেশ থেকে আগত ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির পর এমন বিক্ষোভ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় যে, পরিশেষে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় তা বাতিল হয়ে যায়। এরপর নিষেধাজ্ঞা আইন কিছুটা সংশোধন করে ইরাকের নাম বাদ দিয়ে ছয়টি দেশের নামে পুনর্বার নিষেধাজ্ঞা আইন জারি করা হয়। আইনটিতেও মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে যুক্তিতে মেরিল্যান্ড হাওয়াই কোর্টের ওপর রুল জারি করে। পরবর্তীতে ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডের ফেডারেল আপীল কোর্টে এর চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ট্রাম্পের আরেকটি গলার কাঁটা হচ্ছে তাঁকে নির্বাচিত করার পেছনে রুশ প্রভাব তথা পুতিনের ভূমিকা। গত নবেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রাম্পের নির্বাচনী দায়িত্বে নিযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাগণ যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সেগেই কিসলিয়াকের সঙ্গে প্রকাশ্যে ও গোপনে সাক্ষাত করেন। সন্দেহ করা হয় যে, তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য হয়ত কোন গোপন সমঝোতায় উপনীত হয়েছিলেনÑ যার ফলশ্রুতিতে বিপুল জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও হিলারি পরাজিত এবং ট্রাম্প জয়যুক্ত হন। এমনকি ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর শপথ গ্রহণের আগেই তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের সঙ্গে রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগে ফ্লিনের পদত্যাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এর পর আসে ট্রাম্পের নবনিযুক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেসন্স এর কথা। তিনিও গোপনে গোপনে সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে দু’তিনবার দেখা করেনÑ আবার শপথ গ্রহণের সময় এ কথাটা কংগ্রেসের নিয়োগদান কমিটির কাছে গোপন করে যান। এসবের প্রেক্ষিতে জনমনে ঘনিভূত সন্দেহ যে, ট্রাম্পের জয়ের পেছনে নিশ্চয়ই ভøাদিমির পুতিনের কোন মোক্ষম চাল আছে। এএফপি
×