ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিজ জয়ের প্রত্যাশা মাশরাফিদের

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২৫ মার্চ ২০১৭

সিরিজ জয়ের প্রত্যাশা মাশরাফিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সর্বশেষবার শ্রীলঙ্কায় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে যাওয়ার স্মৃতিটা দারুণ ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য। ২০১৩ সালে টেস্ট সিরিজে দুর্দান্ত খেলে গল টেস্ট ড্র করেছিল অনেক রেকর্ডের জন্ম দিয়ে। আর ওয়ানডে সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিল। শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সেটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম জয়। এবার টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে পি সারা ওভালে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক শততম টেস্ট জিতে। এ কারণে আত্মবিশ্বাসে টগবগ ফুটছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। তাছাড়া শ্রীলঙ্কা দলে বেশকিছু পরিবর্তন আসায় শক্তিমত্তা আগের চেয়ে কিছুটা কমে যাওয়ায় সিরিজ জেতার প্রত্যয়টা আরও বেড়েছে। সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচ আজ রংগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। দিবরাত্রির এই ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় শুরু হবে। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজটি নানাবিধ কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সবচেয়ে জরুরী বিষয় হচ্ছে র‌্যাঙ্কিং। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ ঘোষিত র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ আটে থাকতে হবে। তাহলেই ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন সম্ভব হবে। মাশরাফির দল অবশ্য এই মুহূর্তে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে ৭ নম্বরে আছে। বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ৯১। পাকিস্তানের ৮৯। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট ৮৪। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে রেটিং পয়েন্টে খানিক পার্থক্য থাকলেও পাকিস্তানের সঙ্গে নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের খেলা না থাকায় সুবিধাই হয়েছে। কারণ র‌্যাঙ্কিংয়ের নিচের সারির দলের সঙ্গে খেলে হারলে রেটিং পয়েন্ট বেশি করে কমে। আর র‌্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দলের সঙ্গে খেলে জিতলে রেটিং পয়েন্ট বেশি করে বাড়ে। আবার সামনেই আছে শ্রীলঙ্কা। যাদের অবস্থান এখন র‌্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে, রেটিং পয়েন্টও ৯৮। বাংলাদেশ থেকে ৭ রেটিং পয়েন্ট বেশি আছে তাদের। কিন্তু যদি বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতে যায়, তাহলে শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে র‌্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে উঠে যাবে। তখন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খেলাও নিশ্চিত হয়ে যাবে, তা মোটামুটি বলা যায়। এর সঙ্গে অবশ্য আশঙ্কাও আছে। যদি উল্টো ৩-০ ব্যবধানে বাংলাদেশ সিরিজ হেরে যায় তাহলে রেটিং কমে ৮ নম্বরে নেমে যাবে, পাকিস্তান উঠে আসবে সাতে। কারণ পাকিস্তানের সঙ্গে রেটিংয়ের পার্থক্য মাত্র ২। আর সর্বশেষ দুটি সিরিজই হেরে বাংলাদেশ এখন ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে আছে। শ্রীলঙ্কা দলে অবশ্য নিয়মিত অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস নেই। আবার ফর্মে থাকা ওপেনার কুসাল পেরেরা দলে ফিরলেও ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন। তাই তারও খেলা হবে না। নতুন করে গড়া দলটিকে হারিয়ে দিতে তাই আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দল। এমন আত্মবিশ্বাসই জানিয়েছেন দলের ম্যানেজার ও সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলেন, ‘আমরা এ সিরিজ জিততে চাই, সেজন্য যা যা করতে হবে সেটাই করার চেষ্টা থাকবে ক্রিকেটারদের।’ কিন্তু সর্বশেষ ৫ মোকাবেলায় শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরে এশিয়া কাপে একমাত্র ম্যাচের পর ওয়ানডে সিরিজেও ৩-০ ব্যবধানে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল লঙ্কানরা। এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপে সর্বশেষ ওয়ানডে মোকাবেলায়ও ৯২ রানের বড় ব্যবধানে হারে মাশরাফির দল। তবে ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ পাল্লেকেলেতে স্বাগতিকদের ৩ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দেশের বাইরে লঙ্কানদের হারানোর ঘটনা ওই একটিই। সেই স্মৃতিটাই কাজে লাগাতে হবে এবার। সার্বিকভাবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় মাত্র ৪ আর পরাজয় ৩৩। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঘরের মাটিতে লঙ্কানদের ৩ বার হারিয়েছিল। কিন্তু মাঝের টানা ৫ ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষে সাফল্য না পাওয়াটাই এবার সিরিজে কাটিয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ মাশরাফিদের জন্য। সবমিলিয়ে লঙ্কানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে মোট ৬। এর মধ্যে লঙ্কানদের মাটিতে খেলা হয় চার, দুটি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ তাদের নিজেদের মাঠে। এই ছয় সিরিজের পাঁচটিতেই জয় পেয়েছে লঙ্কানরা। আরেকটি সিরিজ ড্র হয়। আবার শ্রীলঙ্কার মাটিতেই খেলতে হবে। মাশরাফির নেতৃত্বে এবার পূর্ণশক্তির দল নিয়েই লঙ্কান বধের আশায় মাঠে নামবে টাইগাররা। পেসার মুস্তাফিজুর রহমান নিউজিল্যান্ড সফরে ফিরেছিলেন, তিনি এখন পুরোপুরি ফিট। প্রস্তুতি ম্যাচে রানে ফিরেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমানরা। আর নিয়মিত রানের মধ্যে থাকা তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, সৌম্য সরকারের সঙ্গে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এবার মাঠের লড়াইয়ে জ্বলে ওঠার অপেক্ষা।
×