স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ তিনটি এনজিওর লক্ষাধিক টাকা ঋণের বোঝা বইতে না পেরে মণিরামপুরে সামেলা বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার ভোরে তিনি নিজ বাড়ির আঙিনার ছবেদা গাছের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনায় মণিরামপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। সামেলা বেগম উপজেলার পূর্ব হোগলাডাঙ্গা গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী। সামেলার স্বজনরা জানান, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক ও অগ্রগতি নামে তিনটি এনজিও থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। তার স্বামী আবুল কালাম হতদরিদ্র ভ্যানচালক। পরিবারটিকে প্রতি সপ্তাহে আশা এনজিওকে এক হাজার ৮৫০ টাকা, অগ্রগতিকে ৬৫০ টাকা এবং গ্রামীণ ব্যাংককে ৩ শ’ টাকা কিস্তি দিতে হয়। ভ্যান চালিয়ে এত টাকা জোগাড় করা অসম্ভব প্রায়। সামেলার চার ছেলে দিনমজুর। বাবা-মাকে কোন সাহায্য করতে পারেন না তারা। এনজিও’র কিস্তি শোধ করা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয় সামেলার। তার জের ধরে শুক্রবার সকালে আত্মহত্যা করেন তিনি।
সামেলার পুত্রবধূ মুন্নি খাতুন বলেন, ‘ঋণের কিস্তি, সংসারের অভাব তো আছেই, তার ওপরও বৃহস্পতিবার বাড়িতে আত্মীয় এসেছেন। ঘরে টাকা-পয়সা ছিল না। এসব নিয়ে রাতে শ্বশুরের সঙ্গে শাশুড়ির ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শাশুড়ি বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছিল। আমি তাকে ধরে এনেছি। ভোরে শ্বশুর নামাজ পড়তে যান। বাড়ি ফিরে দেখেন শাশুড়ি গলায় ওড়না দিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলছে।’ হতদরিদ্র একটি পরিবারকে কীভাবে ৭০ হাজার টাকা ঋণ দিলেন? এমন প্রশ্নে আশার মণিরামপুর শাখার ব্যবস্থাপক সুজা আহম্মেদ লাভলু বলেন, ‘শুনেছি ইঞ্জিন ভ্যান কেনার জন্য তারা লোন নিয়েছে। আমি নতুন এসেছি। এর বেশি কিছু জানি না।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: