ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বি’বাড়িয়ায় মৎস্যমন্ত্রী

টাকার বিনিময়ে মদ ব্যবসায়ীকে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৪ মার্চ ২০১৭

টাকার বিনিময়ে মদ ব্যবসায়ীকে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ জনসমাবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর আসনের এমপিকে তুলোধুনো করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। সে সঙ্গে নাসিরনগরের হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির ভঙ্গের অভিযোগ উত্থাপন করেছেন স্থানীয় এমপির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এমএসসি ও জেলা পরিষদের সব নির্বাচিত সদস্যদের সম্মিলিত নাগরিক সমাজ কর্তৃক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য র, আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে বিষোদগার করে বক্তব্য দেন। বিকেলে আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক এমপি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী সদর আসনের সংসদ সদস্যের নাম ও দলের সাধারণ সম্পাদকের নাম উল্লেখ করে বলেন, টাকার বিনিময়ে মদ ব্যবসায়ীকে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি ২ জনের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাদের কারণে নাসিরনগর বিশ্ব সংবাদে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রাম থেকে আজ শহরে এসেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। ঐতিহ্য রক্ষায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। নাগরিক সমাজের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজ মোঃ ইয়াছিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা আমানুল হক সেন্টু, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মিনারা আলম, অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট কাউসার আহম্মেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশীদ প্রমুখ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা বলেন, বিগত নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে সদর আসনের এমপি তার এলাকায় এক প্রার্থীকে দাঁড় করিয়ে দেন। জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আমানুল হক সেন্টু বলেন, একজন সৎ মন্ত্রীকে অপমান করতে নাসিরনগরে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি নষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, সায়েদুল হককে দল থেকে বহিষ্কারের চেষ্টা করেছে তারা। সহ-সভাপতি হেলালউদ্দিন বলেন, এই সময়ে মানুষ নানাভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা কারও দ্বারা ব্যবহৃত হবে না। তারা দাঙ্গা লাগিয়ে পালিয়ে যাবে। তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর-৩ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মন্ত্রীদের এলাকায় আসতে দেয়া হয় না। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্যানার, ফেস্টুন চুরি করা, নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া ও গাড়ি আটকে দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি। শ্রমিক লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট কাউসার আহম্মেদ বলেন, হাইব্রিড নেতাদের কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা আজ কোণঠাসা। যারা রাজপথে ছিল না তাদের দাপটে ত্যাগী নেতারা টিকতেই পারছে না। সমাবেশের পূর্বে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ বইঠা মিছিল করে সমাবেশে আসে। এতে মুক্তমঞ্চ ও আশপাশ এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এ সময় শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
×