ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কামরুল আলম খান খসরু

স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলো

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২৪ মার্চ ২০১৭

স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলো

(গত বুধবারের পর) এমন কি তারা আমার বন্ধু হায়দার আলী (পারভেজ), রংপুর-এর বাড়ি ঘেরাও করে সবকিছু তছনছ করে এবং সেখানে আমাকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে না পেয়ে বাড়ির জিনিসপত্র ভাংচুর করে তাদের ব্যাপক ক্ষতি করে। এরপর পাকিস্তানী গোয়েন্দারা আমাকে খুঁজতে থাকে নোয়াখালী, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট-এর চা বাগান, সাতক্ষীরাসহ বাংলদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থাৎ যেখানে আমি আত্মগোপনে থাকতাম। আত্মগোপনে না থেকে কোন উপায় ছিল না। কারণ তখন আমার নামে হুলিয়া জারি হয়েছিল। ধরা পড়লে ১৪ বছর জেল। সে আরেক ইতিহাস। ১৯৬৯ সালে ঢাকার নিউমার্কেটের ভেতর ৪ পাকিস্তানী সৈন্যকে ঘায়েল করার অভিযোগে সামরিক ট্রাইব্যুনালে আমাদের (খসরু অর্থাৎ আমি, মন্টু যে বর্তমানে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও সেলিম) শাস্তি হয়। যেদিন আমার এ শাস্তির আদেশ ঘোষিত হয় সেদিন আমি আলিম হাজীর কেরানীগঞ্জের বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। সিরাজ ভাই তা জানতেন। সেদিন রাতের আঁধারে সিরাজ ভাই এবং তৎকালীন ডাকসুর ভিপি ও বিএলএফ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল ভাই (তোফায়েল আহমেদ, বর্তমানে বাণিজ্যমন্ত্রী) কেরানীগঞ্জে এসে আমাকে সান্ত¡না দিয়ে যান। সেদিন তাঁরা বলেন, ‘রাজনীতি করতে গিয়ে বিশ্বের অনেক বড় বড় নেতা কঠিন কঠিন শাস্তি ভোগ করেছে। এ অবস্থার পরিবর্তন হলে তোর শাস্তিও মাফ হয়ে যাবে। তোর আজকের এ ত্যাগের একদিন মূল্যায়ন হবে!’ সেদিন জেনে শুনে আমার নামে জারিকৃত এ হুলিয়া মাথায় নিয়ে দেশ-মাতৃকার মুক্তির জন্য আমি ভারত থেকে অস্ত্র সংগ্রহের এক দুঃসাহসিক অভিযাত্রায় সামিল হয়েছিলাম। আজকে দেশ স্বাধীন হয়েছে। বাঙালী জাতি স্বাধীনতা পেয়েছে। কিন্তু আমাদের কি আর মূল্যায়ন হলো? সে রাতে এভাবে ট্রেন চলতে চলতে এক জায়াগায় এসে হঠাৎ থেমে যায়। অদূরেই ভারত সীমান্ত দেখতে পাই। দেখি, ট্রেনের বিভিন্ন বগি থেকে ধুপধাপ আওয়াজ করে মালামাল মাটিতে পড়ছে। ট্রেনে থাকা চোরাচালানিরা এবং স্থানীয় চোরাকারবারিরা মিলে এসব মালামাল নিয়ে দ্রুত গাছ-গাছালির আড়ালে চলে যাচ্ছে। নিমু আমাকে ইশারা দিলে আমি দ্রুত ট্রেন থেকে নেমে তাঁকে অনুসরণ করতে থাকি। নিমু এ এলাকার ছেলে। সে পথঘাট সব চিনে। এখানে ট্রেন আসলেই চোরাকারবারিরা শিকল টেনে থামিয়ে মালামাল পাচার করে। আমরা এ সুযোগটি কাজে লাগাই। নিমুকে অনুসরণ করতে করতে আমি বর্ডারের কাছে চলে আসি। এ জায়গার নাম মাধবপুর, জেলা হবিগঞ্জ আর ওপারে ধর্মনগর। নিমু আমাকে নিরাপদে বর্ডার পার করে দেয়। ওপারে অর্থাৎ ধর্মনগরে গিয়ে বিভিন্ন বাহনে চড়ে আমি আগরতলা পৌঁছাই। এর আগেও দেশের কাজে আমি আগরতলা এসেছি। ভারতে এসে আমার ছদ্মনাম হয় বাসুদেব চৌধুরী, পিতা-কৃষ্ণপদ দেব চৌধুরী। এ নামটি আমার এক বন্ধুর, রংপুরে যে আমার সঙ্গে স্কুলে পড়ত। আর বাংলাদেশে আমার ছদ্মনাম ছিল হায়দার আলী (ডাকনাম পারভেজ), পিতা-ক্যাপ্টেন মকবুল আলী, ঠিকানা-১৫১ নতুন পল্টন লাইন, ঢাকা, পেশা-ব্যবসা। এ নামটিও ছিল আমার রংপুরের এক বিশিষ্ট বন্ধুর আর ঠিকানাটি ছিল আমার আরেক বন্ধু নুরুল ইসলামের। নূরুল ইসলামকে আমি বলে এসেছি কেউ আমার নাম ঠিকানা খোঁজ করতে এলে বুঝতে হবে আমি কোথাও ধরা পড়েছি। সে যেন তাদের বলে দেয় এ নামে এখানে যে থাকে সে ব্যবসার কাজে ঢাকার বাইরে গেছে। কবে আসবে বলে যায়নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নূরুল ইসলাম ব্যবসা করত এবং ভাল গান গাইতে পারত। আগরতলা পৌঁছালে শুভজিৎ আমাকে স্বাগত জানায়। সেখানে দু’দিন থেকে গৌহাটি রওনা হই। গৌহাটি যাওয়ার পথটি বেশ অসমতল, উঁচু-নিচু এবং বড়ই বিরক্তিকর। এ পথে বার বার বাহন পরিবর্তন করতে হয়। একটি বাহন মিস করলে পরেরটি ধরার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু আমি ছিলাম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যেভাবে হোক দেশের জন্য আমাকে অস্ত্র সংগ্রহ করতেই হবে। তাই পথের ক্লান্তি আর বিড়ম্বনাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে আমি আমার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছি। প্রথমে আগরতলা থেকে করিমগঞ্জ ট্রেনে চেপে আসি। করিমগঞ্জ থেকে আবার ট্রেনে করে আসি হাফলং। হাফলং থেকে ট্রেনে চেপে আসি লুমডিং। এরপর লুমডিং থেকে গৌহাটি আসি ট্রেনে। গৌহাটি শহরের শোভা অপূর্ব। আমি গৌহাটি এসে প্রথমে চন্দন দার আস্তানায় উঠি। এখানে দু’দিন থেকে বাসে চেপে চলে আসি শিলং-এ। এখানে থাকেন সিনিয়র নকশাল নেতা দেবুদা। দেবুদা নিজ পরিচয় লুকিয়ে এখানকার চা বাগানে কাজ করেন। দেবুদার এখানেও আমি দু’দিন থাকি। এর আগে আমি শিলং এসে একাধারে ৬ মাস ছিলাম। ’৬৯ সালে সামরিক ট্রাইব্যুনালে যখন আমার চৌদ্দ (১৪) বছর কারাদ- হয়, তখন বঙ্গবন্ধু লোক মারফত আমাকে জানান যে, আমি যেন কিছুদিনের জন্য আত্মগোপনে থাকি। তাই আমি ওই সময় শিলং চলে আসি। শিলং শহরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। পাইন অরণ্য, জলপ্রপাত এবং পার্বত্য জলধারার সমারোহে সুবিন্যস্ত শহর শিলং একসময় ‘প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড’ নামে পরিচিত ছিল। শিলং শহরে থাকার সময় আমার জীবনে বেশ কিছু মজার ঘটনা ঘটেছিল। ভবিষ্যতে কখনও সুযোগ পেলে সেই ঘটনাও লিখে পাঠকদের জানাব। দেবুদার সঙ্গে ভারতে নকশাল আন্দোলন ও বাংলাদেশে সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তিনি আমাদের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেন। কলকাতায় গিয়ে আমাকে কার কাছে যেতে হবে, কোথায় থাকতে হবে, সবকিছু তিনি ঠিক করে দেন। এরপর আমি বাসে চেপে গৌহাটি আসি। গৌহাটি থেকে ট্রেনে চেপে শিলিগুড়ি আসি। শিলিগুড়ি থেকে ট্রেনে চেপে কলকাতা আসি। আমার চেহারা আর দশটা সাধারণ বাঙালীর মতো নয়। আমি সুঠামদেহী। লম্বা গড়ন আর গৌরবর্ণ চেহারা। আমার পরনে থাকত কালো গেঞ্জি এবং কালো কর্ড প্যান্ট। তাই ট্রেনে, বাসে, রাস্তায় চলাচল করার সময় লোকজন হা করে আমার দিকে চেয়ে থাকত। এ ধরনের শারীরিক গঠনের কারণে জনতার ভেতরে নিজেকে লুকিয়ে রাখা কঠিন ছিল। তবে তাও আমি করতাম গেরিলা কায়দায়। ভারতে এলে আমি হাফ ছেড়ে বাঁচতাম। আমার পাসপোর্ট নেই, ভিসা নেই, টাকা নেই। তারপরও নিজেকে অসহায় মনে হতো না। অথচ নিজ দেশে আমাকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হতো। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়টা আমাকে সবসময় অনুসরণ করে চলত, তাই সারাক্ষণই আমাকে দৌড়ের মধ্যে থাকতে হতো। আগরতলা থেকে কলকাতা দীর্ঘপথ। তখনকার ট্রেন আজকের মতো এত দ্রুত চলত না। ট্রেন স্টেশনে স্টেশনে থামতে থামতে কলকাতা আসত। স্টেশনে এলে ২০-৩০ মিনিট থামত। ভারতের ট্রেন স্টেশনগুলোতে ভাল খাবার পাওয়া যেত। ক্ষুধা পেলে আমি স্টেশনে নেমে খেয়ে নিতাম। তাছাড়া চলন্ত ট্রেনের ভেতর হকাররা কলা, রুটি, ডিম, চা বিক্রি করে। ওদের কাছ থেকেও কিনে খেতাম। কী বিশাল দেশ ভারত! ট্রেনে চাপলে বোঝা যায় কত জাতের আর কত ভাষার মানুষের দেশ এ ভারত। ট্রেনের ভেতর শুয়ে শুয়ে আমি ভাবি কেন যে আমরা ভারত থেকে পৃথক হলাম। আর পৃথক হয়ে বা কী পেলাম! এখন যে পাকিস্তান দেখছি সে পাকিস্তান কী আমরা চেয়েছি! নিজ দেশে ভাষার জন্য রক্ত দিতে হয়, গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিতে হয়, দুর্ভিক্ষে মানুষের মৃত্যু হয়! একদিন আমরা বাংলাদেশকে পাকিস্তানীদের দুঃশাসন থেকে মুক্ত করব এ আশায় অস্ত্র সংগ্রহ করছি মাত্র। জানি না কবে দেশজুড়ে সশস্ত্র আন্দোলনের সূচনা হবে। কবে ওদের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ শুরু করব, কবে দেশ স্বাধীন হবে! ট্রেনে চলতে চলতে এসব যাবতীয় ভাবনা আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। এসব বিক্ষিপ্ত ভাবনা ভাবতে ভাবতে আমি একসময় শিয়ালদহ স্টেশনে এসে পৌঁছি। কলকাতা এসে আমি প্রথমে বেহালায় বুদ্ধদার বাসা খুঁজে বের করি। তিনি নকশাল আন্দোলনের বড় নেতা; গা ঢাকা দিয়ে ছদ্মনামে কলকাতার বেহালায় থাকেন। তখন বেহালা ছিল নকশাল আন্দোলনকারীদের সবচেয়ে বড় আস্তানা। পুলিশ সেখানে রেইড দিতে এলে বাড়ি বাড়ি থেকে শংখে আওয়াজ তুলে নকশাল কর্মীদের আত্মগোপনের জন্য সংকেত দেয়া হতো। বুদ্ধদা আমাকে ধর্মতলার আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। আমি আমিনকে ধর্মতলায় এসে খুঁজে পাই। যে কয়দিন আমি কলকাতায় ছিলাম আমিনের কাছেই ছিলাম। আমিনের মাধ্যমে পরিচয় হয় ওই দলের কর্মী আবদুল কাদের এবং কল্যাণী করের সঙ্গে। তাঁরা ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাঁদের সঙ্গে একদিন বিকেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আলোচনায় বসি। সে আলোচনায় তাঁরা আমাকে কি কি অস্ত্র দিবে তা জানায়। বর্ডার পর্যন্ত অস্ত্র বহনের জন্য তাঁরা আমাকে একজন ক্যারিয়ার দেয়ারও সিদ্ধান্ত জানায়। কোন বর্ডার দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে যেতে চাই আমার কাছে তাঁরা তা জানতে চায়। যেহেতু আমার সুন্দরবন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিজ্ঞতা ছিল না। তাই আমি সাতক্ষীরার হাকিমপুর ঘাট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের কথা জানাই। কারণ এর আগেও আমি এই ঘাট দিয়ে নির্বিঘেœ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। বাংলাদেশে যাওয়ার দিন নির্দিষ্ট হয়। ধর্মতলায় চাঁদনিচকে আমিনের সুটকেস তৈরির কারখানায় অর্থাৎ যেখানে আমি থাকতাম, তাঁরা সেখানে এসে একটি চটের বস্তার ভেতর অস্ত্রগুলো ভরে আমার কাছে রেখে যায়। আর বলে যায় সন্ধ্যার পর একজন ক্যারিয়ার আসবে এবং সে-ই বর্ডার পর্যন্ত বস্তা বহন করে নৌকায় পৌঁছে দিবে। তাঁরা আরও জানায় পথে কোন ভয় নেই। লোকটি পেশাদার ক্যারিয়ার এবং পার্টির নিবেদিত কর্মী। তাঁরা আমাকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলে আমি বস্তা খুলে দেখতে পাই তাতে একটি কাটা রাইফেল, একটি খোলা কাটা ডাবল ব্যারেল বন্দুক, একটি পাইপ গান, একটি এলজি পিস্তল এবং হাতে তৈরি কিছু শক্তিশালী বোমা যা প্রচ- আঘাতে বিস্ফোরিত হয় এবং বিপুল ক্ষতি সাধন করে। ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রদের তৈরি বোমা থেকে এ বোমাগুলো ছিল বেশি ধ্বংসাত্মক। আমি অস্ত্রগুলোর নাট-বল্টু খুলে রাখি, যাতে পথে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। আজকের দিনে এসব অস্ত্রের কথা ভেবে অনেকের মনে হাসির উদ্রেক হতে পারে। তবে সেদিনকার প্রেক্ষাপটে এ অস্ত্রগুলোই ছিল আমাদের কাছে মহার্ঘ্য। প্রথম দিকে এসব অস্ত্র ব্যবহার করেই আমরা পাকিস্তানী সৈন্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ঘায়েল করে, তাঁদের বহু আধুনিক মারণাস্ত্র কেড়ে নিয়েছি। তখন কারও কাছে একটি কাটা রাইফেল থাকলে ভয়ে প্রশাসন তটস্থ থাকত। একটি কাটা রাইফেলের ফায়ারের আওয়াজ শুনিয়ে অনেক লোককে ভয় দেখানো যেত। তাছাড়া এ ধরনের অস্ত্র দিয়ে ও নিউক্লিয়াস নেতাদের মাধ্যমে সংগৃহীত ৮টি থ্রি নট থ্রি রাইফেল ব্যবহার করে ১৯৬৮ সালে ছাত্রলীগের এক দফার (স্বাধীনতা) প্যানেলকে জিতিয়ে ছিলাম। ওই বছর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। একটি প্যানেলের সভাপতির প্রার্থী ছিলেন তোফায়েল আহমদ (বর্তমানে বাণিজ্যমন্ত্রী) এবং সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী ছিলেন আ স ম আবদুর রব। আর এটি নিউক্লিয়াস বা বঙ্গবন্ধুর একদফার প্যানেল নামে পরিচিত ছিল। অপর প্যানেলটির সভাপতির প্রার্থী ছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী (বর্তমানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী) এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন আল মুজাহিদী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পুরান ঢাকার কলতা বাজারের রুচিরা নামে একটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এ রেস্টুরেন্টে বসে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী বহিরাগতদের সঙ্গে আড্ডা দিত। তাঁরা সবসময় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করত। তাঁরা এ রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দিত বলে পরবর্তীতে রেস্টুরেন্টের নামানুসারেই গ্রুপটির নাম হয় ‘রুচিরা গ্রুপ’। সেবার ছাত্রলীগের নির্বাচনে রুচিরা গ্রুপের সমর্থকরা এবং পুরান ঢাকার মাসলম্যানরা সিদ্দিকী-মুজাহিদীকে সমর্থন দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাঁরা এ প্যানেলকে জয়যুক্ত করতে পেশী শক্তিরও ব্যবহার করেছিল। তাঁরা ছাত্রলীগের ভেতর ভাঙ্গন ধরাতে চেয়েছিল সেদিন তাঁরাই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে হামলা করে সারাদেশ থেকে আসা ডেলিগেটদের অর্থাৎ প্রতিনিধিদের তাড়িয়ে দিয়ে নিজেদের পছন্দের প্যানেলকে জয়ী করতে অগ্রসর হয়েছিল। চলবে......
×