ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাহারি পণ্যের সমাহার থাই মেলায়

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৩ মার্চ ২০১৭

বাহারি পণ্যের সমাহার  থাই মেলায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রায় প্রতিবছরই বাংলাদেশে আয়োজন করা হচ্ছে থাইল্যান্ডের পণ্যের মেলা। দেশটির বিভিন্ন পণ্যের প্রতি বাংলাদেশীদের বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে বলেই এ আয়োজন। বুধবার থেকে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী থাই পণ্যের প্রদর্শনী। প্রথম দুদিন ব্যবসায়ীদের জন্য ও পরের দুদিন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে এবারের থাইল্যান্ড ইউক-২০১৭। প্রদর্শনী চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রমোশন (ডিআইটিপি), থাইল্যান্ড সরকার এবং ঢাকায় থাই দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। থাইল্যান্ডের ৫৩টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। মেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথম দিনেই বেশ জমজমাট। ক্রেতা-দর্শনার্থীর বেশ ভালই ভিড় দেখা গেল। প্রথম দিনটি আয়োজকরা শুধু প্রদর্শনীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। তাই বিক্রি খুব একটা হয়নি। আজ বিক্রি বাড়বে বলে জানা গেছে। ঘুরে দেখা গেল, প্রায় নানা রকমের সুস্বাদু খাদ্য থেকে শুরু করে পারফিউম, ব্যাগ, স্যান্ডেল, মেশিনারিজ, প্লাস্টিকসহ থাইল্যান্ডে তৈরি নানা পণ্যের সমাহার রয়েছে প্রদর্শনীতে। আছে থাইল্যান্ডের বিশেষ কিছু ফলমূল। আছে অর্কিডের টব, সূক্ষ্ম কারুকাজ করা থাই হ্যান্ডব্যাগ। বিভিন্ন পাথর ও মেটালের গলার মালা, কানের দুল, সিরামিকের তৈরি গয়না, কাপড়ের তৈরি ফুলেল ব্যান্ড, ক্লিপ, খোঁপা, কাঁটাও রয়েছে। এছাড়া কসমেটিক্স, ক্রোকারিজ, বিউটি পার্লার সরঞ্জাম, হেয়ার শ্যাম্পু, পোশাক, ব্রেসলেট, হরেক রকমের জুতা, ব্যালেরিনা শো, গয়নাসহ অনেক কিছু। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের থাই শুকনো খাবার-মিষ্টি তেঁতুল, জেলি চকোলেট, সস, আচার, জুস থেকে শুরু করে হরেক রকমের মুখরোচক খাবার। তবে এখানে সব পণ্যই কিন্তু একদামে কিনতে হবে। প্রয়োজনীয় এসব জিনিসের পাশাপাশি আছে মজাদার ও চমকপদ কিছু আইটেম। থাইল্যান্ডের ৫৩টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ফল আমদানি করে বাংলাদেশে বিক্রি করছে থাই বিমস্টেক। মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানটির ৫০ নং স্টলে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৪১ ধরনের সুস্বাদু ফলের সমারোহ রয়েছে এখানে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাম্বুটান ফল। এটি অনেকটা কদম ফুলের মতো। ফলের ভেতরের অংশটা সাদা লিচুর মতো। আছে পুরোটাই হলুদ বর্ণের চ্যারি ম্যাঙ্গো। মেলায় ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি, রাম বোস্টর ফল ৮০০, থাই ডেয়ারা ৬০০, থাই আম ৬০০, ম্যাঙ্গো চেরি ৬০০, মিষ্টি তেঁতুল ৩০০, ডুরিয়ান ফল ৭০০, রকমিলন ফল ৬০০, ম্যাঙ্গো স্টিন ৬০০ ও লঙ্গান ফলের কেজি ৩০০ টাকা। এছাড়া পাম ফল ২০০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের স্পাইসও। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী কুনতিকা আপার্ড (ওয়ে) বলেন, প্রদর্শনীতে আমরা অনেক তথ্য সরবরাহ করতে পারছি। দর্শনার্থী ও ক্রেতার মাঝে তুলে ধরছি থাইল্যান্ডের বিভিন্ন সুস্বাদু ফলের বিবরণ। মধ্যপাচ্য, এশিয়া প্যাসিফিকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুখ্যাতি রয়েছে মারিয়া ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পারফিউ। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সারওয়ান আংসানটিকুল বলেন, পণ্যের প্রদর্শনী করাই আমাদের মূল্য লক্ষ্য। বিক্রি নিয়ে আমরা ভাবছি না। তিনি বলেন, বাংলাদেশীদের থাই পণ্যের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে বলে তিনি জানান। এখানে ফ্রুটি, ফ্লোরাল, পাউডারিসহ প্রায় ৩০ ধরনের পারফিউম রয়েছে। পণ্যের পাশাপাশি থাই মেলায় মেডিক্যাল এ্যান্ড ট্যুারিজম বিশেষ প্যাকেজ নিয়ে এসেছে স্কাই মেড এশিয়া সার্ভিস। প্রতিষ্ঠানটি মেডিক্যাল সেবা থেকে শুরু করে ভিসা প্রসেসিং, বিমানের টিকেট ও হোটেলের ব্যবস্থা করে থাকে। এ প্রসঙ্গে থাইল্যান্ড বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা বলেন, থাইল্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে যদি কেউ ব্যবসা করতে চান সেই সুযোগও মিলবে এখানে। রেজিস্ট্রেশন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও আছে আগ্রহীদের। প্রদর্শনীতে দর্শনার্থীরা থাইল্যান্ডের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার সুযোগ পাবেন বলে জানান তিনি। এছাড়া রয়েছে থাই ফুড রান্নার পদ্ধতি শেখার ব্যবস্থা। আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ রাজকীয় থাই দূতাবাসের সহযোগিতায় থাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ডিপার্টমেন্ট এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। পাঁচ ক্যাটাগরির পণ্যের মধ্য রয়েছে অটোপার্টস এ্যান্ড এক্সেসরিজ, কনস্ট্রাকশন মেটারিয়াল এ্যান্ড মেশিনারি ইকুইপমেন্ট, ফুড এ্যান্ড বেভারেজ, গার্মেন্টস এ্যান্ড টেক্সটাইল এ্যান্ড ফ্যাশন এক্সেসরিজ, হেলথ এ্যান্ড বিউটি, হাউসহোল্ড এ্যান্ড নিটওয়ার পণ্য এবং স্টেশনারি পণ্য। খুচরা, পাইকারি, ডিলারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা এ প্রদর্শনী থেকে থাইল্যান্ডের পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে পারবেন যে কোন গ্রাহক। বুধবার সকালে চার দিনব্যাপী ‘থাইল্যান্ড উইক ২০১৭’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। থাইল্যান্ড এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। এগুলোর একটি নিয়ে থাইল্যান্ড বিনিয়োগ করতে পারে। আমরা তাদের বিনিয়োগের সব সুযোগ-সুবিধা দেব। মন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ড বাংলাদেশের বিশ্বাসী ও পরীক্ষিত বন্ধু। যদিও তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ খুব একটা বেশি নয়। অধিকাংশ পণ্যই থাইল্যান্ড বাংলাদেশে রফতানি করে। আর আমাদের রফতানির পরিমাণ কম। এই ঘাটতির পরিমাণ কমাতে হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই এ্যাম্বাসেডর প্যানপিমোন সুয়ানাপং, দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এবিসিসিআই) পরিচালক মনোয়ারা হাকিম ও থাই বাণিজ্যমন্ত্রীর মুখপাত্র সুবসেক ড্যাংবুন রুয়েং। গ্রামীণফোনে নতুন প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শাহেদ গ্রামীণফোন কাজী মোহাম্মদ শাহেদকে কোম্পানির নতুন প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা (সিএইচআরও) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি আগামী ১ এপ্রিল থেকে বিদায়ী সিএইচআরও মোঃ শরিফুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হবেন। কাজী মোহাম্মদ শাহেদ টেলিনর ইন্ডিয়ার সিএইচআরও হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি দ্বিতীয়বারের মতো গ্রামীণফোনের সিএইচআরও হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। তিনি ২০১৫’র আগস্টে টেলিনর ইন্ডিয়াতে যোগ দেন এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার ২৮ বছর কর্ম অভিজ্ঞতা আছে। ২০১২’র নবেম্বরে গ্রামীণফোনে যোগ দেয়ার আগে তিনি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোতে উৎপাদন খাতে এবং সিএইচআরও হিসেবে বিভিন্ন দেশে কর্মরত ছিলেন। -বিজ্ঞপ্তি
×