ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় পরিষদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাস

পাকিস্তানে ফের সামরিক আদালত

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২৩ মার্চ ২০১৭

পাকিস্তানে ফের সামরিক আদালত

পাকিস্তানে সামরিক আদালত ফের চালু হচ্ছে। মঙ্গলবার পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে সংবিধানের ২৮তম সংশোধনী বিল ২০১৭ পাস হয়। এর মাধ্যমে দেশটিতে আরও দুই বছরের জন্য সামরিক আদালত পুনর্বহালের পথে উন্মুক্ত হলো। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএন-নওয়াজ) অন্যতম মিত্র পাখতুন খোয়া মিল্লি আওয়ামী পার্টি (পিকেএমএপি) এবং একজন স্বতন্ত্র এমএনএ ছাড়া জাতীয় পরিষদের সকল সদস্য এই বিলের পক্ষে ভোট দেন। পিএমএলের (নওয়াজ) আরেক মিত্র জমিয়তে উলামা-ই-ইসলামীর (ফজলুর রহমান) সদস্যগণ ভোটদানে বিরত থাকেন। কিন্তু ৩৪২ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে বিল পাস আটকানোর জন্য তা মোটেই যথেষ্ট ছিল না। সংবিধান সংশোধনী বিলটি পাসের জন্য দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন দরকার ছিল। গণনার পর দেখা গেল বিলটির পক্ষে ২৫৫ জন এমএনএ ভোট দিয়েছেন। পিকেএমএপি প্রধান মেহমুদ খান আচাকচাইয়ের তিনজন সদস্য এবং স্বতন্ত্র সদস্য জামশিদ দস্তি বিলটের বিপক্ষে ভোট দেন। খবর বিবিসি/এক্সপ্রেস ট্রিবিউন/ডনের। এদিকে সংবিধান সংশোধনী বিলটিতে এবার কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা তাদের পছন্দমতো আইনজীবী গ্রহণের সুযোগ পাবেন। গত দুই বছরের মধ্যে সামরিক আদালতে ১৬০ জনেরও বেশি লোককে মৃত্যুদ- প্রদান করে এবং বহু লোকের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। সামরিক আদালতের পক্ষে অন্যতম প্রধান যুক্তি ছিল সরকার সন্ত্রাস দমন মামলার বিচারকদের পর্যন্ত নিরাপত্তা দিতে পারছে না। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, সামরিক আদালতের স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং এখানে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় না। এখন পাকিস্তানে উচ্চ পরিষদ সিনেটে পাস হলে এবং পরে প্রেসিডেন্ট তাতে স্বাক্ষর করলে সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাবে সামরিক আদালত। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে আর্মি পাবলিক স্কুলে তালেবানের হামলায় ১৩৯ শিশু শিক্ষার্থীসহ ১৫০ জন নিহত হওয়ার পর সামরিক আদালত গঠন করে দেশটি। এ আদালতের মেয়াদ গত ৭ জানুয়ারি শেষ হয়। বেসামরিক সন্ত্রাসীদের সামরিক আদালতে বিচার করা হয়। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে পাকিস্তান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তার পরও সামরিক আদালত পুনর্বহাল রাখার পক্ষে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সরকার জানুয়ারি মাসে ঘোষণা দেয়, তারা সামরিক আদালত পুনর্বহাল রাখতে চায়। তবে পার্লামেন্টে তখনও দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনের অভাব ছিল। কয়েক মাস অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর বিলের পক্ষে সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয় নওয়াজ শরিফ সরকার।
×